স্পোর্টস ডেস্ক : উইকেটের সামনে এসে বল ধরতে গিয়ে রান আউটের সুযোগ মিস করছেন মুশফিকুর রহিম, এমন ঘটনা যেন বাংলাদেশের ক্রিকেটে নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুশফিকুর রহিম যখন বাংলাদেশের ক্রিকেটে আসেন উইকেটকিপার হিসেবে, তার আগে উইকেট সামলাতেন খালেদ মাসুদ পাইলট, যিনি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা উইকেটকিপার বলে বিবেচিত। খবর : বিবিসি বাংলার।
তখন থেকেই ভক্তরা খালেদ মাসুদ পাইলটের জায়গায় মুশফিকুর রহিমকে সার্বজনীনভাবে গ্রহন করেননি। পরবর্তীতে মুশফিকুর রহিম তার ব্যাটিং দিয়ে মুগ্ধ করেন। মুশফিকুর রহিমের ক্যারিয়ারের এখন ১২ বছর চলছে, কিন্তু এখনও প্রশ্ন ওঠে প্রায়শই যে, উইকেটকিপার মুশফিক কতটা সামলাতে পারছেন উইকেটের পেছন থেকে।
ক্রিকবাজের একটি পরিসংখ্যান বলছে উইকেটের পেছনে বা স্লিপে আসা সুযোগে সাফল্যের হারের দিক থেকে সবার পেছনে বাংলাদেশ। ইএসপিএন ক্রিকইনফোর ২০১৬ সাল পর্যন্ত যে পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মার্ক বাউচার সবচেয়ে কম ১০%ঠ সুযোগ মিস করেছেন। মুশফিকুর রহিম সবচেয়ে বেশি ৩২% ক্যাচ বা স্ট্যাম্পিং মিস করেছেন। ৩০ এমনকি ২২ শতাংশের বেশি সুযোগ কোনো উইকেট কিপারই মিস করেননি। তুমুল সমালোচিত পাকিস্তানি কিপার কামরান আকমল মিস করেছেন ২২ শতাংশ সুযোগ।
২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালেও মুশফিকুর রহিম উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মিস করেন। যার মধ্যে একটি বেশ আলোচিত, ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কেইন উইলিয়ামসনের রান আউটের সুযোগ স্টাম্পের সামনে এসে আগেই স্টাম্প নাড়িয়ে দিয়ে হাতছাড়া করেন। দেশের মাটিতে চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজেও একইভাবে দুবার সুযোগ নষ্ট করেন মুশফিক। তার এই দ্বৈত ভূমিকা কি ব্যাটিংয়েও প্রভাব ফেলছে?
ওয়ানডেতে এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন মুশফিকুর রহিম। ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন। ৮ ম্যাচে ৫২ গড়ে ৩৬৭ রান তোলেন বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও একটি ৯৮ রানের ইনিংস ও একটি ৬৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। এই ফরম্যাটে শেষ আট ইনিংসে মুশফিকুর রহিমের মোট রান ৪৩ রান, সর্বোচ্চ ১৫।
তবে গত বছরও মুশফিক টি-টোয়েন্টি বেশ ভালো ব্যাট করে ছিলেন, দুটি অপরাজিত ৭২ রানের ইনিং ও একটি ৬৬ রানের ইনিংস ছিল। ক্রিকেট বিশ্লেষক ও সাংবাদিক নোমান মোহাম্মদ বলেন, ‘মুশফিক মনে করে উইকেটকিপিং তার ব্যাটিংকে সাহায্য করে। এটা তার বিশ্বাস। মুশফিকুর রহিমকে কেউ এই জিনিসটা বোঝাতে পারেনি কখনো।’
আফগানিস্তানের বিপক্ষে মুশফিকুর রহিম রান তাড়া করতে নেমে ওপেনিংয়ে ব্যাট হাতে নেমে যান। এই ঘটনা নিয়ে নোমান মোহাম্মদ বলেন, ‘গত ম্যাচে মুশফিক ওপেনিংয়ে নামল এর পেছনে বড় কারণ সে উইকেটকিপিংয়ে বড় বড় ভুল করেছে, সেটাকে ঢাকার জন্য মরিয়া চেষ্টা হিসেবে ওপেনার হিসেবে নেমে গেল, যেটা ঠিক না। পরিসংখ্যান দেখলে বলা যায় মুশফিকের ব্যাটিংয়ে খারাপ সময় যাচ্ছে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে মুশফিককে কিপিংয়ে নিয়মিত রাখবে কি না সেটা একটা অমীমাংসিত প্রশ্ন।’
এছাড়া লিটন দাসকে দলে রেখে মুশফিককে নিয়মিত কিপিংয়ে রাখাটা কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নোমান মোহাম্মদ এবং এটাকে দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে পরামর্শ দেন। তার ভাষায়, ‘লিটন দাস মুশফিকের চেয়ে ভালো কিপার এটা স্বীকৃত, ঘরোয়া ক্রিকেট যারা দেখে অনুসরণ করে সেটা তারা জানে। টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে বসে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত, কিন্তু মুশফিকের একটা সমস্যা সে এই ব্যাপারটাকে অন্যভাবে নেয় এবং অভিমান করে ফেলে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।