নিজস্ব প্রতিবেদক : মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফের নীতি সুদহার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে নীতি সুদহার (পলিসি রেট) বৃদ্ধি করার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন গভর্নর।
আজ (২৪ সেপ্টেম্বর) নীতি সুদহার বিদ্যমান শতকরা ৯ শতাংশ হতে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৯.৫০ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নতুন এ সিদ্ধান্ত আগামীকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হতে কার্যকর হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সুদহারে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে স্বল্প সময়ের জন্য ঋণ দেয়, সেটাই হচ্ছে নীতি সুদহার। ইংরেজিতে একে বলে রেপো রেট। রেপোর বাংলা হচ্ছে পুনঃক্রয় চুক্তি (Repurchase Agreement বা Repurchase Option)। এটা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য মুদ্রানীতির একটি অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে পরিচিত।
গতকাল বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে নীতি সুদহার বাড়ানোর কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। গভর্নর দায়িত্বে আসার পর দ্বিতীয়বারে মতো বাড়ানো হলো। এর আগে সাড়ে ৮ থেকে বাড়িয়ে ৯ শতাংশ করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, নীতি সুদহার চলতি সপ্তাহে বাড়ানো হবে। এরপর আগামী মাসে আরও কিছুটা বৃদ্ধি করা হবে। এখন নীতি সুদহার ৯ শতাংশে রয়েছে। গত বছরের মার্চ থেকে দেশের মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি থাকায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শের সঙ্গে মিল রেখে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুসৃত সংকোচনমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ওভারনাইট রেপাে নীতি সুদহার বিদ্যমান শতকরা ৯ শতাংশ হতে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৯.৫০ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করা হলো।
গভর্নর বলেন, আমি আশাবাদী মূল্যস্ফীতি মার্চ এপ্রিলের মধ্যে একটি ভালো জায়গায় চলে আসবে। কতখানি ভালো যায়গায় আসবে সেটা হয়তো বলা যাবে না। তবে আমরা পলিসি আরও শক্ত করবো যাতে মূল্যস্ফীতি কমে আসে। আমাদের এখন বিনিময় হার স্থিতিশীল আছে। এছাড়া রেমিট্যান্সও বাড়ছে। আশাকরি আগামীতেও বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকবে। যদি এটা ধরে রাখা যায় তাহলে মূল্যস্ফীতি অবশ্যই কমে আসবে।
এছাড়া, ব্যাংকসমূহের তারল্য ব্যবস্থাপনা অধিকতর দক্ষতার সাথে পরিচালন করার লক্ষ্যে নীতি সুদহার করিডোরের উর্ধসীমা স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) এর ক্ষেত্রে বিদ্যমান সুদহার শতকরা ১০.৫০ শতাংশ হতে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ১১ শতাংশ করা হয়েছে। আর নীতি সুদহার করিডোরের নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপােজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) শতকরা ৭.৫০ শতাংশ হতে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃ্দ্ধি করে ৮ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
বিবিএস তথ্য মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশে দাঁড়ানোর পর চলতি বছরের জুলাইয়ে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ হয়। এটি ২০১০-১১ অর্থবছরের পর সর্বোচ্চ। বিগত সরকার গত অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। যদিও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি মূল্যস্ফীতি ছিল দেশে। অন্যদিকে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২২ সালের মে থেকে বেশ কয়েকবার সংকোচনমূলক নীতি অনুসরণ করছে। বাড়ানো হচ্ছে পলিসি রেট। নীতি সুদহার বাড়ানোর ফলে ব্যাংক ঋণের সুদ বেড়েছে। এতে ঋণ নেওয়া আগের চেয়ে ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে।
‘সংস্কার মিশন’ সম্পন্ন করতে ড. ইউনূসের পাশে থাকার ঘোষণা সেনাপ্রধানের
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।