
সবুজে মোড়া ক্যামেরুন হাইল্যান্ডের শান্ত পাহাড়ি পরিবেশ যেন হঠাৎই বদলে গেল উত্তেজনায়। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের বিশেষ অভিযানে সবজি খামার, ব্যবসায়িক এলাকা ও নির্মাণ স্থল থেকে ১৭৪ বাংলাদেশিসহ মোট ৪৬৮ অভিবাসন প্রত্যাশীকে আটক করা হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মধ্যাহ্নের আগে মাত্র তিন ঘণ্টার এ অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশাল উপস্থিতি গোটা অঞ্চলকে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করে।
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ক্যামেরুন হাইল্যান্ডের চারটি জোনজুড়ে একযোগে অভিযান চালায়। সবজি বাগান-বেষ্টিত পর্যটনকেন্দ্রটির ব্যবসায়িক এলাকা, নির্মাণ প্রকল্প-স্থল ও সবজি খামার ঘিরে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে ইমিগ্রেশন বিভাগের ৫৪৭ সদস্য ও অভিবাসন কর্মকর্তারা অংশ নেন। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বার্নামা জানায়, অভিযানকালে অধিকাংশ অভিবাসন প্রত্যাশী ব্যস্ত ছিলেন সবজি প্যাকিংয়ের কাজে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আগমনের কোনো পূর্ব ধারণা না থাকায় তাদের পালানোর সুযোগ হয়নি।
ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক দাতুক জাকারিয়া শাবান জানান, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রায় এক মাস ধরে এই অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তার ভাষায়, গোয়েন্দা তথ্যে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ক্যামেরুন হাইল্যান্ড ও আশপাশের এলাকাগুলো শুধু কৃষিকাজ নয়, অভিবাসন প্রত্যাশীদের একটি কর্মকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
আটকদের মধ্যে সর্বাধিক ১৭৪ জন বাংলাদেশি রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ইমিগ্রেশন বিভাগ।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পার্বত্য অঞ্চলে অভিবাসন প্রত্যাশীদের আগমন স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। পাহাড়ি ভূখণ্ড ও শহর থেকে দূরবর্তী অবস্থানের কারণে অভিবাসন প্রত্যাশীরা রিসোর্ট এলাকায় এসে কাজ খোঁজে এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও তাদের নিয়োগ দিতে আগ্রহী।
অভিযানে মোট এক হাজার ৮৮৬ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে যাচাইয়ের পর ৪৬৮ জনকে নানা অভিবাসন অপরাধে আটক করা হয়েছে। তাদের কারও পাস মেয়াদোত্তীর্ণ, কারও কাছে ভ্রমণ নথি নেই, আবার কেউ কেউ অস্থায়ী কাজের ভিজিট পাস দেখালেও তা ভুয়া বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
আটকদের মধ্যে রয়েছেন— মিয়ানমার ১৭৫, বাংলাদেশ ১৭৪, ইন্দোনেশিয়া ৬৭, নেপাল ২০, পাকিস্তান ১৬, ভারত ১১ এবং ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, চীন ও কম্বোডিয়ার একজন করে নাগরিক। তাদের মধ্যে ৩৮৮ জন পুরুষ, ৭৬ জন নারী এবং চারজন শিশু।
মহাপরিচালকের মতে, আটকদের বয়স ২০ থেকে ৫৪ বছরের মধ্যে এবং তাদের কেলানটান, পেরাক ও সেলাঙ্গর রাজ্যের ইমিগ্রেশন ডিটেনশন ডিপোতে পাঠানো হবে।
সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে মোট ৮৩ হাজার ৯৯৪ অভিবাসন প্রত্যাশীকে আটক করা হয়েছে অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলায় গৃহীত উদ্যোগের অংশ হিসেবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



