লাইফস্টাইল ডেস্ক : মানুষের মুখের গড়ন মূলত ৬ ধরনের হয়ে থাকে। যেমন ওভাল শেপ ফেস, লং শেপ ফেস, রাউন্ড শেপ ফেস, স্কয়ার শেপ ফেস, হার্ট শেপ ফেস, ডায়মন্ড শেপ ফেস। সব ধরনের মুখের গড়নের সাথে সব ধরনের হেয়ার কাটিং বা হেয়ার সেটিং মানায় না। এই ৬ ধরনের ফেসিয়াল স্ট্রাকচারে সাধারণত যে ধরনের হেয়ার কাটিং বা হেয়ার সেটিং মানায় সে সম্পর্কে কিছু টিপস জেনে নেই বিউটি এক্সপার্ট তানজিমা শারমিন মিউনীর কাছ থেকে।
ওভাল শেপ ফেস : ওভাল শেপ ফেস যাদের তাদের চুল যদি স্ট্রেইট হয়, তাহলে ডিসকানেকটেড লেয়ারস ভালো লাগে। চুল ওয়েভী হলে ডিপ লেয়ারস উইথ আন্ডার কাটস ভালো মানায়। যদি কার্ল হয় তাহলে স্টেপ লেয়ার ভালো লাগে। মোটামুটি সব ধরনের হেয়ারস্টাইল-ই মানায়, তবে হেয়ার-স্টাইল করার সময় বয়স ও ব্যক্তিত্বের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা জরুরি।
হেয়ার স্টাইলিংয়ের ক্ষেত্রে টুইস্টি বান, হাই প্ল্যান্ট পনি তার সামনের দিকে ব্যাংস বা ফ্রিঞ্জ ভালো লাগবে। যদি চুল লম্বা হয় সেক্ষেত্রে রিবন টুইস্ট ভালো লাগবে। শাড়ির সাথে মেসি বান বা আম্রপালী খোঁপা ভালো মানাবে। তবে সামনের দিকের সেটিং বুঝে করা প্রয়োজন।
লং শেপ ফেস : লং শেপ ফেস যাদের তাদের কপাল যদি বড় হয় তাহলে ফ্রিঞ্জ বা লং লেয়ার সাইড ব্যাংস করলে ভালো লাগবে এবং মুখের লম্বাটে ভাব কম মনে হবে। এধরনের ফেসে চুল যদি মিডিয়াম বা লং হয় তাহলে ডিসকানেকটেড লেয়ারস ভালো মানায়। তবে চুল হতে হবে স্ট্রেইট বা ওয়েভী। শ্যাগ ও শ্যাভেজ কাট মানায়, কিন্তু চুল হতে হবে মিডিয়াম বা লং এবং ওয়েভী। ছোট চুলে স্টাইলের ক্ষেত্রে বব উইথ ব্যাংস পিক্সি ভালো লাগবে।
হেয়ার সেটিংয়ের ক্ষেত্রে টপের চুল কম ফোলানোই ভালো। কেননা বেশি ফোলালে মুখের লম্বাটে ভাব আরও বেড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে সামনের দিকে অর্থাৎ কপালে কিছু চুল ছড়িয়ে ব্যাংস-এর মতো করে সেট করলে মুখটিকে একটু চওড়া মনে হবে। মেসি বান, ব্যাংস করে সেট করে, ভলিউম করে এক সাইডে ফিসটেইল বা ওয়েভ করে সেট করলে ভালো লাগবে।
রাউন্ড শেপ ফেস : এ ধরনের ফেসে চুলের শেপ কার্লস, ওয়েভ বা ফ্রিঞ্জ এড়িয়ে চলাই ভালো। এমন মুখের জন্য আদর্শ হচ্ছে ব্লান্ট কাট। ডিপ লেয়ার উইথ আন্ডার কাটস ভালো মানায়, তবে লেয়ার শুরু করতে হবে চিন থেকে লাস্ট লেংথ পর্যন্ত। টপের চুলে ইন্টারনাল লেয়ার করে ভলিউম বাড়াতে হবে এবং সামনের দিকের চুলগুলো এমনভাবে বাড়াতে হবে যেন ফেসের ওভার-অল-শেপের সাথে হেয়ার খুব সুন্দরভাবে ব্লেন্ড হয়ে থাকে এবং মুখের গোলাকৃতি ভাবটা কম মনে হয়, হেয়ার কাটিংয়ের কারণে। এধরনের ফেস শেপে শর্ট হেয়ার কাট ভালো মানায়। যেমন সামার বব, ক্লাসিক বব, চিক কাট, পিক্সি ভালো মানায়। ব্যাংস ও ফ্রিঞ্জ এড়িয়ে চলাই ভালো বড় চুলের ক্ষেত্রে।
হেয়ার সেটিংয়ের ক্ষেত্রে টপ নট, চুড়ো-জুড়া, টপ-রিঙলেটস, ফিস কার্ল পনিটেইল, মেসি বান, টুইস্টি বান এগুলো ভালো মানায়। তবে সামনের দিকে হেয়ার-স্টাইলটির সাথে মানিয়ে যদি কিছু চুল দু’গালের ওপর ছেড়ে রাখা হয় তাহলে মুখের গোলাকৃতি ভাবটা কিছুটা কম মনে হবে।
স্কয়ার শেপ ফেস : হেয়ার কাটিংয়ে ফ্রিঞ্জ বা কার্লস মুখের চৌকো ভাব অনেকটাই কমিয়ে দেয়। কপালের সামনের চুল ছোট করে কাটুন এবং চুল যেন ফোলা দেখায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। প্রয়োজনে ইন্টারনাল লেয়ার করে চুলের ভলিউম বাড়াতে হবে। এধরনের ফেস শেপে চিক কাট ভালো মানায়। লেয়ার বব ভালো মানায়, তবে চুল হতে হবে স্ট্রেইট ও ওয়েভী। লং ও মিডিয়াম চুলের ক্ষেত্রে শ্যাগী শ্যাগ, লং লেয়ার, ইন-আউট লেয়ার ভালো মানায়। তবে লেয়ার শুরু করতে হবে কানের কাছ থেকে।
হেয়ার সেটিংয়ের ক্ষেত্রে মাঝখানে সিঁথি করে ছেড়ে রাখলে চৌকোণা ভাবটা কম মনে হবে। লম্বা ঘন চুল হলে ওয়েভী বা কার্লি করে ছেড়েও রাখতে পারেন। যদি বাঁধতে চান তাহলে ফেসের সাথে মিলিয়ে বুঝে হেয়ার সেট করতে হবে।
হার্ট শেপ ফেস : এমন ফেস শেপে কপালের কাছে হালকা আর কানের নিচে ঘন চুল বেশি মানায়। এমন মুখের মাঝখানে সিঁথি তেমন মানায় না। মাঝখানে সিঁথি করলে তীক্ষ থুঁতনি আরো বেশি গুরুত্ব পাবে। এধরনের মুখে ফেদার কাট, টেক্সারাইজড আনইভন লেয়ারস, ফরোয়ার্ড গ্রাজুয়েশন ভালো মানায়। তবে চুল হতে হবে স্ট্রেইট ও ওয়েভী। ফ্রিঞ্জ এড়িয়ে চলুন, ব্যাংস করতে চাইলে সাইড করে লং লেয়ার করে ব্যাংস করুন।
সেটিংয়ের ক্ষেত্রে এক সাইডে টাইট ফিনিশিং সেট করে টপে ভলিউম করে একপাশে ভলিউম করে ফিসটেইল বা কার্ল বা সফট ওয়েভ করলে ভালো লাগবে। এছাড়াও টপ রিংলেটস রোল ভালো মানায়। শাড়ির সাথে সামনে মাঝখানে বা সাইডে সিঁথি করে চুলগুলোকে পাফ করে সেট করে করতে পারেন ট্র্যাডিশনাল খোঁপা বা মেসি বান।
ডায়মন্ড শেপ ফেস : এধরনের ফেসে যে কোনো শেপের হেয়ার কাট-ই মানায়। তবে এক্ষেত্রে যেমন খেয়াল রাখতে হবে চুলের লেংথ ও টাইপ, তেমনি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে বয়স ও ব্যক্তিত্বের বিষয়টিও। আর হেয়ার সেটিংয়ের ক্ষেত্রেও সবটাই মানাতে পারে। কিন্তু কিভাবে করলে কোন সাজ ও পোশাকের সাথে মানাবে সেটি বুঝে করাই প্রয়োজন। যাদের গলা ছোট তারা চুল ছোট রাখুন। এতে আপনার গলা লম্বাটে দেখাবে। লম্বা মেয়েদের লম্বা চুল এবং শর্ট মেয়েদেরকে ছোট বা মিডিয়াম চুলে ভালো মানায়। হেয়ার কাটিং ও সেটিং দুটোই নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনার ফেসের শেপের সাথে মানানসই হয় এমন হেয়ার কাটিং ও সেটিং নির্বাচন করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।