আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জীবিকার তাগিদে প্রতি বছরেই আমাদের দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমায়। এদের মধ্যে বেশিরভাগ লোক সেখানে গিয়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন। তাদের পাঠানো টাকায় দেশে পরিবার পরিজন খেয়ে পরে বাঁচেন। কিন্তু দুঃখের কথা হচ্ছে দেশটিতে বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃ’ত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
দেশটির অনলাইন মালয়েসিয়াকিনির তদন্তে দেখা গেছে চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে সেখানে ৩৯৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিক মারা গেছেন। এরা সবাই বয়সে তরুণ বা যুবক। মৃ’ত্যুর কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে হার্ট অ্যাটাক অথবা স্ট্রোক। মাত্র ৬ মাসে এত বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমিক মারা যাওয়ায় এর সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে সোশ্যালিস্ট পার্টি অব মালয়েশিয়া (পিএসএম)।
দলটি বলেছে, মৃ’ত্যুর কারণ যা-ই হোক না কেন, এসব তরুণ শ্রমিকের জন্য ‘কিলিং ফিল্ড’ হয়ে উঠেছে মালয়েশিয়া। এর দায় নিতে হবে আমাদের এবং যথাযথ পদ্ধতিতে এর তদন্ত শুরু করতে হবে। মৃ’ত্যু সনদে এসব মৃ’ত্যুর প্রধান কারণ দেখানো হয়েছে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাক। বিষয়টি তদন্তের প্রয়োজন। পিএসএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আর রানি বলেছেন, ১৮ থেকে ৩২ বছর বয়সী এমন হাজার হাজার শ্রমিক রয়েছেন মালয়েশিয়ায়। তাদের মৃ’ত্যুতে যে কারণ দেখানো হচ্ছে তা একেবারেই বেমানান। কারণ, অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে নিয়োগের আগে তাদেরকে মেডিকেল পরীক্ষায় ‘ফিট’ বা যোগ্য বলে সনদ দেওয়া হয়েছে। ফলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকে তাদের মারা যাওয়ার কারণ হতে পারে বাসস্থানের অত্যন্ত নাজুক পরিস্থিতির কারণে। প্রতিটি মৃ’ত্যুর প্রকৃত কারণ পূর্ণাঙ্গভাবে খুঁজে বের করতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এক্ষেত্রে রক্ত পরীক্ষা করা যেতে পরে। পোস্ট মর্টেম করা যেতে পারে। মৃ’ত্যুর আগের উপসর্গ সম্পর্কে তথ্য নেয়া যেতে পারে মৃ’ত শ্রমিকের সহকর্মীদের কাছ থেকে। এরপরই মৃ’ত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যেতে পারে। তিনি আরো বলেন, এমন মৃ’ত্যুর তথ্য সংরক্ষণের জন্য আমাদের উচিত ডাটাবেজ তৈরি করা, যাতে সহজে সব তথ্য এক স্থানে পাওয়া যায়। এসব সমস্যার মূলে পৌঁছার জন্য আমাদের প্রচেষ্টাকে বিস্তৃত করা উচিত।
তিনি বলেন, এটা সবাই জানেন যে, অনেক ঋণ করে বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়া যান। এতে তারা মালয়েশিয়ায় আধুনিককালের দাসত্বে পরিণত হচ্ছেন। এই অবস্থা মোকাবিলা করতে শ্রমিক আমদানিতে সংশ্লিষ্ট সব ফি নিয়োগকারীকে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে অভিবাসীদের ইস্যু নিয়ে কাজ করা রাইট টু রিড্রেস কোয়ালিশনের মতো গ্রুপগুলো। তাই শ্রমিক নিয়োগ, অবৈধ শ্রমিক, শ্রমিকদের আবাসন ও তাদের স্বাস্থ্যগত ইস্যুসহ সব বিষয়ে একটি সমন্বিত নীতি গ্রহণের জন্য মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আর রানি। কিন্তু অভিবাসী শ্রমিকদের সমস্যার বিষয়ে যথাযথভাবে দৃষ্টি দিতে ব্যর্থ হচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। আমি চাই এই ট্রাজেডি বন্ধ হোক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।