জুমবাংলা ডেস্ক: দ্বিতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় মেম্বার পদে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ফিলিপাইনের নারী জিন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা ওরফে জেসমিন আক্তার জুলহাস।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে প্রায় চারগুণ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। তাকে ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করায় এলাকাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ফিলিপাইনের এই কন্যা।
তিনি বলেন, আমি জনগণের আস্থার মর্যাদা দিয়ে এলাকার উন্নয়ন করবো। বাংলাদেশকে ভালবেসেই তিনি ফিলিপাইন ছেড়ে এদেশে এসেছেন।
ফিলিপাইনের বংশদ্ভূত নারী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী হয়ে আলোচনায় আসেন এই নারী। গ্রামে বের হলেই উৎসুক মানুষ তাকে দেখার জন্য আসছেন। তার মুখে ইংরেজিতে কথা শুনে অনেকেই আনন্দ পাচ্ছেন।
জিন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা জানান, আমার স্বামী জুলহাসকে আমি হৃদয় দিয়ে ভালোবাসি। তার জন্যই নিজের দেশ, বাবা-মাকে ছেড়ে বাংলাদেশে ছুটে আসা। জুলহাসের তার পরিবার ও গ্রামের মানুষের ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ হয়েছি।
ফুলবাড়িয়া উপজেলার ১১ নং রাধাকানাই ইউনিয়ন ১, ২, ৩ নং ওয়ার্ড মহিলা সংরক্ষিত আসন থেকে মেম্বার পদে মাইক প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ফিলিপাইনের জীন ক্যাটামিন প্রেট্রিয়াকা। বাংলা ভাষায় পারদর্শী এই নারী।
এলাকাবাসী জানায়, বাংলাদেশে এসে স্বামী, পরিবার ও আশপাশের মানুষকে আপন করে নিয়েছেন এই বিদেশিনী। ভোটারদের মন জয় করে নিয়েছেন তিনি। ভাঙা ভাঙা বাংলা ও বাংলা-ইংরেজি মিশেলে জিন তাঁর নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন। প্রচারের সময় তাঁর ইংরেজি কথাগুলো বাংলায় বুঝিয়ে দিতেন স্বামী জুলহাস। দবরদস্থার ভোটার আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘বিদেশি নারী হলেও তাঁর কথাবর্তায় আমাদের গ্রামের সবাই মুগ্ধ। গ্রামের মানুষের ভালোবাসায় নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন।’
সিঙ্গাপুরের প্রবাসজীবনে থাকার সময় ফিলিপাইনের নারী জিন ক্যাটামিন প্রেট্রিয়াকার সঙ্গে পরিচয় হয় ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার রাধাকানাই ইউনিয়নের দবরদস্থা গ্রামের বাসিন্দা জুলহাস মিয়ার। সেই থেকে তাঁদের প্রেম। পরে পরিণয়। জুলহাস ১৯৯৮ সালে সিঙ্গাপুরে যান। সেখানে জিন ক্যাটামিনের সঙ্গে একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন তিনি। দীর্ঘদিন পর দেশে চলে আসেন তিনি এবং জিন ক্যাটামিনও তাঁর দেশে চলে যান, কিন্তু মুঠোফোনে তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক চলতে থাকে। পরে জিন ক্যাটামিন তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে ২০১০ সালে ফিলিপাইন যান জুলহাস। সেখানেই তাঁদের বিয়ে হয়। পরে স্ত্রীকে নিয়ে দেশে আসেন জুলহাস। ধর্মান্তরিত হয়ে জিন ক্যাটামিন ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। জিন ক্যাটামিন প্রেট্রিয়াকা থেকে তাঁর নাম হয় জেসমিন আক্তার। এক পর্যায়ে জেসমিন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়ে যান। ১১ বছর তাঁদের দাম্পত্যজীবন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।