বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এক ব্যতিক্রমী গণজমায়েত — ‘মার্চ ফর গাজা’। এই কর্মসূচি শুধুমাত্র একটি প্রতিবাদ সভা নয়, বরং এটি একটি মানবিক আহ্বান, যা বিশ্বজুড়ে নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশের দৃঢ় বার্তা বহন করছে।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় বইছে। ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের রাজপথে জনতার ঢল নামছে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে। এই প্রতিবাদের ঢেউ পৌঁছেছে বাংলাদেশেও, এবং তারই ধারাবাহিকতায় পালিত হতে যাচ্ছে এই মার্চ ফর গাজা কর্মসূচি।
Table of Contents
মার্চ ফর গাজা: সংহতির নতুন ভাষা
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার বিকাল ৩টায় শুরু হতে যাচ্ছে মার্চ ফর গাজা কর্মসূচি। এই কর্মসূচির আয়োজন করছে ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’। মূল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল মালেক। আয়োজক সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই কর্মসূচিতে দেশের সব রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।
এই গণজমায়েত শুধু সমবেত হওয়ার একটি উদ্যোগ নয়; বরং এটি বাংলাদেশের নাগরিকদের একটি ঐক্যবদ্ধ বার্তা যে, আমরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে এবং নির্যাতিত জনগণের পাশে আছি। সংহতির এ ভাষা এখন আর কেবল মৌখিক বা সামাজিক মাধ্যমে সীমাবদ্ধ থাকছে না, বরং তা রূপ নিচ্ছে জনতার রাজপথে সরব উপস্থিতিতে।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল এসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করবে। এই প্রবেশের জন্য মোট পাঁচটি পথ নির্ধারণ করা হয়েছে:
- বাংলা মোটর থেকে শাহবাগ হয়ে রমনা গেইট
- কাকরাইল থেকে মৎস্য ভবন হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট গেইট
- গুলিস্তান থেকে দোয়েল চত্বর হয়ে টিএসসি গেইট
- বকশীবাজার থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে টিএসসি গেইট
- নীলক্ষেত থেকে ভিসি চত্বর হয়ে টিএসসি গেইট
এই মিছিলে অংশগ্রহণের জন্য খেলাফত মজলিশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠন আহ্বান জানিয়েছে।
ফিলিস্তিন সংকট ও বাংলাদেশের জনমত
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের ঢেউ দেখা যাচ্ছে। শুধুমাত্র মুসলিম দেশগুলোই নয়, বরং ইউরোপ-আমেরিকার অসংখ্য শান্তিকামী মানুষও এই হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে। বিশ্ববাজারের প্রভাব এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো এখন আর কেবল কূটনৈতিক কক্ষে সীমাবদ্ধ নেই— তা রাজপথে প্রতিফলিত হচ্ছে সাধারণ জনগণের সংহতিতে।
বাংলাদেশের জনগণের মধ্যেও গাজায় চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের উদ্যোগে ইতোমধ্যে একাধিক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই স্বর্ণের বাজার পরিবর্তন এর মতো সংবেদনশীল ইস্যুতে যেমন জনমত জোরালো হয়, তেমনি ফিলিস্তিন সংকটেও দেখা যাচ্ছে একাত্মতা।
এই প্রতিবাদ এবং সংহতি শুধু রাজনীতির অংশ নয়, এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্বেরও অংশ। গণতান্ত্রিক সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মানুষের কণ্ঠকে সম্মান জানানো এবং নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়ানো।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ
বিশ্বব্যাপী সোচ্চার আন্দোলন
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাধারণ মানুষ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বহু দেশে রাস্তায় মানববন্ধন, সমাবেশ এবং বিক্ষোভ চলছে। আন্তর্জাতিক সংগঠন Amnesty International ও Human Rights Watch এই আগ্রাসনকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এমনকি United Nations গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
মিডিয়া ও সামাজিক প্ল্যাটফর্মে সংহতি
ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে #FreePalestine, #StopGazaGenocide হ্যাশট্যাগগুলো ট্রেন্ডিং হয়ে উঠেছে। বাংলদেশি তরুণ সমাজও এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। তথ্য এবং মানবিক গল্পগুলো ছড়িয়ে পড়ছে, যা আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে সাহায্য করছে।
এই কর্মসূচির তাৎপর্য
‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি বাংলাদেশের জন্য শুধুমাত্র একটি প্রতিবাদ নয়, বরং এটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের মানবিক অবস্থান তুলে ধরার একটি প্রয়াস। এটি ভবিষ্যতের প্রজন্মকে একটি বার্তা দেয়: নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়ানো শুধু অধিকার নয়, এটা দায়িত্ব।
FAQ
মার্চ ফর গাজা কখন অনুষ্ঠিত হবে?
এই কর্মসূচি আগামী শনিবার, বিকাল ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে।
এই কর্মসূচির আয়োজক কারা?
‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ এই কর্মসূচির মূল আয়োজক।
সমাবেশে কীভাবে যোগ দেওয়া যাবে?
ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাঁচটি নির্ধারিত পথ দিয়ে মিছিল করে উদ্যানে প্রবেশ করা যাবে।
এই কর্মসূচিতে কারা অংশ নিচ্ছেন?
বিভিন্ন ইসলামিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক সংগঠন এই কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করছে।
এই কর্মসূচির লক্ষ্য কী?
ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ এবং গাজায় চলমান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সচেতনতা সৃষ্টি।
অন্যান্য দেশেও কি এমন কর্মসূচি হচ্ছে?
হ্যাঁ, ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বব্যাপী শান্তিকামী মানুষ গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।