জুমবাংলা ডেস্ক : শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাম জামে মসজিদে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ৩৮ জন মুসল্লি দগ্ধ হন। তাঁদেরকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। অগ্নিদগ্ধ রোগীদের সুচিকিৎসায় নির্মিত সরকারি এ হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের গেটের বাইরে কাকডাকা ভোরে এক বৃদ্ধের বুকে মাথা গুঁজে বিলাপ করছিলেন গৃহবধূ নাসিমা আক্তার।
নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় তার স্বামী ইব্রাহিম ব্যাপারী মারাত্মক অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন। স্বামী অগ্নিদগ্ধ হওয়ার সংবাদ শুনে বাবার সঙ্গে রাতেই হাসপাতালে ছুটে এসেছেন। সেই তখন থেকেই বিরামহীনভাবে বিলাপ করে চলেছেন। সারারাত কাঁদতে কাঁদতে শুকিয়ে গেছে চোখের পানি, ভেঙেছে গলার স্বরও। ভোর থেকে ক্ষণে ক্ষণে ডুকরে কেঁদে উঠে বলছেন, ‘আমার স্বামী বাঁচবো তো?’
শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে আলাপকালে নাসিমা আক্তারের বাবা জাগো নিউজকে জানান, মেয়েকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন বটে তবে রাতে এক ঝলক মেয়ের জামাইয়ের অগ্নিদগ্ধ শরীর দেখে আঁতকে উঠেছেন। ঝলসানো শরীর, চোখ মুখ ফুলে গেছে। প্রথমে চিনতেই পারছিলেন না নিজের মেয়ের স্বামীকে।
শুধু নাসিমা আক্তার নন, শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের গেটের বাইরে রাত থেকে কেঁদে চলেছেন অগ্নিদগ্ধদের স্বজনরা। হাসপাতালে রোগীকে একনজর দেখতে মাত্র একজনকে সুযোগ দেয়া হয় বিধায় ঘনিষ্ঠজনরাও চোখে দেখা দেখার সুযোগ পাননি নিজের স্বজনকে। ফলে স্ত্রী স্বামীর জন্য, বাবা ছেলের জন্য, বোন ভাইয়ের জন্য কেঁদেই চলেছেন। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চিকিৎসার প্রতিশ্রুতি দিলেও শারীরিক অবস্থা সবারই সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন। ফলে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত পরিবারগুলো গত রাত থেকে নাওয়া-খাওয়া ভুলে হাসপাতালের গেটের বাইরে একটু সুখবর শোনার অপেক্ষায় করছেন।
অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবাই শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃতের তালিকায় রয়েছেন মসজিদের মুয়াজ্জিনও।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে প্রথম জুয়েল নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। এরপর রাতে ও সকালে বাকিদের মৃত্যু হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।