মিল্কিওয়ে ও অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সির সংঘর্ষ কত দিন পর হতে পারে? মহাকাশবিজ্ঞানীরা একটা আনুমানিক হিসাব করে বলছেন, এই সংঘর্ষ অন্তত ৩০০ কোটি বছরের আগে হয়তো হবে না। এমনকি ৫০০ কোটি বছরও লাগতে পারে। তাই প্রথমে বলব, এ রকম ভয়াবহ সংঘর্ষে মহাপ্রলয় হওয়ার আশঙ্কা তো রয়েছেই।
কিন্তু এর আগে শত শত কোটি বছর বিজ্ঞানীরা কাজ করার সুযোগ পাবেন। আবার সৌরজগতের মধ্যেও ওলট–পালট লেগে যেতে পারে। তাই সব দিক বিবেচনায় রেখেই আমরা এ জটিল প্রশ্নের উত্তর বের করব। এটাও মনে রাখতে হবে, শত শত কোটি বছর পর সংঘর্ষের পরিণতি কী হতে পারে, সেটা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতভেদ থাকা স্বাভাবিক। মতভেদ আছে। তবে এটা নিশ্চিত যে গ্যালাক্সি দুটির মধ্যে সংঘর্ষ অনিবার্য।
আমাদের সৌরমণ্ডল মিল্কিওয়ে বা ছায়াপথ গ্যালাক্সিতে রয়েছে। এই ছায়াপথের সবচেয়ে কাছের খুব বড় গ্যালাক্সি হলো অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি। এরা দুজন একে অপরকে কাছে টানছে। তাই একসময় এদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত। প্রশ্ন হলো, এই সংঘর্ষের রূপটি কী রকম হতে পারে? আমাদের সৌরজগৎ বা অন্তত এই পৃথিবী কি ধ্বংস হয়ে যাবে?
বিজ্ঞানীদের মধ্যে এ প্রশ্নে দুই ধরনের মত রয়েছে, যদিও পার্থক্য তেমন বড় কিছু নয়। এক পক্ষ মনে করে, সংঘর্ষের সময় আমাদের সূর্য বিশাল আকারের এক লাল জ্বলন্ত গোলকে পরিণত হবে। দুই গ্যালাক্সির সম্মিলনে সূর্যের অন্তত তিনটি গ্রহ—বুধ, শুক্র ও পৃথিবী এই গোলকের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতে পারে।
অন্যদিকে আরেকটি পক্ষের মত হলো, দুটি গ্যালাক্সির ভেতরই যেহেতু প্রচুর ফাঁকা স্থান রয়েছে, তাই তাদের ভেতরের নক্ষত্র ও গ্রহগুলো অনায়াসে একে অপরকে অতিক্রম করে যাবে। কিন্তু দুই গ্যালাক্সির মেঘাচ্ছন্ন গ্যাসের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটবে। ফলে নতুন নতুন নক্ষত্র জন্ম নেবে। দ্বিতীয় মতটা এখন বেশিরভাগ বিজ্ঞানী সঠিক বলে মনে করেন।
দুই গ্যালাক্সির সংঘর্ষ হয়তো হালকা চালে একে অপরকে অতিক্রম করবে। এ সময় যদি অন্য কোনো নক্ষত্রের কোনো গ্রহের সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ ঘটে বা পৃথিবী অন্য কোনো নক্ষত্রের মধ্যে ঢুকে পড়ে, তাহলে পৃথিবী ধ্বংস হতে পারে।
কিন্তু কালের ধারায় সূর্যও তো নিস্তেজ হতে থাকবে। ৩০০ কোটি বা ৫০০ কোটি বছর পর্যন্ত পৃথিবী ও তার প্রাণিজগৎ যদি টিকেও থাকে, তাহলে সেই সময়ের নিষ্প্রভ সৌরজগতের তুলনায় দুই গ্যালাক্সির সংঘর্ষ খুব বড় ধরনের ওলট–পালট ঘটাবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।