জুমবাংলা ডেস্ক : মেহেরপুর জেলায় আম বাগানের গাছের নিছে বস্তায় আদা চাষ করছে চাষিরা। বর্তমান সরকারের উদ্যোগ একইঞ্চি জমিও অনাবদি থাকবে না। সরকারের সেই উদ্যোগকে সফল করতে আবাদি জমির পাশাপশি অনাবাদি, পতিত জমি, বসতবাড়ির অঙ্গিনায় মেহেরপুরের কৃষি বিভাগের উদ্যোগে আদাচাষ শুরু হয়েছে।
প্রাকৃতিক দূর্যোগ নেই ফলে মেহেরপুরের মাটিতে সব ধরণের ফসল ফলে। একই জমিতে বছরে চারটি পর্যন্ত ফসল ফলে। আদা পাহাড়ের চাষ হলেও মেহেরপুরে অনাবাদি জমিতে আদা চাষ মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের একটি সফলতা।
আদার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি প্রদর্শনীর মাধ্যমে আম বাগানে গাছের নিচে বস্তায় আদা চাষ করে সফলতা জেলার অনেককেই চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে।
সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের শফিউদ্দিন মাস্টারের ছেলে বোরহান উদ্দিন ও রাজনগর গ্রামের রেজাউল হকের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস তাদের নিজ নিজ আম বাগানের মাঝে বস্তায় আদা চাষ করেছেন। বস্তায় আদা চাষে কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এখন অনেকেই বস্তায় আদা চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। বস্তায় আদা চাষ ছড়িয়ে দিতে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আম বাগানীদেও সাথে ইতোমধ্যে কথাও বলেছেন। আগামীবছর আদাচাষ মেহেরপুরের অর্থনীতিতে গতি আনবে বলে বিশ্বাস করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
চলতি বছর কৃষি অফিসের পরামর্শে ‘ ‘মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি প্রদর্শনী’ প্রকল্পের আওতায় আমঝুপি ইউনিয়নে আমবাগানে আদাচাষ করেছেন আমঝুপি গ্রামের বোরহান হোসেন।
তিনি জানান, প্রতি বস্তা আদা চাষে (ছাই-মাটি-জৈবসার- কোকডাস্ট পাউডার- বীজ) সব মিলিয়ে ২২-২৫ টাকা খরচ পড়েছে । ইতোমধ্যে বস্তায় দুইকেজি ফলন এসেছে। আগামী জানুয়ারি মাসে আদা সংগ্রহকাল পর্যন্ত প্রতি বস্তায় ২ কেজি ৫’শ গ্রাম আদা উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন।আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত পাইকাররা বাড়ি থেকে আদা কিনতে অগ্রিম টাকা দিতে চাচ্ছেন। কিন্তু আমি এখন বিক্রি করতে চাই না। তাকে আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি অফিস থেকে সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছেন বলেও জানান।
আমঝুপি গ্রামের মিনারুল ইসলাম বলেন- বোরহান হোসেনের দেখে আমিও বাগানে আদা চাষ করব বলে ৫শ বস্তা প্রস্তুত করেছি। আগামী জানুয়ারি ফেব্রয়ারি মাসে আদা লাগাবেন।
সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামের আদা চাষি জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন- আমার বাড়ির উঠানে আমের গাছের জন্য কোন গাছ লাগাতে পারতাম না। কৃষি অফিসের পরামর্শে বৈশাখ জৈষ্ঠ্য মাসের দিকে ৭শ বস্তায় আধুনিক পদ্ধতিতে আদা রোপণ করি। এখন আদা তোলা যাবে। প্রতি বস্তায় দুই থেকে আড়ায় কেজি আদা হবে। আরও কিছুদিন পরে তুলব যাতে তিন কেজি আদা হয়। আদা চাষে বাড়তি কোন খরচ নেই। তেমন যত্নও নিতে হয়না।
উপজেলা কৃষি অফিসার আলমগীর হোসেন বলেন, মেহেরপুর জেরায় বাণিজ্যেক ভিত্তিতে ২০ হেক্টর জমিতে আদাচাষ হয়। আমঝুপি গ্রামে দুটি প্রদর্শণী প্লটে আদা চাষ করা হয়েছে। আদাচাষি বোরহান হোসেন ও জান্নাতুল ফেরদৌসকে দেখে অনেকই বস্তায় আদা চাষ করবেন বলে বস্তা প্রস্তুত করছেন। প্রতিটি পরিবার যদি দুটি বস্তায় আদা লাগায় তাহলে তার বছরের চাহিদা পূরণ সম্ভব। এ কৃষি কর্মকর্তা আশা করছেন আগামী দুই বছর পর মেহেরপুরকে আর আদা আমদানী করতে হবেনা। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত আদা জেলার চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখবে।
আদা ভেষজ ওষুধিগুণে ভরপুর এবং মসলা জাতীয় ফসল। আদিকাল থেকে মানুষ আদার বিভিন্ন ব্যবহার করে আসছে। মুখের রূচি বাড়াতে, বদহজম, সর্দি, কাশি আমাশয়, জন্ডিস ও পেটফাপায় আদার ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে আদার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে মসলায়। এর রাইজমের সুগন্ধি ও ঝাঁঝালো হওয়ায় খাবারের স্বাদকে বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।