জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানীর ভাটারায় চাঞ্চল্যকর সাইফুল হত্যা মামলার রহস্য উম্মোচনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-মো. আপেল আহমেদ (২৭), তার স্ত্রী শান্তা ইসলাম ওরফে আলভী (২০) ও তাদের বন্ধু আব্দুর রাকিব চৌধুরী (২২)। ডিবি গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. শাহজাহান সাজু এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এডিসি শাহজাহান বলেন, ‘গতকাল রোববার গুলশান জোনাল টিম রাজধানীর ভাটারা থানাধীন বাঁশতলা ক্যাম্বব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করেছে।’
গত ২৪ জুন মিনারা পারভীন নামে এক নারী তার স্বামী সাইফুল ইসলামের নিখোঁজের ঘটনায় হাজারীবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ওইদিন দুপুর ২টার দিকে তার স্বামী নিজের ব্যক্তিগত ব্যবহৃত গাড়ি নিয়ে বাসা থেকে বের হন। কিন্তু আর ফিরে আসেননি।
জিডি ও গাড়ির নম্বরের সূত্র ধরে অভিযান পরিচালনা করে গত ২৬ জুন পরিত্যক্ত অবস্থায় মাদানী এভিনিউস্থ ১০০ ফিট থেকে গাড়িটি উদ্ধার করে ভাটারা থানা পুলিশ। পরদিন ভাটারার সাঈদ নগর পূর্ব পাড়া মসজিদ গলির আনোয়ার হোসেন নামে এক স্থানীয় ব্যক্তির বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে সাইফুল ইসলামের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা আমলে নিয়ে ভাটারা থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা (গুলশান) বিভাগের গুলশান জোনাল টিমও ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্ত চলাকালীন তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এরপর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
যেভাবে খুন হন সাইফুল
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার আপেল ফুটপাতে কখনো ভ্যানে করে কাপড় বিক্রি করে, কখনো ভাসমান রেস্টুরেন্ট আবার কখনো ফলমূল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত। দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে আর্থিক সংকটে পড়ে সে। এর মধ্যে তার বন্ধুর রাফির পাওনা টাকা উদ্ধারে তার সঙ্গে একটি পরিকল্পনা করে সে। পরিকল্পনা মোতাবেক আপেল তার স্ত্রী শান্তা ইসলামের সঙ্গে আমোদ ফূর্তির প্রলোভন দেখিয়ে সাইফুলকে সাঈদ নগরে তাদের বাসায় ডেকে আনে।
সাইফুল সেখানে আসার আগে নোমান ও হাসান দুই স্থানীয় যুবককে ডেকে আনে আপেল। কিন্তু ঘটনার আগেই তারা সেখান থেকে চলে যায়। এ ছাড়া রাফি তার ফুপাতো ভাই রাকিবকে ডেতে আনে। সাইফুল আসার পর আপেল ও রাফি তাকে বিবস্ত্র করে। পরে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকুর বাট দিয়ে তাকে প্রথমে মারধর করে টাকা চাইতে থাকে।
ডিবি আরও জানায়, একপর্যায়ে সুযোগ বুঝে সাইফুল সেখান থেকে পালাতে চেষ্টা করে। কিন্তু তার আগেই রাকিব তাকে টেনে ধরে এবং আপেল উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে সাইফুলকে। এ সময় সাইফুলের মুখ চেপে ধরে রেখেছিল শান্তা। ঘটনাস্থলেই সাইফুলের মৃত্যু হয়। পরে তার মুখে ওড়না গুজে, গলা কেটে খাটের নিচে লুকিয়ে রেখে বাসা তালা দিয়ে আত্মগোপন করে রাকিব, আপেল, শান্তা ও রাফি।
নিহত সাইফুল স্বাস্থ্যবান ও লম্বা হওয়ায় তার লাশটিকে গুম করতে না পেরে খাটের নিচে লুকিয়ে রেখেই তারা পালিয়ে যায় বলে জানান ডিবি গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. শাহজাহান সাজু।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।