জুমবাংলা ডেস্ক: বৃদ্ধ মায়ের সেবা করা এবং দুই সন্তানকে লেখাপড়া করানোর শর্তে ইয়াবা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এক আসামির সাজা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
আদালতের এই রায়ের ফলে শরিয়তপুরের মতি মাতব্বরকে আর কারাগারে যেতে হচ্ছে না। শর্ত ভঙ্গ করলে যেতে হবে কারাগারে।
বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রবিবার (৮ নভেম্বর) এ আদেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আগামী দেড় বছর তাকে প্রবেশনে থাকতে হবে। শর্ত যথাযথভাবে পালন করলে তার বাকি সাজা মওকুফ হয়ে যাবে।
আদালত যে শর্তগুলো দিয়েছেন সেগুলো হলো, ৭৫ বছরের বৃদ্ধ মায়ের যত্ন নিতে হবে, দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলের লেখাপড়া চালিয়ে নিতে হবে, আইন অনুসারে নির্ধারিত বয়সের আগে মেয়েকে বিয়ে দেওয়া যাবে না। এসব শর্ত না মানলে জেলে যেতে হবে তাকে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, আসামি মতি মাতব্বরের কাছ থেকে ৪১১ এবং অপর একজন আসামির কাছ থেকে ৭০০ পিস ইয়াবা উদ্ধারের অভিযোগে ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর ঢাকার কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলার বিচার শেষে ২০১৭ সালের ৮ জানুয়ারি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে হাকিম আদালত তাদেরকে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করা হলে একই বছরের ১১ এপ্রিল তা খারিজ করে দেন মহানগর দায়রা জজ আদালত।
পরে আসামি মতি মাতব্বর ২০১৭ সালের ১ জুলাই হাইকোর্ট বিভাগে রিভিশন আবেদন করেন।
এর আগে ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর গ্রেপ্তারের পর ২০ মাস কারাভোগ করেন মতি মাতব্বর। ২০১৭ সালের ৯ জুলাই হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন।
রিভিশনের শুনানিতে আসামিপক্ষ এ মামলায় প্রবেশন অধ্যাদেশ, ১৯৬০ এর ধারা ৫ অনুযায়ী আদেশ দেওয়া যেতে পারে বলে উল্লেখ করে আইনজীবীরা বলেন, যেহেতু তার এটিই প্রথম অপরাধ এবং আর কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো রেকর্ড নেই, তিনি ভবিষ্যতে কোনো অপরাধ করবেন মর্মে ধারণা করার মতো কোনো তথ্যও নেই। সে কারণে তিনি প্রবেশন আইনে সুযোগ পেতে পারেন।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে চলতি বছরের ৭ অক্টোবর ১০ দিনের মধ্যে আসামির নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং টিন নম্বর খুলে দিতে অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি, ঢাকাকে নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপের পর ২১ অক্টোবর ঢাকা জেলার প্রবেশন অফিসার হাইকোর্টকে অবহিত করেন।
পরে আদালত আসামির বিষয়ে আরো একটি (অ্যান্টিসিডেন্ট রিপোর্ট) প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ আদেশ অনুসারে প্রবেশন কর্মকর্তা ২ নভেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে আসামির স্বভাব-চরিত্র সম্পর্কে ভালো মন্তব্য করা হয়। আজ রবিবার আদালত দেড় বছরের জন্য প্রবেশন মঞ্জুর করে শর্তগুলো পালনের নির্দেশনা দেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।