জুমবাংলা ডেস্ক : ‘মাত্র ৫০০ টাকা অটোরিকশার ভাড়া বাকি থাকায় রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কনস্টেবল হাসান আলীর হাতে স্বামীকে জীবন দিতে হবে তা কল্পনাও করতে পারিনি। আগামী দিনগুলো দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে কিভাবে দিন কাটবে তা আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারে না। আমার স্বামীর কোনো দোষ ছিল না। তিনি শুধু দুই দিনের অটোরিকশার জমা ৫০০ টাকা বাকি রেখে ছিলেন।
রংপুরে পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলীর হাতে নিহত প্রতিবন্ধী রিকশাচালক নাজমুল ইসলামের স্ত্রী শ্যামলী বেগম আক্ষেপ করে এ কথাগুলো বলেন।
শ্যামলী বেগম বলেন, মঙ্গলবার রাতে হাসান আলী বাড়িতে এসে অটো রিকশার বকেয়া ভাড়া চায়। এ সময় স্বামী নাজমুল বলেন, ‘স্যার আপনার বকেয়া ৫০০ টাকা আস্তে আস্তে পরিশোধ করবো।’ এতে ক্ষিপ্ত হয় হাসান আলী। তিনি বলেন, এখুনি টাকা দিতে হবে।
দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্বামীকে কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। শারীরিক প্রতিবন্ধি হওয়ার কারণে কোনো প্রতিবাদেই করতে পারে নি। স্বামীকে কিল, ঘুষি, লাথি মারার একপর্যায়ে লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করতে থাকে।
শ্যামলী বেগম আরো বলেন, মারপিটের এক পর্যায়ে স্বামী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে কনস্টেবল হাসান আলী তাকে নিয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট থানায় যায়। থানা পুলিশ নাজমুলকে গ্রহণ না করে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য হাসান আলীকে নির্দেশ দেন। হাসান আলী তা না করে নাজমুলকে তার বাসায় নিয়ে যায়।
শ্যামলী বেগম বলেন, বুধবার সকালে স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য কনস্টেবল হাসান আলীর বাড়িতে গেলে দেখা করতে দেয়নি। এ সময় হাসান আলীর স্ত্রী সাথী বেগম আমার চুলের মুঠি ধরে বলেন, ‘এখান থেকে বের হতে পারবিনা। ঘরের মধ্যে গিয়ে দেখ তোর স্বামী টাকা দিতে না পারায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এরপর ঘরের মধ্যে গিয়ে দেখি আমার স্বামী দড়িতে ঝুলে আছে।’
স্বামীর লাশ দেখে চিৎকার করতে থাকলে আশপাশের মানুষ ছুটে আসলে তারা বিষয়টি জানতে পারে।
শ্যামলী বেগম বলেন, ‘আমাকে যারা বিধবা করেছে, সন্তানদের যারা এতিম করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
শ্যামলী বেগম জানান, কনস্টেবল হাসান আলী বিভিন্নভাবে এলাকার মানুষকে হয়রানী করে আসছে। তার ভয়ে এলাকা মানুষ কেউ কিছু বলতে সাহস করে না।
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel