ফুটবলের জাদুকর লিওনেল মেসির আগমনকে ঘিরে ভারতের মহানগরী কলকাতা পরিণত হয়েছে এক উন্মাদনার শহরে। তিলোত্তমার ফুটবলপ্রেমীরা মেসিকে শুধু একজন মহান খেলোয়াড় হিসেবেই নয়, ফুটবলের ঈশ্বর হিসেবে মনে করেন। আর তাই তার ‘জি.ও.এ.টি ইন্ডিয়া ট্যুর’-এর প্রথম গন্তব্য হিসেবে কলকাতাকে বেছে নেওয়ার পর থেকেই শহরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে চরমে।
মেসি পৌঁছানোর দুই দিন আগেই কলকাতার অলিগলি জুড়ে শোভা পাচ্ছে তার বিশালাকৃতির কাটআউট, ব্যানার ও পোস্টার। উন্মাদনা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে মেসি যেখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যে কয় ঘণ্টা সময় কাটাবেন, সেই সময়টুকুতে শহরের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ আংশিকভাবে স্থবির বা অচল হয়ে পড়বে বলেই মনে করছেন অনেকে।
এটা কলকাতায় মেসির দ্বিতীয় সফর। এর আগে ২০১১ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলতে প্রথমবার কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। ফুটবলপ্রেমী এই শহর অতীতে কিংবদন্তিদের বরণ করার ঐতিহ্য বহন করে এসেছে। ১৯৭৭ সালে পেলে নিউইয়র্ক কসমসের হয়ে প্রদর্শনী ম্যাচে কলকাতাকে মাতিয়েছিলেন। দিয়েগো ম্যারাডোনা ২০০৮ এবং ২০১৭ সালে দুই দফা এ শহরে এসে দর্শকদের উন্মাদনার সাক্ষী হয়েছিলেন।
জার্মান কিংবদন্তি গোলরক্ষক অলিভার কানও ২০০৮ সালে কলকাতায় বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন। সেদিন সল্ট লেক স্টেডিয়ামে উপচে পড়া গ্যালারি তাকে করতালিতে সিক্ত করেছিল। একই সল্ট লেক স্টেডিয়ামেই এবার অনুষ্ঠিত হবে মেসিকে কেন্দ্র করে মূল অনুষ্ঠান, যেখানে থাকছে কনসার্ট এবং সেলিব্রিটি ম্যাচ। এ ম্যাচে অংশ নেবেন ভারতের ক্রিকেট কিংবদন্তি সৌরভ গাঙ্গুলি, ফুটবলার বাইচুং ভুটিয়া ও টেনিস তারকা লিয়েন্ডার পেজ।
২০২২ বিশ্বকাপ জয়ের পর ২০২৩ সালের জুলাইয়ে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ কলকাতা সফরে যে অভূতপূর্ব ভালোবাসা পেয়েছিলেন, তা এখনো স্মরণীয়। গত মাসেই জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লোথার ম্যাথিউসও কলকাতায় এসে একই রকম উচ্ছ্বাস ও শ্রদ্ধা অনুভব করেন।
শহরের ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার দেবজ্যোতি ধরও মেসিকে ‘ফুটবলের ঈশ্বর’ হিসেবেই দেখে আসছেন। প্রায় দুই দশক ধরে এই আর্জেন্টাইন তারকার ক্যারিয়ার অনুসরণ করে আসা দেবজ্যোতি শুধু এক নজর দেখার আশায় ১১,৮০০ রুপি খরচ করে টিকিট কিনেছেন। তাঁর কথায়, “আমরা সবাই তার জন্য পাগল। এত বছর ধরে অনুসরণ করার পর এবার গ্যালারির সেরা আসনে বসে তাকে দেখা আমার জন্য স্বপ্ন পূরণের মতো।”
সূত্র: গালফ নিউজ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



