আমাদের দেশে এখন গড় আয়ু প্রায় ৭২.৮ বছর। তবে শতায়ু মানুষও আছেন। এখন পর্যন্ত বিশ্ব রেকর্ড ১২২ বছর। তিনি একজন ফরাসি নারী। নাম জ্যঁক্যালমেঁ (Jeanne Calment)। ১৯৯৭ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে জাপানে মানুষের গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি। এক হিসাবে জানা গেছে, ২০৪০ সালে স্পেন জাপানকে ছাড়িয়ে যাবে।
সেখানে গড় আয়ু হবে ৮৬ বছর। মানুষের আয়ু নিয়ে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস–এর সায়েন্স টাইমস–এ (১৯ নভেম্বর ২০১৮) প্রকাশিত একটি লেখায় উল্লেখ করা হয়েছে, সর্বোচ্চ আয়ু হতে পারে ১১৫। একদল বিজ্ঞানী গবেষণা করে ২০১৬ সালে এ তথ্য দিয়েছেন। শিকাগোর ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক গবেষণা করে জানিয়েছেন, মানুষের সর্বোচ্চ স্বাভাবিক আয়ু ৮৫ হতে পারে।
আবার জুন মাসে ইতালীয় বিজ্ঞানীরা প্রবীণদের বয়স পর্যালোচনা করে বলেছেন, মানুষের আয়ুর কোনো সীমা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। বেশ কয়েক বছর আগে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে জানিয়েছেন, প্রাণীদের স্বাভাবিক আয়ু তাদের শারীরিক বৃদ্ধির সময়ের (গ্রোথ পিরিয়ড) ছয় গুণ হয়ে থাকে। সেই হিসাবে মানুষের স্বাভাবিক আয়ু হতে পারে ১৫০ বছর। কিন্তু বার্ধক্য ও অসুখ–বিসুখে এর আগেই মানুষের মৃত্যু হয়।
এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন, বার্ধক্য বিলম্বিত করলেই আয়ু বাড়বে। বার্ধক্যের কারণে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের প্রদাহ বাড়ে, স্টেমসেলের এমন কিছু পরিবর্তন আসে যার ফলে নতুন পেশিতন্তু তৈরি হতে পারে না। আবার সাধারণভাবে দেহকোষ অকার্যকর হয়ে পড়ে। এসব কারণে শরীরে রোগশোক বাসা বাঁধে। সুস্থ–সবল তরুণদের সক্রিয় দেহকোষ অনেক বেশি। কিন্তু ৬০ বছরের পর থেকে ক্ষয়িষ্ণু দেহকোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এরপর ধীরে ধীরে বার্ধক্য। প্রশ্ন হচ্ছে, এই বুড়িয়ে যাওয়া দেহকোষগুলো সারিয়ে নতুন কোষ সঞ্চয় সম্ভব কি না। এ নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা চলছে। কিছু ওষুধও বেরিয়েছে।
এখন অনেকে প্রশ্ন করেন, ওষুধে যদি বার্ধক্যের চিকিৎসা করা যায়, তাহলে কি বার্ধক্য একধরনের অসুখ? বিজ্ঞানীরা বলেন, না, এটা অসুখ না। আসলে মানুষ চিরজীবী প্রাণী নয়। মানুষের মস্তিষ্ক চিরকাল সক্রিয় থাকবে না। কৃত্রিমভাবে বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখার বিপদও আমরা দেখছি। আলঝেইমার ডিজিজ, ডিমেনশিয়া, হাঁটু বা কোমরে ব্যথা, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক—এসব তো চিরকাল ঠেকানো যায় না। তাই বার্ধক্য অবস্থায় কতটা সুস্থ থাকা যায়, সেটাই লক্ষ্য। নিয়মিত ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাবার, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ প্রভৃতি আমাদের সুস্থ বার্ধক্য নিশ্চিত করতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা সে চেষ্টাই করছেন। এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু সাফল্যও আসছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।