জুমবাংলা ডেস্ক : দেড় যুগ অর্থাৎ ১৮ বছর ধরে দানকৃত রক্ত শরীরে ধারণ করে বেঁচে আছেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার রিমা আক্তার। ২২ বছর বয়সী রিমা আক্তার থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত।
মলিন দৃষ্টিতে অনাগত অনিরাপদ ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে দিন কাটছে তার। জাগতিক সুখ বা আনন্দ কোনো কিছুই তার মনকে ছুঁতে পারে না। মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১৮ বছর পার করেছেন তিনি।
প্রতি মাসেই তার শরীরে দিতে হয় এক ব্যাগ করে রক্ত। কিন্তু প্রতি মাসে তাকে এক ব্যাগ রক্ত কে দেবে- এই দুশ্চিন্তায় দিনরাত কাটে তার। তবুও হাল ছাড়েননি রিমা। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে প্রতি মাসে আকুতি জানান এক ব্যাগ রক্তের জন্য। কারণ এটিই এখন তার বেঁচে থাকার লড়াই। তার রক্তের গ্রুপ বি পজেটিভ।
রিমা আক্তার পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার রাঙ্গালিয়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুর রহিমের মেয়ে। দারিদ্র্য এবং অসুস্থতার কারণে অষ্টম শ্রেণি পাসের পর আর পড়ালেখা করতে পারেননি রিমা। এই দুঃখও তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়।
রিমা আক্তার বলেন, কোনো মাসে রক্ত দেয়া দেরি হলে চোখে ঝাপসা দেখি। মাথা ঘোরে, চলাফেরা করার জন্য পায়ে শক্তি থাকে না। এমনকি খাবার খেতেও পারি না। তাই নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে এক ব্যাগ রক্তের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে আকুতি জানাই। এভাবে আর কতদিন রক্ত ধার করে চলব আমি? আর কতদিন বাঁচব, মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে লড়তে আমি ক্লান্ত।
রিমার দিনমজুর বাবা আব্দুর রহিম বলেন, আমার আদরের মেয়ে রিমা আক্তারের বয়স যখন ছয় বছর তখন হঠাৎ একদিন অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর সাধ্যমতো রিমাকে অনেক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দেই। একদিন চিকিৎসকের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানতে পারি থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত রিমা। এরপর থেকে ওষুধের পাশাপাশি তার শরীরে প্রতি মাসে দেয়া হচ্ছে রক্ত।
কোনো মাসে রক্ত দিতে না পারলে তার শরীরে দেখা দেয় নানা ধরনের জটিলতা। রক্ত দিতে দেরি হলে প্রাণ যায় যায় অবস্থা হয়ে যায় তার। এজন্য প্রত্যেক মাসের শুরুতেই তার শরীরে এক ব্যাগ রক্ত দিতে হয়। এভাবে ১৮ বছর ধরে তাকে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে অন্যের দানকৃত রক্ত দেয়া হচ্ছে। মেয়েটিকে নিয়ে আজ বড় অসহায় আমি।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা গরিব মানুষ। গরিবের মেয়ের এত বড় রোগ কেন দিলেন আল্লাহ? আল্লাহ যেন আমার মেয়েটাকে সুস্থ করে দেন এজন্য সবার দোয়া চাই। একই সঙ্গে আদরের মেয়েকে বাঁচাতে বিত্তবানদের সহযোগিতা চাই।
রিমা আক্তারের রক্তের গ্রুপ বি পজেটিভ। তাকে রক্ত দান করতে যোগাযোগ করতে পারেন। রিমার বাবার মোবাইল নম্বর (০১৭২-৫৮৭১৪৫৭)। আর্থিক সহযোগিতার জন্যও একই নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।
সূত্র: জাগোনিউজ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।