জুমবাংলা ডেস্ক: মানিকগঞ্জে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পদ্মা-যমুনার পানি প্রবাহিত হয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে দৌলতপুর, শিবালয়, হরিরামপুর উপজেলার মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। খবর জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের।
হরিরামপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইতিমধ্যে প্রবেশ করেছে পদ্মার পানি। ভাঙন এবং বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দৌলতপুর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার বাসিন্দা।। এদিকে জেলা সদর, ঘিওর ও সাটুরিয়া উপজেলায় ফসলি জমিতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এতে আউশ, আমন, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তা ঘাটের পাশাপাশি এরইমধ্যে বন্যার পানিতে ডুবে গেছে অনেকের বাড়িঘর। খাবার পানি ও শুকনা খাবারের সঙ্কট রয়েছে এসব এলাকায়।
দৌলতপুর উপজেলার বাঁচামারা, বাঘুটিয়া, চরকাটারি, জিয়নপুর এবং খলসি ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারও পরিবার। শিবালয় উপজেলার আরিচা লঞ্চঘাট এলাকাসহ আরিচা বাজারের কিছু অংশে প্রবেশ করেছে যমুনার পানি। উপজেলার দাসকান্দি ও এর আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে পানিবন্দি রয়েছে কয়েক’শ পরিবার।
দৌলতপুর উপজেলার জিয়নপুর এলাকার স্থানীয়রা জানান, এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে আরও কয়েক দিন আগেই। এখন পানি বাড়তে থাকায় ভাঙন কমেছে। এই এলাকার অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র হওয়ায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব রয়েছে।
এদিকে পানি বাড়ায় হরিরামপুর উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার লেছড়াগঞ্জ, আজিমনগর, ধূলশুড়া, হারুকান্দি, বয়ড়া, সূতালড়ি, কাঞ্চনপুর ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের সহস্রাধিক পরিবারের বসতভিটায় পানি প্রবেশ করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) ফারুক আহমেদ বলেন, উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে ১০ জুলাই থেকে দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলায় যমুনা এবং হরিরামপুরে পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। সর্বশেষ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে শিবালয়ের আরিচা পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার এবং হরিরামপুরে পদ্মার পানি ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হচ্ছিল।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় এ পর্যন্ত ৭৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে জেলার ৭ হাজার ৩০৬ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ৬৮৮টি পরিবার মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় ১৩০ মেট্রিক টন চাল এবং এক হাজার ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০ মেট্রিক টন চাল, দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশুখাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা এবং গো-খাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা মজুত রয়েছে।
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস বলেন, জেলায় এ পর্যন্ত ৬৮৮টি পরিবারের ৩ হাজার ৯৬ জন ব্যক্তি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থের শিকার হয়েছেন। জেলায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আশ্রয়ণ কেন্দ্র এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। বানভাসি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, চাল ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রয়েছে।পর্যায়ক্রমে এগুলো বিতরণ করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।