আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশি কর্তৃক প্রতারণার শিকার হয়ে জাল স্পেশাল ব্যবহার করে দেশে ফেরার পরিবর্তে জেলে জরিমানার ৪ বাংলাদেশির।
মালয়েশিয়ায় ৪ বাংলাদেশির ৬ মাস করে জেল ও ১৫ হাজার করে ৪ জনকে ৬ ০হাজার রিঙ্গিত জরিমানা করেছেন আদালত। ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার সিপাং এর আদালত এ রায় দিয়েছেন। এ চার বাংলাদেশি হচ্ছেন, মনিরুল ইসলাম, খলিলুর রহমান, দিপু ও রহমান।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাধারন ক্ষমা কর্মসূচীর অধীনে গত ৩ সেপ্টেম্বর তারা দেশে ফিরছিলেন। মালয়েশিয়া এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশনে জার নথিপত্র শো করায় এদের গ্রেফতার করা হয় এবং ১২ সেপ্টেম্বর এদের আদালতে নিয়ে গেলে আদালত এদের জেল জরিমানা করেন।
এ দিকে ভোগান্তি আর প্রতারনা পিছু ছাড়ছেনা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে অবৈধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশি অবৈধ কর্মীদের। মালয়েশিযাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে প্রচার পত্র ও মিশনের ফেইসবুক পেইজে সাবধান করে দেয়ার পরেও এক শ্রেনীর প্রতারক চক্রের ফাদেঁ পড়ে আবারও জেলের গ্লানি টানছে তারা।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, পাবনার মনিরুল ইসলাম দূতাবাসে না গিয়ে কোতারায়া বাংলা মার্কেটে ফাদঁ পেতে থাকা বাংলাদেশি প্রতারক রাজিবের সঙ্গে পরিচয় হয় মনিরুলের। পরিচয়ের সূত্র ধরে মিষ্টি কথায় টোপ দেয় মনিরুল।
রাজিব ট্রাভেল পাস মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের স্পেশাল পাস করে দিবে বলে তার সাথে দুই হাজার রিঙ্গিতে চুক্তি হয়। ওই দিনই চুক্তি অনুযায়ি রাজিবের হাতে ২০০০ হাজার রিঙ্গিত তোলে দেয় মনিরুল। তিনদিন পর এয়ার টিকেট, ট্রাভেল পাস, স্পেশাল পাস মনিরুলকে বুঝিয়ে দেয় প্রতারক রাজিব। কাগজ হাতে পেয়ে মহা খুশি মনিরুল।
৩ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরছে সে। বিধি বাম, ৩ সেপ্টেম্বর এয়ারপোর্টে বোর্ডিংকাড নিয়ে ইমিগ্রেশনে যাওয়ারপর ডিউটিরত অফিসার তাকে গ্রেফতার করেন। জাল স্পেশাল পাস শো করার কারনে। এই স্পেশাল পাশে ২০১৭ সালে আব্দুল গনি নামে একজন বাংলাদেশে এসেছেন। দূতাবাস থেকে যে ট্রাভেল পাস ইস্যু দেখানো হয়েছে সেটিও জাল।
১২ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ার সেপাং-এর একটি আদালতে মনিরুলকে নিয়ে যাওয়া হয়। জাল নথিপত্র শো করার কারনে দোষি সাব্যস্ত করে ১৫ হাজার রিঙ্গিত জরিমানা ও ৬ মাসের জেল প্রদান করেন। শুধু মনিরুলই নয় খলিলুর রহমান, দিপু ও রহমান নামের আরোও তিন বাংলাদেশিকে একই সাজার রায় প্রদান করেন আদালত।
মালয়েশিয়া থেকে অবৈধ অভিবাসী নিজ নিজ দেশে ফিরছেন। গত ৫ সপ্তাহে ২৮ হাজার অভিবাসী নিজ নিজ দেশে ফিরেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
দেশটির সরকার ১ আগষ্ট থেকে “ব্যাক ফর গুড” নামে একটি নতুন স্কিম চালু করছে যা সেখানে অনিবন্ধিত শ্রমিকদের বিনা বিচারে তাদের নিজ দেশে ফিরে আসতে এ কর্মসূচী চালু করেছে।
খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, স্পেশাল পাস পেতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। ইমিগ্রেশনের ফ্লোরে রাত কাটিয়েও ইমিগ্রেশনের নানা অব্যবস্থাপনার কারণে এসপি পেতে তিন থেকে চারদিন ঘুরতে হচ্ছে বলে অভিযোগ প্রবাসীদের।
আবার সম্প্রতি শেষ হওয়া বৈধ করণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেও এখনো ভিসা না পাওয়া অনেকেই বিরক্ত হয়ে দেশে ফেরত যেতে চাচ্ছেন। তাদের এসপি না দিয়ে ফেরত দেওয়া হচ্ছে ইমিগ্রেশন থেকে।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সংশ্লিষ্টরা বলছেন প্রতিটি ইমিগ্রেশন কাউন্টার ভিজিট করা হচ্ছে, অফিসার ইনচার্জরা জানালেন দৈনিক চার’শ জন অভিবাসীকে এসপি দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে যারা থাকছে তাদের পরের দিন আসতে হচ্ছে। তিনি জানালেন, পুত্রাযায়া, জালান দোতা ও শাহ আলম ইমিগ্রেশন বাদে অন্যান্য ইমিগ্রেশন অফিসে ভিড় নাই বরং সেসব অফিসে গেলে দ্রুত কাজ হবে। ‘
ইমিগ্রেশনে খোঁজ নিয়ে জানা যায় পুত্রাজায়া, জ্বালান দোতা এবং শাহ আলম ইমিগ্রেশনে অতিরিক্ত সমাগম হচ্ছে অন্য দিকে প্রাদেশিক ইমিগ্রেশন অফিস কিছুটা ফাঁকা থেকে যাচ্ছে। তাছাড়া শুধু বাংলাদেশ নয়, অন্যান্য আরো প্রায় পনেরটি দেশের অভিবাসীরাও এ কর্মসূচি গ্রহণ করছে।
দূতাবাসের কর্মকর্তারা, যারা যে প্রদেশে আছেন তাদেরকে সে প্রদেশের ইমিগ্রেশন অফিসে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন দূতাবাসে ট্রাভেল পাস নিতে আসা প্রবাসীদের। তাছাড়াও বিমান ভ্রমণের তারিখের ৫ দিন আগে ইমিগ্রেশনে গেলে যে কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হবে।
এদিকে আম্পাং এ অবস্থিত পাসপোর্ট সার্ভিস কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন টিপি (ট্রাভেল পাস) দেওয়া হচ্ছে। যাদের পাসপোর্ট মেয়াদ শেষ, নষ্ট বা হারিয়ে গেছে তাদের জন্যই মুলত টিপি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যাদের পাসপোর্ট নাই, সাগর পথে পাচার হয়ে এসেছে বা মালয়েশিযা প্রবেশ করেই দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে পাসপোর্ট খুইয়েছে, তাদের টিপি দিতে হচ্ছে সাবধানে।
সাধারণত বাংলাদেশ থেকে নাগরিকত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে টিপি ইস্যু করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সকালে আবেদন জমা দিয়ে সব ঠিক থাকলে বিকালেই টিপি ইস্যু করা হচ্ছে বলেও জানান দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা। সূত্র: বাংলাদেশ টুডে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।