জুমবাংলা ডেস্ক : জাকির হোসেন দীর্ঘদিন সৌদিতে ছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি ছুটিতে দেশে এসে নিজ বাগানে বিভিন্ন ফলের পাশাপাশি মাত্র দু’টি মাল্টার গাছ লাগান। প্রায় ৩ বছর পর দু’টি গাছে প্রায় ২শ’ কেজি মাল্টা উৎপাদন হয়। ভালো ফলন দেখে মাল্টা চাষে আগ্রহ বাড়ে জাকিরের। এরপর কৃষি বিভাগের সহায়তায় ২০১৭ সাল থেকে তিনি বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা ফলের চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার বাগানে ২৬০টি মাল্টা ফলের গাছ রয়েছে। মাল্টার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফল বিক্রি করে বছরে এখন তার ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা আয় হচ্ছে। এরইমধ্যে সফল ফল চাষি হিসেবেও জাকির পুরস্কার পেয়েছেন। তাকে দেখে এলাকার অনেক যুবক এখন মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন। তিনিও তাদের মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি নানা পরামর্শও দিচ্ছেন।
জাকির হোসেনের বাড়ি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের ঘোলষা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল আজিমের ছেলে।
জাকির হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন সৌদিতে ছিলাম। ২০১৪ সালে ছুটিতে দেশে এসে প্রথমে ২৪ শতক জমিতে বিভিন্ন ফলের ৬০টি গাছ লাগাই। এরমধ্যে দু’টি মাল্টার গাছ ছিল। মাঝখানে বিদেশে আবারো গিয়েছিলাম। প্রায় ৩ বছর পর ২০১৭ সালে দু’টি মাল্টা গাছে প্রায় ২শ’ কেজি মাল্টা উৎপাদন হয়। এতে মাল্টা চাষে আগ্রহ তৈরি হয়। পরে দেশে ফিরে আর বিদেশ যাইনি।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে বড়লেখা কৃষি বিভাগে দেয়া ১২০টি মাল্টার চারা ৪০ শতক জমিতে রোপণ করে মাল্টা ফলের চাষ শুরু করি। এরমধ্যে ১শ’টি গাছ বড় হয়। তিন বছর পর গাছগুলোতে প্রথম মাল্টা উৎপাদন হয়। তখন ২৭ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করি। ২০২১ সালে এই গাছগুলোতে প্রায় ৩ হাজার কেজি মাল্টা উৎপাদন হয়েছে। এতে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেছি। এতে আমার খরছ হয়েছে প্রায় লাখ টাকার মতো। ২০২০ সালে আরও একটি মাল্টা বাগান করেছি। সেখানে ৬০টি মাল্টা গাছ লাগিয়েছি। পাশাপাশি বাগানে আরও বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ রোপণ করেছি। ২০২১ সালে ৭৫ শতক জায়গা কিনে সেখানে আরও ১শ’টি মাল্টা গাছ এবং ১শ’টি বারি-২ কমলার গাছ লাগিয়েছি। পাশাপাশি পেয়ারা আর কূল গাছও লাগিয়েছি। বাগান পরিচর্যার জন্য দু’জন লোকও রেখেছি।
জাকির আরও বলেন, বছরে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে মাল্টার গাছে মুকুল আসে। এক সময় গাছ ফলে ফলে ভরে যায়। অক্টোবর মাসে মাল্টা পরিপক্ক হয়। তখন তা তুলে বাজারজাত করা হয়। এ বছরও মাল্টার ভালো উৎপাদন হয়েছে। আমার বাগানের উৎপাদিত মাল্টা খুবই মিষ্টি। এগুলো ঠিকমতো বাজারজাত করতে পারলে ৩ লাখ টাকার বেশি লাভ হবে। বাকি গাছগুলোতে আগামী বছর মাল্টা ধরবে বলে আশা করছি। মাল্টার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফল বিক্রি করে বছরে এখন তার ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা আয় হচ্ছে।
তিনি বলেন, গাছ লাগানোর পর ঠিকমতো পরিচর্যা করতে হয়। প্রথম থেকেই কৃষি বিভাগ অনেক সহযোগিতা করছে। আমাকে দেখে এখন অনেকে মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন। আমাদের এলাকায় এখন ছোট-বড় অনেক বাগান গড়ে উঠেছে। আমি তাদের নানা পরামর্শ দেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দেবল সরকার বলেন, জাকির কৃষি বিভাগের দেয়া মাল্টার চারা লাগিয়ে প্রথম মাল্টা চাষ শুরু করেছিলেন। তাকে আমরা বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণ দিয়েছি। সফল চাষি হিসেবেও পুরস্কৃত করেছি। তাকে দেখে এখন অনেক যুবক মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন। সবাই জাকির হোসেনের মতো হলে কৃষিক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য আসবে।
রাশিয়া থেকে আমদানি করা ৫৩ হাজার টন গম খালাস হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।