জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকা জেলার সাভার ও ধামরাই উপজেলার শেষ প্রান্তে অবস্থিত ফোর্ডনগর গ্রামে গড়ে উঠেছে মাজেদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সাভার ও ধামরাই থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দুরের এই গ্রামের যোগাযোগ ব্যাবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। তাই প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার জন্য ৫টাকায় মাজেদা ফাউন্ডেশনের স্বাস্থ্য কেন্দ্রই ছিল তাদের ভরসা। তবে গত এক মাস যাবৎ এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। মাত্র কয়েক মাসের বকেয়া ভাড়ার জন্য চিকিৎসা কেন্দ্রে তালা ঝুঁলিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন বাড়ির মালিক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফোর্ডনগর গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সরকারী হাসপাতাল এলাকা থেকে দুই কিলোমিটার দূরে হওয়ায় মাজেদা ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে সেখানে করা হয় চিকিৎসা কেন্দ্র। দরিদ্র গোষ্ঠির মধ্যে চিকিৎসা নিশ্চতের জন্য মাত্র পাঁচ টাকার বিনিময়ে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হয় । পাশাপাশি সাধারন জ্বর, ঠান্ডা, কাশির ঔষধও বিতরণ করা হয় বিনামূল্যে ।
এছাড়াও গ্রামের দরিদ্র এই লোকজনের জন্য ব্যায়বহুল ঔষধ ৩০শতাংশ কম দামে সরবরাহ করা হয় সেখান থেকে । প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত কয়েকজন স্বাস্থ্য কর্মী নিয়মিত ওই এলাকার মানুষদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তবে কয়েকমাসের ভাড়া বকেয়া থাকার কারণে প্রায় এক মাস আগে বাড়ির মালিক সাইদুর ইসলাম স্বাস্থ্য কেন্দ্র তালা ঝুঁলিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ।
স্থানীয় পুষ্প রানী সরকার বলেন, তাদের গ্রামটি উপজেলার শেষ প্রান্তে। এছাড়াও এখান থেকে সরকারী হাসপাতালের দুরুত্ব অনেক। প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য তাদের অনেক কষ্ট করতে হতো। বাড়ির পাশে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটা হওয়ার পর তারা খুব সহজেই প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা এখান থেকে নিতে পারেন। আবার সাধারন রোগের ঔষধ বিনামূল্যে পাওয়ার কারণে তাদের অনেক উপকার হতো । স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে তাদের আবার বিপাকে পড়তে হবে।
রিপন নামের আরেক ব্যক্তি একই কথা বলে জানান, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে হওয়ার কারণে তাদের গ্রামের মানুষদের আর কষ্ট করে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য উপজেলায় যাওয়ার দরকার হয় না। এখান থেকেই তারা প্রথমিক চিকিৎসা সেবা পেতেন ।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা তারেক মিয়াজি বলেন, দরিদ্র জনগোষ্ঠির মধ্যে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য তিনি নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগেই এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি এখানে চালু করেছেন।
এই এলাকার মানুষেরা বিভিন্ন কারণে স্বাস্থ্য সেবা থেকে অনেকটা বঞ্চিত। সে কারণে তিনি এখানে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে এক বছরেরও বেশী সময় যাবৎ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালিয়ে আসছেন । তবে লকডাউনের কারণে আর্থিক সংকটে পড়েন তিনি। এর ফলে কয়েক মাসের ভাড়া বকেয়া থাকায় বাড়ির মালিক প্রায় এক মাস আগে তালা ঝুঁলিয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয়। বকেয়া পরিশোধের জন্য তিনি কিছু দিন সময় চাইলেও বাড়ির মালিক তার কথা না রেখে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেন।
এ ব্যাপারে বাড়ির মালিক সাইদুর ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ভাড়া বকেয়া থাকায় তিনি তালা ঝুঁলিয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও ভাড়া পরিশোধ করলে তালা খুলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কার্যক্রম চালানোর কথাও জানান তিনি। ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, বিষয়টি ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানটিও ব্যক্তিগত। তবে স্থানীয়দের চিকিৎসা সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানটি এ বিষয়ে তাদেরকে অবগত করেনি। ওই প্রতিষ্ঠানের কেউ তাদেরকে এ বিষয়ে জানালে মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে বাড়ির মালিকের সাথে কথা বলে একটা সমাধানের কথাও জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।