জুমবাংলা ডেস্ক : বগুড়ায় স্কুল মাঠে পড়ে থাকা এক ব্যক্তিকে মৃত ভেবে দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন স্থানীয়রা। কিন্তু ৯৯৯ নম্বার থেকে ফোন পেয়ে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে ভর্তির আধাঘণ্টা পর মারা যান নাসির উদ্দিন মণ্ডল (৪৫) নামের ওই ব্যক্তি। তিনি বগুড়া শহরের পালশা এলাকার মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে।
জানা গেছে, নাসির উদ্দিন মণ্ডল মাদকাসক্ত ছিলেন। গত পাঁচ বছরে তিনি আড়াই বিঘা জমি এবং বাড়ি বিক্রি করেন মাদকের টাকা যোগাড় করতে। একপর্যায়ে তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যান। এরপর থেকে নাসির ভিক্ষা করে খাবার যোগাতেন। কখনও স্কুলের বারান্দায় আবার কখনও বাস টার্মিনালে রাত কাটাতেন। মাদকসেবী হিসেবে পরিচিত হওয়ায় এলাকার লোকজন তাকে তেমন সহযোগিতাও করত না। ফলে খাদ্যের অভাবে শারিরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।
গত কয়েকদিন ধরে নাসির পালশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বারান্দায় শুয়ে ছিলেন। তাকে কেউ খাবার না দেওয়ায় তার হাত-পা নাড়াচাড়া বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় এলাকার লোকজন গতকাল শুক্রবার রাতে তাকে মৃত ভেবে দাফনের উদ্যোগ নেয়। স্কুল মাঠে খাটিয়া আনা হয় তাকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য। এমন সময় এলাকার এক যুবক ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে মৃতদেহ পড়ে থাকার বিষয়টি জানান।
সংবাদ পেয়ে উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম সেখান উপস্থিত হন। এ সময় স্থানীয় লোকজন নাসিরের চোখে এবং মুখে পানি দিলে তিনি নড়াচড়া শুরু করেন। পরে দ্রুত তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়া হয়। এর আধাঘণ্টা পর মারা যান নাসির।
নাসিরের বন্ধু সুজন বলেন, ‘এক সময় নাসিরের অনেক টাকা-পয়সা ছিল। তবে বিভিন্ন কারণে তার শহরে থাকা প্রায় আড়াই বিঘা জমি বিক্রি করে ফেলে। এ কারণে ছয় মাস আগে তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্ত্রী চলে যাওয়ার শোকে নাসির সম্পূর্ণভাবে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেন। একপর্যায়ে নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে নাসির স্থানীয় এক গ্যারেজে থাকা শুরু করেন। সেখান থেকে তিনদিন আগে তিনি পালসা সরকারি প্রাথমিক স্কুল মাঠে চলে আসেন। প্রতিবেশীরা খাওয়ানো চেষ্টা করলেও তিনি খাবার গ্রহণ করেননি।’
এ ব্যাপারে উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম বলেন, ‘খাদ্যের অভাবে তার দেহ হাড্ডিসার হয়ে যায়। বেশ কয়েকদিন ধরে কেউ তাকে কোন খাবার দেয়নি। ফলে নাড়াচড়া করার মতো শক্তিও হারিয়ে ফেলেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।