জুমবাংলা ডেস্ক : গণঅভ্যুত্থানে উৎখাত হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের ছেলে সাদাত মান্নানের প্রায় ২১৩ কোটি টাকার সম্পদ শনাক্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি)। আরো তদন্তের স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংককে মান্নান পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দের ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেছে এনবিআর।
মঙ্গলাবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এনবিআরের সিআইসি সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এনবিআর সূত্রে বলছে, বনানীর ৭টি অ্যাপার্টমেন্টসহ কৃষি ও অকৃষি সম্পত্তি মিলিয়ে বাংলাদেশে সাদাতের সম্পদের মূল্য আট কোটি টাকার ওপরে।
এ ছাড়া রয়েছে ১৩২ কোটি টাকার বৈদেশিক সম্পদ। দায় বাদ দেওয়ার পর তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১৪০ কোটি টাকা।
সিআইসি এখন শুধু সাদাত মান্নানই নন, তাঁর বাবা এম এ মান্নান, মা জোলেখা মান্নান এবং বোন সারা মান্নানের বিষয়েও কর ফাঁকি এবং সম্পদের তথ্যের তদন্ত শুরু করেছে। এই তদন্তের অংশ হিসেবে মান্নান পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সোমবার এম এ মান্নান ও তাঁর পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। সাদাত মান্নানের ১৩২ কোটি টাকার বৈদেশিক সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি সম্পদের উৎস প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। যদি তিনি এটি প্রদান করতে না পারেন, তাহলে পুরো সম্পদ আয় হিসেবে গণ্য হবে এবং কর প্রযোজ্য হবে।
মন্ত্রী হওয়ার পর এম এ মান্নানের পারিবারিক প্রেক্ষাপট স্পষ্ট করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, তাঁর স্ত্রী জোলেখা মান্নান ঢাকার একটি মহিলা কলেজের শিক্ষিকা। মেয়ে সারা একজন ডাক্তার, স্বামীর সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তাঁর ছেলে সাদাত যুক্তরাজ্যের বার্কলেস ক্যাপিটালের (ব্যাংক) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কাজ করেন এবং লন্ডনে থাকেন।
সাদাত মান্নানের কর ফাইল সিআইসিতে স্থানান্তর করার আগে কর অঞ্চল-১৫ প্রথম তদন্ত করে।
কর অঞ্চল-১৫ এর কমিশনার লুত্ফুল আজিম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা সাদাত মান্নানের ১০০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের তথ্য পেয়েছি।’
যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাদাত মান্নানকে পাওয়া যায়নি। পরে তাঁর বাবা এম এ মান্নান নিজের বা তাঁর সন্তানদের কোনো অবৈধ সম্পদের কথা অস্বীকার করেন।
এম এ মান্নান বলেন, ‘আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। আমার জানা মতে, আমার সন্তানদেরও নেই।’ তবে ঢাকার একটি ভবনে তাঁর ছেলের সাতটি অ্যাপার্টমেন্টের বিষয়ে নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘বিল্ডিংটি গত শতাব্দীর শেষের দিকে সাদাত মান্নানের মামা তৈরি করেছিলেন। তাঁরা আর দেশে থাকে না। আমার ছেলে তাঁর কাছ থেকে সাতটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছে।’
ছেলের অর্থপাচারের মাধ্যমে বিদেশে সম্পদ অর্জনের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে যদি এনবিআরের কাছে কোনো প্রমাণ থাকে, তাহলে তারা আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। এখানে কোনো সমস্যা নেই।’
তবে এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সাংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা সন্দেহ করছি এই সম্পদ বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচারের ফল হতে পারে। অন্যদিকে বনানীর মতো একটি এলাকায় এত কম দামে সাতটি অ্যাপার্টমেন্টের মালিক হওয়া অবাস্তব।’
সূত্র : অর্থসূচক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।