জুমবাংলা ডেস্ক : মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে থাকা প্রবাসীদের কয়েকটি শর্তের মাধ্যমে সেদেশের চারটি খাতে বৈধ হওয়ার একটি সুযোগ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (১৬ নভেম্বর) থেকে এই কার্যক্রম শুরু করেছে দেশটি। চলবে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত।
দেশটিতে অবৈধভাবে থাকা তিন লাখের বেশি বাংলাদেশি প্রবাসী এটাকে নতুন সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন। খবর বিবিসির
মালয়েশিয়া প্রবাসী সাংবাদিক আহমেদুল কবির সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কত জন শ্রমিক এই সুবিধা পাবেন, তাদের বেতন-ভাতা কী হবে, সেসব বলা হয়নি।
মালয়েশিয়ায় বৈধ-অবৈধ মিলে পাঁচ লাখের বেশি বাংলাদেশি রয়েছেন। এছাড়া বিশ্বব্যাংকের ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় সবমিলে সাড়ে ১২ লাখ থেকে সাড়ে ১৪ লাখের মতো অবৈধ প্রবাসী রয়েছেন।
শুধু চারটি খাতে বিদেশি অবৈধ প্রবাসীদের বৈধ হওয়ার সুযোগ দিয়েছে মালয়েশিয়া। অর্থাৎ তারাই বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন, যারা এসব খাতে কাজ করবেন। মালয়েশিয়া সরকারের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, চারটি খাত হলো: কনস্ট্রাকশনস সেক্টর, ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর, প্ল্যান্টেশন সেক্টর ও অ্যাগ্রিকালচার সেক্টর।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনের একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই কর্মসূচির জন্য কোনো এজেন্ট বা ভেন্ডর নিয়োগের প্রয়োজন নেই। শুধু নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি অবৈধ প্রবাসীদের নামসহ সরাসরি ইমিগ্রেশনে আবেদন করবেন। নিজে নিজে ইমিগ্রেশনে গিয়ে বৈধ হওয়া যাবে না।
বৈধ হওয়ার এ প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে পারবে মালয়েশিয়ার সোর্স কান্ট্রি হিসাবে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ ১৫টি দেশের অনিয়মিত প্রবাসীরা।
আবেদনে আরও যেসব শর্ত পূরণ করতে হবে
মালয়েশিয়া সরকারের তথ্য অনুসারে, এই সুবিধা পেতে হলে তাকে প্রমাণ করতে হবে, তিনি মালয়েশিয়ায় অন্তত বৈধ উপায়ে প্রবেশ করেছিলেন। পরবর্তীকালে অবৈধ হয়ে গেছেন। অর্থাৎ অবৈধ পথে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করে এই সুবিধা নেওয়া যাবে না।
যারা আবেদন করবেন, তাদের পাসপোর্টে অন্তত ১৮ মাসের মেয়াদ থাকতে হবে। ফলে যাদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাদের দ্রুত নবায়নের জন্য আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশের হাইকমিশন।
তবে মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের প্রধান সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, অভিবাসন জনিত অপরাধে কালো তালিকাভুক্ত হয়েছেন, এমন প্রবাসীরা এ সুবিধা পাবেন না। কোনো প্রবাসী সরাসরি আবেদন করতে পারবেন না। যারা নিয়োগ দেবেন, সেই প্রতিষ্ঠান প্রবাসীদের বিস্তারিত জানিয়ে আবেদন করবে।
যে প্রক্রিয়ায় শ্রমিকদের বৈধ হওয়ার কার্যক্রম চলবে
যেসব কোম্পানি এই চারটি খাতে কর্মী নিয়োগ করতে চায়, তারা অবৈধ প্রবাসীদের নাম, পাসপোর্ট নম্বর, মালয়েশিয়ায় প্রবেশের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব লেবার ফর পেনিনসুলার মালয়েশিয়ার ইন্টিগ্রেটেড ফরেন ওয়ার্কার্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে অনলাইনে আবেদন করবে।
প্রথমেই অভিবাসন দপ্তর তাদের আইনগত বিষয়টি যাচাই করে দেখবে। এরপরে সেই আবেদন যাবে শ্রম দপ্তরে। তাদের অনুমোদনের বিষয়টি আসবে। অনুমোদন মিললে ইমিগ্রেশনে আঙুলের ছাপ, মেডিকেল, করোনাভাইরাস পরীক্ষা, বিভিন্ন ফি দেওয়ার বিষয় আসবে। সাতদিনের মধ্যে এই আবেদনের প্রক্রিয়া শেষ করবে দপ্তরটি।
বৈধ হতে খরচ কত
মালয়েশিয়া থেকে সাংবাদিক আহমেদুল কবির জানিয়েছেন, বৈধ হতে সরকারিভাবে কত টাকা খরচ হবে, দেশটির অভিবাসন বিভাগ সে তালিকা প্রকাশ করেছে। ইমিগ্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, ডিপোজিট ফি ৫০০ রিঙ্গিত, কম্পাউন্ড (জরিমানা) ১৫০০ রিঙ্গিত, লেভি ১৮৫০ রিঙ্গিত, করোনাভাইরাস টেস্ট ৩৮০ রিঙ্গিত, মেডিকেল ফোমিমা ১৮০ রিঙ্গিত, পারমিট (পিএলকেএস) ২০৫ রিঙ্গিত, ইন্সুরেন্স ১৮০ রিঙ্গিত ও ইমিগ্রেশনের খরচ চার হাজার ৭৯৫ রিঙ্গিত। অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় ৯৫ হাজার ৯০০ টাকা। তবে নিয়োগ দাতা কোম্পানির খরচ সম্পূর্ণ আলাদা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।