স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছেন ‘মিরপুরের নীলক্ষেত’। বইয়ের রাজ্য নীলক্ষেতের মতোই বৈচিত্র্যময় সংগ্রহের দেখা মিলল এখানে। বইয়ের রাজ্য হিসেবে সুখ্যাতি আছে নীলক্ষেতের। কমদামে দেশি-বিদেশি, নতুন-পুরোনো বিভিন্ন ধরনের বই পাওয়া যায় বলে নীলক্ষেতমুখী হতে দেখা যায় বইপ্রেমীদের।
তবে নীলক্ষেতের মতোই বিভিন্ন ধরনের বইয়ের সংগ্রহের দেখা মিলল মিরপুরে। স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছেন মিরপুরের নীলক্ষেত। নীলক্ষেতের মতো অতটা বিস্তৃত না হলেও ৩৫-৪০ টি ছোট ছোট বইয়ের দোকান নিয়ে গড়ে উঠেছে মিরপুরের এই ছোট্ট নীলক্ষেত।
মিরপুর-১০ থেকে পশ্চিম দিকে কিছুটা এগোলেই চোখে পড়বে বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের একটি স্থাপনা। এ স্থাপনার সামনের ফুটপাত ঘেঁষে শুরু হওয়া বইয়ের দোকানগুলোর সারি শেষ হয় মিরপুর-২ এর ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কাছে গিয়ে। দুপুর থেকে শুরু করে রাত ১০ টা পর্যন্ত বেচাকেনা চলে মিরপুরের এই ছোট্ট নীলক্ষেতে।
পাঠ্যবই, ভর্তি পরীক্ষা কিংবা চাকরির বই থেকে শুরু করে কবিতা, গল্প, উপন্যাসসহ সব ধরনের বইয়েরই দেখা মেলে এখানে। এখানে যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,মধুসূদন দত্ত, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাজী নজরুল ইসলামের মতো লেখক ও কবিদের বাংলা সাহিত্যের বই আছে, তেমনি আছে ইংরেজি সাহিত্যের বিখ্যাত যত বই।
এছাড়া আছে বিদেশি লেখকদের বইয়ের অনুবাদও। এই মিরপুরের নীলক্ষেতে বই কিনতে আসা জহুরুল হক বলেন, মাঝেমধ্যে অফিস থেকে ফেরার পথে ফুটপাতের এই দোকানগুলোতে ঢুঁ মেরে যাই, ঘুরেফিরে দেখি নতুন কী কী বই আসলো। এসব দোকানে পুরোনো বইয়ের বেশ ভালো সংগ্রহ আছে বলে জানান একজন বিক্রেতা।
তিনি বলেন আজকাল এমন বইয়ের চাহিদা বেড়েছে। এসব বইয়ের অবস্থা বিবেচনা করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়। পুরোনো বইয়ের দাম শুরু হয় ৩০ টাকা থেকে, যা গড়াতে পারে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া যুথি এসেছিলেন এখান থেকে পুরোনো বই কিনতে।
তিনি বলেন, সময় নিয়ে খুঁজলে কোনো এক দুর্লভ বইও পেয়ে যেতে পারেন আপনি এখানে। এই বইগুলোতে মিশে থাকে অচেনা কোনো মানুষের স্মৃতি, অনেক সময় লেখা থাকে ছোট কোন উক্তি, সবমিলিয়ে পুরাতন এই বইগুলোর পাতা উল্টিয়ে দেখতেও বেশ ভালো লাগে, বলেন তিনি।
এখন আর আগের মতো বই পড়ার ক্রেজ নেই এই প্রজন্মের মাঝে। ইন্টারনেট আর ই-বুকের কল্যাণে কাগুজে বই পড়ার অভ্যাস যেন হারিয়েই যাচ্ছে। তবে এখনো কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা বইয়ের পাতার ঘ্রাণ নিতে না পারলে বই পড়ে মজা পান না৷ আর এসব মানুষের জন্যই টিকে আছে এই ছোট ছোট বইয়ের দোকানগুলো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।