আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত জুড়ে তুমুল সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতার মাঝে এক মুসলিম শিশুকে কুমারী রূপে পূজা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বাগুইআটির অর্জুনপুরের দত্তবাড়ি।
এর জন্য বাছাই করা হয়েছে ফাতেমা নামের এক শিশুকে। যার বয়স চার বছর।
ফাতেমাকে ‘কালিকা’ রূপে সিংহাসনে বসিয়ে আরাধনা ও পূজা-অর্চনা করবেন দত্তবাড়ির পুত্রবধূ মৌসুমী দত্ত। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন, “যে ধর্মের নামে বিদ্বেষ সঞ্চিত করে, ঈশ্বরের অর্ঘ্য থেকে সে বঞ্চিত হয়। আমরা ভগবানের আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হতে চাই না। অষ্টমীর দিন তাই দুর্গা রূপে বরণ করে নেব ফাতেমাকে।”
আরও জানান, তাদের পূজার বয়স মাত্র পাঁচ বছর। ২০১২ সালে পাড়ার পূজায় কৃষ্ণনগর থেকে দুর্গা প্রতিমা বানিয়ে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু সেই প্রতিমায় পূজা করতে আপত্তি জানান পাড়া প্রতিবেশীরা। কথা-কাটাকাটির মাঝে তখন সেই প্রতিমা বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তার পরের বছর থেকে দত্ত বাড়িতে শুরু হয় তন্ত্র মতে দুর্গাপূজা।
মৌসুমী বলেন, “প্রথম থেকেই দত্তবাড়িতে কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়। সে বছর এক ব্রাহ্মণ কন্যাকে পূজা করি, তার পরের বছর অব্রাহ্মণ বাড়ির মেয়ে, ২০১৪ সালে ডোম পরিবারের এক শিশু কন্যা, আর গত বছর ফের একবার এক ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়েকে কুমারী হিসেবে পূজা করি। বাড়ির সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে আসি যে দুর্গাপূজায় কোনো জাতপাতের ভেদাভেদ রাখব না আমরা। সেইমতো এ বছর আমরা মুসলিম শিশুকন্যাকে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিই।”
ঘটনা ক্রমে কামারহাটির বাসিন্দা মুহাম্মদ ইব্রাহিমের সঙ্গে যোগাযোগ হয় মৌসুমীর। তিনি এককথায় রাজি হয়ে যান। জানান, তার এক ভাগনি থাকে আগরায়। বয়স চার, নাম ফাতেমা। এই শিশু এখন মামাবাড়ি ঘুরতে কলকাতায় এসেছে।
ফাতেমাকে অষ্টমীর দিন বরণ করে নেবে দত্তবাড়ি। তারপর তাকে লাল টুকটুকে বেনারসি, চন্দন, ফুলের মালা দিয়ে দুর্গাপ্রতিমার মতো করে সাজিয়ে কুমারী পূজা করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।