কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে ‘ধর্ষণ’ ও নির্যাতনের পর ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছে ভিডিও ছড়ানোর মূল হোতা শাহ পরান ও তার ভাই ফজর আলীর বিরোধ। পূর্বশত্রুতার জেরে বড় ভাই ফজর আলীকে বিপদে ফেলে প্রতিশোধ নিতেই পুরো ঘটনা সাজিয়েছিলেন ছোট ভাই শাহ পরান।
শুক্রবার (৪ জুলাই) রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) কুমিল্লার বুড়িচং থানার কাবিলা বাজার এলাকা থেকে শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, শাহ পরান গত ২৬ জুন সংঘটিত এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন। বড় ভাই ফজর আলীর হাতে আগে প্রকাশ্যে অপমানিত হওয়ায় প্রতিশোধ নিতে একটি মব গঠন করে এই নারকীয় ঘটনা ঘটান তিনি। পরে সেই মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, বেশ কিছুদিন ধরে ওই নারীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন ফজর আলী ও শাহ পরান। এ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের জেরে কয়েক মাস আগে গ্রাম্য সালিশে জনসম্মুখে শাহ পরানকে চড়-থাপ্পড় মারেন ফজর আলী। সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে সুযোগ খুঁজতে থাকেন শাহ পরান।
ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফজর আলী ৫০ হাজার টাকা সুদের লেনদেনের অজুহাতে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করেন। টের পেয়ে ইমো অ্যাপে মেসেজ দিয়ে অন্যদের ডেকে আনেন শাহ পরান। এর প্রায় ২০ মিনিট পর পূর্বপরিকল্পিতভাবে শাহ পরান ও তার সঙ্গে থাকা আবুল কালাম, অনিক, আরিফ, সুমন, রমজান এবং আরও আট থেকে দশজন অজ্ঞাত সহযোগী ওই ঘরে হানা দেন। তারা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ফজর আলীকে মারধর করেন এবং ভুক্তভোগী নারীকে নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে ফজর আলীকেও তারা এই কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে বাধ্য করেন। এরপর নৃশংস ওইসব দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে পুলিশ ও র্যাব মিলে এ পর্যন্ত অভিযুক্ত ফজর আলীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শাহ পরান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের দায় স্বীকার করেছে। তাকে মুরাদনগর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
নেতাকর্মীদের ফেলে যারা পালিয়ে যায় তারা দলের নেতা হতে পারে না : নাহিদ
গত ২৬ জুন রাতে মুরাদনগরের বাহেরচর গ্রামে ওই নারীকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হয় এবং সেই ভিডিও ২৯ জুন সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একই দিন ভুক্তভোগী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন।
সূত্র : আরটিভি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।