আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের একটি হোটেল থেকে অস্ত্রসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে সন্দেহভাজন ইসরায়েলি গুপ্তচর হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ মহাপরিদর্শক রাজারুদ্দিন হোসেন।
শনিবার (৩০ মার্চ) মালেশিয়ান পুলিশের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়ান পুলিশের মহাপরিদর্শক রাজারুদিন হুসাইন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত ১২ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান ইসরায়েলি পাসপোর্টধারী ওই ব্যক্তি। তার কাছ থেকে ৬টি পিস্তল ও ২০০ বুলেট উদ্ধার করা হয়েছে। ভুয়া ফরাসি পাসপোর্ট ব্যবহার করে তিনি মালয়েশিয়া ভ্রমণ করেছেন।
তিনি বলেন, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই ব্যক্তি তার ইসরায়েলি পাসপোর্ট হস্তান্তর করেছেন। মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর তিনি অস্ত্রগুলোর অর্ডার দেন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সিতে সেগুলোর মূল্য পরিশোধ করেন।
সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য হতে পারে, এমন সম্ভাবনা নাকচ করেনি মালয়েশিয়ার পুলিশ। যদিও সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষকে বলেছে, পারিবারিক বিরোধের কারণে অন্য এক ইসরায়েলি নাগরিকের খোঁজে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেছেন তিনি।
রাজারুদিন হুসাইন আরও বলেন, তারা এই বক্তব্য পুরোপুরি বিশ্বাস করছেন না। কারণ এর পেছনে তার অন্য কোনো অ্যাজেন্ডা রয়েছে বলে সন্দেহ করছেন তারা। কারণ ওই ব্যক্তি মালয়েশিয়ায় কয়েকটি হোটেলে অবস্থান করেছেন।
মালয়েশিয়ান পুলিশের মহাপরিদর্শক রয়টার্সকে বলেন, শুক্রবার এক বিবাহিত দম্পতিসহ তিন মালয়েশিয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইসরায়েলি ওই ব্যক্তিকে অস্ত্র সরবরাহ ও তার চালক হিসেবে কাজ করেছেন সন্দেহে তাদের সাত দিনের রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে। ওই দম্পতির গাড়ি থেকেও একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
মালয়েশিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। এজন্য এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে ই-মেইল করা হলেও সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত ইসরায়েলি দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
কাজের সুবিধার্থে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে ৮টি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিভাগগুলো হচ্ছে তথ্য সংগ্রহ বিভাগ, রাজনৈতিক যোগাযোগ বিভাগ, বিশেষ অপারেশন বিভাগ, ল্যাপ বিভাগ, গবেষণা বিভাগ, প্রযুক্তি বিভাগ।
তথ্য সংগ্রহ বিভাগ হচ্ছে মোসাদের সবচেয়ে বড় বিভাগ। গুপ্তচরবৃত্তির সময় এর কর্মীরা বিভিন্ন রূপ নেয়। একই কাজে বহুরূপী আচরণ প্রায়ই লক্ষণীয়। এ বিভাগের কাজের প্রধান ক্ষেত্র হচ্ছে কূটনৈতিক ও বেসরকারি কর্মকর্তা। মোসাদের মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দাদের কাটসাস বলে।
মোসাদের রাজনৈতিক যোগাযোগ বিভাগের কর্মীরা দেশের রাজনৈতিক নেতা, অন্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ও যেসব দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক যোগাযোগ নেই সেসব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। প্রয়োজনে অর্থ ও নারীসহ নানাবিধ সুবিধা দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে।
উল্লেখ, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ মালয়েশিয়া ফিলিস্তিনিদের কট্টর সমর্থক এবং গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মতে, মালয়েশিয়ায় প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনি শরণার্থী রয়েছে।
২০১৮ সালে মালয়েশিয়ার রাজধানীতে এক ফিলিস্তিনি বিজ্ঞানীকে গুলি করে হত্যা করে দুই অজ্ঞাত ব্যক্তি। এরপর হামাস দাবি করে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা তাকে হত্যা করেছে। তবে ইসরায়েল এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।