ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চলছে বিধানসভা নির্বাচন। নির্বাচন কমিশনের সূচি অনুযায়ী এবারের বিধানসভা নির্বাচন আট দফায় হচ্ছে বাংলায়। ইতোমধ্যে পাঁচ দফায় নির্বাচন শেষ হয়ে গিয়েছে। এদিকে পশ্চিমবঙ্গের বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। দ্বিতীয় দফায় দাপট দেখাতে শুরু করে দিয়েছে করোনা। সংক্রমণের নয়া রেকর্ড হচ্ছে রোজ। এর মধ্য দিয়েও চলছিল রাজনৈতিক সমাবেশ। করোনার হাত থেকে রেহাই পায়নি প্রার্থীরাও। করোনার আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন সামশেরগঞ্জ কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী রেজাউল হক ও জঙ্গিপুরের আরএসপি প্রার্থী প্রদীপ নন্দী।
২৬ এপ্রিল সপ্তম দফায় মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রীতিমাফিক মুর্শিদাবাদের ওই দুটি কেন্দ্রে নির্বাচন বাতিল করতে হয় কমিশনকে। এরপর এদিন নির্দেশিকা জারি করে একুশের নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর আগামী ১৩ই মে এই দুই কেন্দ্রে ভোটের ঘোষণা করে কমিশন। ভোটগণনা আগামী ১৮ মে।
এদিকে শুরু হয়েছে ইসলাম ধর্মের পবিত্র মাস রমজান মাস। ৩০ দিন রোজা রাখার পর খুশি মেতে ওঠে সকল ইসলাম ধর্মের মানুষ। এবছর ১৩ই মে ঈদ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। ফলে ক্ষুদ্ধ ইসলাম ধর্মের ভোটাররা। ইসলাম ধর্মের বছরের সবচেয়ে বড় দুটি উৎসব ঈদ- উল ফিতর ও ঈদ উল আযহা। এবছর ঈদ উল ফিতরের দিন নির্বাচন ঘোষণা হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসলাম ধর্মের মানুষ।
মুসলিমদের উৎসবের দিন ভোটের তারিখ দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও।
সম্ভাব্য ঈদের দিন ভোটের তারিখ ঘোষণায় আপত্তি জানিয়েছেন মুসলিমরা
মঙ্গলবার সংখ্যালঘু সংগঠনের একাধিক নেতা নির্বাচন কমিশনের কাছে এ ব্যাপারে আর্জি জানিয়েছেন। পাশাপাশি শীতলকুচিকাণ্ড নিয়েও মুখ খুলেছেন মুসলিম নেতারা। আগামী দিনে যাতে কোনোভাবেই শীতলকুচিকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি না হয় সে ব্যাপারেও কমিশনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তারা। এনিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেন তারা।
প্রতিনিধিদলের সদস্য আব্দুর রফিক বলেন, আগামী ১৩ মে সামসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে কেন্দ্রে ভোটের নতুন দিন ঘোষণা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা কমিশনের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছি। ওইদিন ঈদ রয়েছে। ওইদিন ভোট হলে মুসলিমরা ভোট দিতে সক্ষম হবেন না। আমরা দাবি জানিয়েছি, ১৩ মে দিনটা পরিবর্তন করা হোক।
তিনি বলেন, শীতলকুচিতে বাহিনীর গুলিতে চারজন মারা গেছেন। এটা নিয়ে সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। গুলি চালানোর মতো পরিস্থিতি যাতে আগামী দিনে তৈরি না হয় এ ব্যাপারে কমিশন বাহিনীকে সতর্ক করুক। অন্যদিকে তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক কোনো ভাবাবেগকে যাতে কোনওভাবেই ভোটের প্রচারে কাজে লাগানো না হয়, সে ব্যাপারে অনুরোধ করেছি। এতে বাংলার পরিবেশ, বাংলার ঐতিহ্য নষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে কমিশনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি।
এদিকে মমতা বন্দোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদে এক জনসভায় নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘আপনারা ঈদের দিন ভোট দিলেন কেন?’ তিনি তাচ্ছিল্যের সুরে বলেন, ‘ইলেকশন কমিশন মনে হয় ক্যালেন্ডার দেখেনি। ঈদের দিন, পুজোর দিন মাথায় রেখে কাজ করা উচিত।’
কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি ঈদের দিনে ভোট দিন আর পুজোর দিনে ভোট দিন, মনে রাখবেন, যার ভোট দেওয়ার সে দেবেই। এভাবে আপনারা রুখতে পারবেন না।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।