জুমবাংলা ডেস্ক : রমনা পঞ্চবটমূলে এবারের নববর্ষের প্রথম প্রভাতে মানুষের জয়গানের মধ্য দিয়ে বাংলা নতুন বছর ১৪৩১-কে স্বাগত জানাবে সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র ছায়ানট। ভোগবাদ নয়, স্বার্থপরতা নয়, মনুষ্যত্বকে পাওয়ার অভিলাষই থাকবে ছায়ানটের আহ্বানে।
ভোরের আলো ফুটতেই আহীর ভৈরব রাগ আর বাঁশির সুরে এবারের নতুন বছরের আবাহন শুরু হবে। পুরো অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে।
শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর শংকর ছায়ানট কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়েছে।
ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা বলেন, বিশ্বব্যাপী বস্তুর প্রতি মানুষের আকর্ষণ যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে কমেছে মানুষের প্রতি মমত্ববোধ। যার ফলে ক্ষয়ে চলেছে মানবতা, ক্রমান্বয়ে অবক্ষয় ঘটছে মূল্যবোধের। মানুষের সঙ্গে মানুষের দূরত্বের ক্রমবৃদ্ধিতে, অন্য মানুষের প্রতি আচরণের অস্বাভাবিকতায় আজ আমরা মুখোমুখি নতুন সংকটের। তবে এ সংকটে আমরা আশাহত হই না, দিশা হারাই না, বিশ্বাস করি মানুষের কাছে গিয়ে, মানুষের হাতে হাত রেখে সবার সঙ্গে মিলবার, চলবার, গাইবার সাধনাই মানুষকে আবার ফিরিয়ে আনবে মানুষের কাছে। স্বাভাবিকতা ও পরস্পরের প্রতি সম্প্রীতির সাধনায় আমাদের যুক্ত হতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন বর্ষবরণের প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী, সহসভাপতি ড. আতিউর রহমান, সহসভাপতি খায়রুল আনাম শাকিল, সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা এবং যুগ্ম সম্পাদক জয়ন্ত রায়।
ডা. সারওয়ার আলী বলেন, পহেলা বৈশাখ সর্বজনের সৌহাদ্য, ভ্রাতৃত্ববোধে মিলন মেলায় পরিণত হয়। অন্যদিকে রক্ষণশীলতা ও অত্যাধুনিকতার উদ্ভট মিশ্রণে জীবনধারা, ব্যবহারবিধি বিঘ্নিত হয়।
ড. আতিউর রহমান বলেন, সব সম্প্রদায়ের মানুষকে আমরা এক করে ভালোবাসার কথা বিনিময় করি। নববর্ষকে আমরা বরণ করে নেই সংগীতের মধ্য দিয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে ছায়ানটের পক্ষ থেকে জয়ন্ত রায় বলেন- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, অতুলপ্রসাদ সেন, আবু বকর সিদ্দিকীর গান পরিবেশন করা হবে অনুষ্ঠানে। এবার ৩১টি পরিবেশনা থাকবে। সমবেত সংগীত ১১টি, একক গান থাকবে ১৫টি, পাঠ ও আবৃত্তি থাকবে। একক গান গাইবেন শাহীদ সামাদ, খায়রুল আনাম শাকিল, চন্দনা মজুমদার, লাইসা আহমদ লিসা, পাঠ ও আবৃত্তিতে থাকবেন রামেন্দু মজুমদার ও জয়ন্ত চট্টোপধ্যায়। বর্ষবরণ সার্থক করতে শতাধিক খুদে ও বড় শিল্পী আন্তরিক নিষ্ঠায় প্রায় আড়াই মাস আগে থেকেই গান তোলা আর গলা মেলানোর কাজে নেমেছেন। রমনা উদ্যানে দুই ঘণ্টার এই আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। দেখা যাবে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ১৫০ জনের মতো শিল্পী-কর্মীকে ধারণ করতে পারবে, এমন মঞ্চ নির্মাণের কাজ চলছে। ১৩ এপ্রিল সকাল ১০টায় মূল মঞ্চে মহড়া অনুষ্ঠিত হবে।
আয়োজকরা বলেছেন, নতুন বাংলা বছরকে বরণ করার এ আয়োজন সার্থক করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর বরাবরের মতোই অক্লান্ত সেবা দিয়ে চলেছে। ছায়ানট কর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বেচ্ছাসেবীরা, লাউড ওয়ার্কস এবং থার্টিনথ হুসার্স ওপেন রোভার গ্রুপের সদস্যরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।