আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া: দীর্ঘ দুই বছর পর পুরোদমে ট্যুরিস্ট ভিসা চালু করার ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়া। মহামারির কারণে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে দেশটিতে বিদেশি কর্মী ও পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছি।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দেশটির প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি ইসমাইল সাবরি ইয়াকোব এক বিবৃতিতে বলেছেন, ১ এপ্রিল থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের জন্য সীমানা সম্পূর্ণরূপে আবার খুলে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, দর্শনার্থীদের পাশাপাশি মালয়েশিয়া থেকে ফেরত আসা কর্মী যারা সম্পূর্ণরূপে টিকাপ্রাপ্ত বা বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন তারা খুব সহজেই মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সম্পূর্ণরূপে টিকাপ্রাপ্ত বা বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন এমন দর্শনার্থীদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার প্রয়োজন নেই। তবে তাদের অবশ্যই যাত্রার দুই দিন আগে একটি আরটি-পিসিআর পরীক্ষা এবং পৌঁছানোর পরে একটি দ্রুত পরীক্ষা (RTK) করতে হবে।
মালয়েশিয়ার প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার প্রায় ৯৮ শতাংশ সম্পূর্ণরূপে টিকা দেওয়া হয়েছে এবং অর্ধেকেরও বেশি বুস্টার ডোজ পেয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ওমিক্রন প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশটির দৈনিক নতুন করে সংক্রমণ প্রায় ৩৩ হাজারেরও বেশি শনাক্ত হয়েছে। যা ২০২০ এর মার্চে প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে পাঁচ গুন বেশি।
মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী খায়রি জামালুদ্দিন বলেন, ‘আমরা এখন করোনার সঙ্গেই জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়েছি। লকডাউনের কোনো চিন্তা না করে টিকাগ্রহণ ও সচেতনতার ওপর নজর দিচ্ছি। পাশাপাশি শিশু ও বয়স্কদের প্রতি আরও যত্নশীল হতে জনগণকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
মালয়েশিয়া ট্যুরিজম প্রোমোশন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে দেশটিতে পর্যটকের সংখ্যা ছিল ২ কোটিরও বেশি। মহামারির কারণে পর্যটন খাতে আয় কমেছে প্রায় ৮১ শতাংশ। ২০১৯ সালে পর্যটন খাতে আয় ছিল ৬৬ দশমিক ১ বিলিয়ন রিঙ্গিত। পর্যটন খাতে নিম্নমুখী প্রবণতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মাথাপিছু পর্যটক ব্যয়ও কমেছে।
এদিকে ধুঁকতে থাকা পর্যটন খাত চাঙা করতে সম্প্রতি ১০ বছর মেয়াদি নতুন একটি পরিকল্পনা পেশ করেছে মালয়েশিয়া। এক সময়ের এশিয়ার অন্যতম পর্যটন আকর্ষণের দেশটি গত বছর ১০ হাজার কোটি রিঙ্গিত বা ২ হাজার ৪৬১ কোটি ডলার লোকসান গুনেছে।
২০১৯ সালে দেশটিতে ২ কোটি ৮০ লাখ পর্যটক আগমনের পর ‘ভিজিট মালয়েশিয়া ২০২০’-এর আওতায় তিন কোটি পর্যটক লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে পর্যটন খাত থেকে আয় হয়েছিল ২৪ হাজার ২ কোটি রিঙ্গিত, যা দেশটির জিডিপির ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ। কিন্তু মহামারি নিয়ন্ত্রণে গত বছরের মার্চে শুরু হওয়া লকডাউনে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো মালয়েশিয়ার পর্যটন খাতও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।