মানুষের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দূরত্ব পাড়ি দেওয়া এই দুই নভোযান হচ্ছে ভয়েজার ১ ও ২। ১৯৭৭ সালে যাত্রা করে ভয়েজার এক আন্তঃনাক্ষত্রিক স্থানে পৌঁছেছে ২০১২ সালের ২৫ আগস্ট। একই সময় যাত্রা করে ভয়েজার ২ সৌরজগতের সীমা পেরিয়ে গেছে ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর। সে জন্য ভয়েজার ১ পেয়েছে বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের সহায়তা। আর ভয়েজার ২ পেয়েছে বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুনের সাহায্য।
মহাজাগতিক বস্তুদের এই ঘটনার নেপথ্যে মূল কারিগরের নাম মহাকর্ষ। ব্রিটিশ পদার্থবিদ স্যার আইজ্যাক নিউটন বলেছেন এর মূল কথাটি—মহাবিশ্বের যেকোনো দুটো বস্তু পরস্পরকে আকর্ষণ করে। তবে এই আকর্ষণের নেপথ্যের কারিকুরিটা ফাঁস করে দিয়েছেন আলবার্ট আইনস্টাইন। আপেক্ষিকতার সাধারণ বা সার্বিক তত্ত্বের মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন, ভারী বস্তু এর আশপাশের স্থান-কাল বাঁকিয়ে দেয়। কালের কথা এ আলোচনায় আপাতত প্রয়োজন নেই মহাকর্ষীয় সহায়তা বোঝার জন্য। কাজেই স্থান ও এতে বস্তুর গতি নিয়ে আলাপেই সীমাবদ্ধ থাকব আমরা।
পৃথিবীর চারপাশে চাঁদ ঘুরছে। আসলে ঘুরছে না, পড়ছে। মহাকাশে তো কোনো ওপর নিচ নেই। কাজেই চাঁদ সরলরেখা বরাবর ছুটতে চায়, পড়তে থাকে, আর প্রতিমুহূর্তে পৃথিবী তাকে নিজের দিকে টানে। কিংবা বলা চলে—নিজের চারপাশের স্থান বাঁকিয়ে ফেলে। এই বাঁকা পথে পড়তে পড়তে চাঁদ ঘুরে চলে পৃথিবীর চারপাশে। এভাবে চাঁদ একটা উপবৃত্তাকার গতি পায়। একই ঘটনা ঘটে কৃত্রিম উপগ্রহগুলোর বেলায়। কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট পৃথিবীর চারপাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথে থেকে ঘুরে চলে—একইভাবে।
এই ঘটনাটাই ঘটে, আরেকটু বিস্তৃত পরিসরে, গ্র্যাভিটি অ্যাসিস্টের ক্ষেত্রে। চাঁদের গতি আর ব্যাটারের ব্যাট চালানোর কারিকুরির কথাটা মাথায় রাখুন। তারপর ভাবুন, একটা নভোযান। ছুটছে। প্রথমে তো একে উৎক্ষেপণ করতে হলো। তারপর সেটা ছিন্ন করল পৃথিবীর বাঁধন। যেকোনো বড় মহাজাগতিক বস্তুর বাঁধন বা মহাকর্ষীয় আকর্ষণ ছিন্ন করার একটা নিয়ম আছে। মুক্তিবেগের চেয়ে বেশি বেগে যেকোনো বস্তুকে ছুড়ে দিতে হয়। মুক্তিবেগ মানে, যে বেগে ছুড়ে দিলে বড় বস্তুটির মহাকর্ষ তাকে আর আটকে রাখতে পারে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।