জুমবাংলা ডেস্কঃ মেট্রপলিট্যান চেম্বার অফ কমার্স এ- ইন্ড্রাষ্ট্রি, ঢাকা (এমসিসিআই) এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীন্যস্থ কর অঞ্চল-১৫, ঢাকা এর আয়োজনে “কর প্রদান, রিটার্ন দাখিল ও উৎস কর কর্তনের বিধান পরিপালনঃ অর্থ আইন, ২০২২ এর মাধ্যমে আনীত পরিবর্তন” বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মেট্রপলিট্যান চেম্বার অফ কমার্স এ- ইন্ড্রাষ্ট্রি, ঢাকা (এমসিসিআই) এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীন্যস্থ কর অঞ্চল-১৫, ঢাকা গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে “কর প্রদান, রিটার্ন দাখিল ও উৎস কর কর্তনের বিধান পরিপালনঃ অর্থ আইন, ২০২২ এর মাধ্যমে আনীত পরিবর্তন” বিষয়ে এমসিসিআই-র মতিঝিল অফিসে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে। এমসিসিআই’র সভাপতি মোঃ সায়ফুল ইসলাম উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ কে এম হাসানুজ্জামান, কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৫, ঢাকা। এছাড়াও সভায় কর অঞ্চল- ১৫, ঢাকা এর অতিরিক্ত কর কমিশনারবৃন্দ, যুগ্ম কর কমিশনারবৃন্দ, উপ-কর কমিশনারবৃন্দ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, এমসিসিআই এর পরিচালকবৃন্দ এবং দেশের গণ্যমান্য ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা অংশগ্রহন করেন।
অর্থ আইন, ২০২২-এর প্রাসঙ্গিক বিষয়াবলির গুরুত্ব অনুধাবনে সকলকে সাহায্য করা এবং একই সাথে আয়কর রিটার্ন নির্ভুল দাখিলকরণ, উৎসে কর কর্তনের বিধি বিধান পরিপালন ও eTDS System ব্যবহার সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া এই সভা আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশে সর্বনিম্ন কর জিডিপি অনুপাত বিদ্যমান। “উন্নয়নশীল দেশ” থেকে “উন্নত দেশের” মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ অগ্রসরমান। এলক্ষ্যে প্রত্যক্ষ করের উপর নির্ভরতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং পরোক্ষ করের নির্ভরশীলতা থেকে সরে আসা জরুরী।
স্বাগত বক্তব্যে এমসিসিআই’র সভাপতি বলেন, করোনা ও পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক অর্থনীতিকে একটি চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। বর্তমান বিশ্বের সব চ্যালেঞ্জের কথা মনে রেখেই প্রণীত হয়েছে অর্থ আইন, ২০২২। এমসিসিআই’র প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে কর ব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে কাজ করার জন্যে তিনি এনবিআরের ভূয়সী প্রশংসা করেন। অনলাইন ও অটোমেশন ব্যবস্থার পূর্ণ সদব্যবহার জনিত কারণে ব্যবসার ক্ষেত্রে সময় ও খরচ দুটোই বেঁচে যাবে বলে তিনি মনে করেন। করদাতা এবং কর কর্তৃপক্ষ পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সমূহের দূরত্ব কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন। বক্তব্য শেষ করার আগে তিনি ব্যবসা সংক্রান্ত সকল লাইসেন্স ও নবায়নের মেয়াদ ৩ থেকে ৫ বছর করার জন্যে এমসিসিআই যে বিভিন্ন দপ্তরে প্রয়োজনীয় আলোচনা করছে, সেক্ষেত্রে এনবিআরের সহযোগিতা কামনা করেন।
বাজেট ও অর্থ আইন, ২০২২ এর মাধ্যমে আয়কর আইনে আনীত পরিবর্তন ও উৎসে কর কর্তনের বিধান পরিপালন সংক্রান্ত একটি উপস্থাপনা প্রদান করেন জনাব ওয়াকিল আহমদ, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৫, ঢাকা। সবশেষে, eTDS System – এর উপরে বিশদভাবে আলোচনা করেন জনাব আরিফুল হক, উপ কর কমিশনার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
ওয়াকিল আহমদ বলেন, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানই সরকারের পক্ষ হিসেবে কাজ করছে। উৎসে কর কর্তন সরকারের রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস। এ জন্য উৎসে কর কর্তন সংক্রান্ত বিধি বিধান পরিপালনে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। আরিফুল হক eTDS System এর অনলাইন ভিত্তিক সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন। বর্তমানে eTDS System এর সাথে কর্তনকারী কোম্পানীসমূহের তথ্যাবলি প্রদান করার সুযোগ রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সঞ্চয়পত্রের সুদ, ব্যাংক হিসাবের সুদ eTDS System এ যুক্ত হবে বলে আরিফুল হক মন্তব্য করেন।
উপস্থাপনা পরবর্তী উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে eTDS System চালুর ফলে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনের দিকে এগিয়ে গিয়ে সকল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারের একটা অংশীদারিত্ব সৃষ্টি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। এমসিসিআই’র সাবেক সভাপতি ব্যরিষ্টার নিহাদ কবির, উৎসে কর কর্তন প্রত্যয়ন পত্র, আয়কর রিটার্ণ জমা দেওয়ার প্রমাণপত্রের উপর আলোকপাত করেন। এছাড়াও পিকার্ড বাংলাদেশ লিঃ, ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোবাকো বাংলাদেশ লিঃ, এইচএসবিসি ব্যাংক, বায়ার্সক্রপসাইন্স, ট্রান্সকম, কাফকো, ম্যাটলাইফ, এনসিসি ব্যাংক, চালডাল ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ প্রশ্নোত্তর পর্বে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
প্রধান অতিথি এ কে এম হাসানুজ্জামান, কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৫, ঢাকা, এমসিসিআই কর্তৃক উক্ত বিশেষ আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি উল্লেখ করেন এই ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে কর কর্তৃপক্ষ এবং করদাতাদের মধ্যকার দূরত্ব নিরসন হবে, করদাতাদের জন্য কর পরিপালন সহজ হবে এবং কর বিভাগের জন্য কর আদায় সহজ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। কর কমিশনার উৎসে কর কর্তন এর ভূমিকা, সেক্টর ভিত্তিক কর জমা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এমসিসিআই ও এনবিআর উভয় পক্ষই দেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক বিকাশে একসাথে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে এমসিসিআই’র উর্ধ্বতন সহ- সভাপতি জনাব কামরান টি রহমান উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ প্রদান করতঃ সভার পরিসমাপ্তি ঘোষণা করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।