কার্ল সাগান ও ফ্রাঙ্ক ড্রেকের মতো বিজ্ঞানীরা এই আশাবাদী হয়ে বলেছেন, অল্প কিছু সভ্যতা উচ্চস্তরের প্রযুক্তিজ্ঞান নিয়ে বাঁচতে শিখেছে। যেখানে মস্তিষ্কের বিবর্তনে উদ্দেশ্যহীনভাবে আরোপিত অসংগতিগুলো সচেতনভাবে দূর করে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছে। অথবা বড় রকমের বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সামর্থ্য হয়েছে। যেমন আমরা চেষ্টা করছি। যেসব সমাজ সফলভাবে দীর্ঘকাল টিকে থাকবে, সেসব সভ্যতার জীবনকাল পরিমাপ করা সম্ভব হবে। সম্ভবত ভূতাত্ত্বিক কাল অথবা নক্ষত্রের জীবন–মৃত্যুর সময়ের ব্যাপ্তিতে।
যদি সভ্যতাগুলোর ১০০টির মধ্যে ১টিও তাদের প্রাযুক্তিক বিকাশের বয়ঃসন্ধিকাল অতিক্রম করতে পারে, ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে সঠিক পথটি বেছে নিতে পারে এবং পরিপক্বতা অর্জন করতে পারে, তাহলে অন্তত ১ কোটি গ্রহে একই সময়ে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত সভ্যতার টিকে থাকা সম্ভব এই গ্যালাক্সিতে।
তবে ফ্রাঙ্ক ড্রেকের সমীকরণে জ্যোতির্বিদ্যা, জৈব রসায়ন ও বিবর্তন জীববিদ্যাসম্পর্কিত বিষয়গুলোর পরিমাপে যে সংশয় রয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি অনির্ভরযোগ্যতা ও অনিশ্চয়তা রয়েছে অর্থনীতি, রাজনীতি এবং মানবপ্রকৃতি নিয়ে। রুশ জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী নিকোলাই কার্দাশেভ ৫০ বছর আগে কার্দাশেভ মহাজাগতিক সভ্যতার স্কেল প্রস্তাব করেছিলেন। সেখানে তিন ধরনের সভ্যতার অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, যথাক্রমে—টাইপ ১, টাইপ ২, টাইপ ৩।
নক্ষত্র বা সূর্যের বিকীর্ণ সব শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কাজে লাগাতে পারবে। সেই প্রাপ্তিযোগ্য শক্তি 1.74×1017 ওয়াট। এ ছাড়া বায়ুমণ্ডল, ভূত্বক, আবরণ, কেন্দ্রের মতো গ্রহের অন্যান্য শক্তির ওপরও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা। টাইপ ওয়ান সভ্যতা আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ুকে প্রভাবিত, ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাত প্রতিরোধে সক্ষম হবে। সবচেয়ে বড় কথা জ্বালানির সংকট থেকে মুক্তি পাবে।
পদার্থবিজ্ঞানী মিচিও কাকু আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, মানবজাতি ১০০ থেকে ২০০ বছরের মধ্যে টাইপ ওয়ান সভ্যতায় পৌঁছাবে। কিন্তু একাবিংশ শতাব্দীতে টুইন টাওয়ার ধ্বংস, বিশ্বব্যাপী শরণার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক নতুন মেরুকরণ ও নিউক্লিয়ার অস্ত্র নিয়ে টানাপোড়েন এক অস্থিতিশীল বিশ্বে পৃথিবীকে নিয়ে যাচ্ছে; অর্থনৈতিক বৈষম্য আর জলবায়ু বিপর্যয় ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির ভবিষ্যদ্বাণীকেই যেন নিশ্চিত করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।