আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তালেবান নেতা মোল্লাহ আবদুল গনি বরাদর হতে পারেন আফগানিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী, এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে অনেক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
জানা যায়, তালেবান সংগঠনটি তৈরি করার পেছনে তার বড়সড় ভূমিকা ছিল। তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মুহম্মদ ওমরের ডেপুটি ছিলেন বরাদর। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এবং সিআইএ কর্মকর্তারা পাকিস্তান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছিলেন।
২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর আমেরিকার হস্তক্ষেপে মুক্তি পেয়েছিলেন বরাদর। পুরো নাম অবশ্য মুল্লাহ আব্দুল গনি বরাদর ওরফে মোল্লাহ বরাদর অখুন্দ। এর আগে ১৯৮০ সালে সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধে লড়াই করেছিলেন মুল্লাহ। আফগান মুজাহিদীনের সক্রিয় সদস্য ছিলেন তিনি। পরে কম্যান্ডার ওমর এবং তিনি কান্দাহারে একটি মাদ্রাসা খোলেন। পরবর্তীতে আফগানিস্তানের পশ্চিমাংশে তালেবানদের সংগঠন তৈরি করেন মোল্লাহ।
তাকে নিয়ে কথিত আছে, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন বুশের নির্দেশে আফগানিস্তানে ঢোকে, সে সময় নিজের পুরনো বন্ধু ওমরকে মোটরবাইকে বসিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন মুল্লাহ। মার্কিন সেনার সঙ্গে লড়াইও করেছেন দীর্ঘকাল। কিছু সংবাদমাধ্যমের দাবি ছিল, একসময় প্রাক্তন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন মুল্লাহ।
এদিকে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির দেশত্যাগ ও রাজধানী কাবুল অধিকার করে নেওয়ার পর আফগানিস্তানে চলমান যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে তালেবান।
তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ নায়েম আল-জাজিরাকে জানান, তারা অতিদ্রুত আফগানিস্তানের নতুন সরকার সম্পর্কে সবকিছু পরিষ্কার করে জানাবে।
মোহাম্মদ নায়েম বলেন, আল্লাহকে ধন্যবাদ, দেশে যুদ্ধের অবসান ঘটেছে। আমরা সবার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক চাই।
তিনি বলেন, আমরা যেখানে পৌঁছাতে চেয়েছিলাম সেখানে পৌঁছেছি। আমরা মানুষের জন্য স্বাধীনতা এনেছি। আমরা কারো ক্ষতি করতে চাই না এবং অন্য কাউকে আমাদের ভূমি ব্যবহার করে কারো ক্ষতি করতে দিতে চাই না।
এর আগে রোববার (১৫ আগস্ট) বিকেলে কাতারের দোহায় অবস্থানরত তালেবান মুখপাত্র সুহায়েল শাহীন বলেন, ‘আফগানিস্তানে যারা এর আগে আগ্রাসীদের জন্য কাজ করেছে, সাহায্য করেছে বা এখন যারা দুর্নীতিবাজ কাবুল প্রশাসনের বিভিন্ন পদে আসীন রয়েছেন তাদের সবার জন্য ইসলামিক আমিরাত দরজা খোলা রেখেছে এবং ক্ষমা ঘোষণা করেছে। আমরা আরেকবার তাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, যেন তারা দেশ ও জাতির জন্য কাজ করতে এগিয়ে আসেন।’
এর আগে আফগানিস্তানের প্রদেশগুলো তালেবানদের দখলে চলে যাওয়ার পরই সবাইকে হুমকির মুখে রেখে দেশত্যাগ করেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। এরপর তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, রক্তপাত এড়াতে তিনি দেশ ছেড়েছেন তার হাতে আর কোনো বিকল্প ছিল না।
আফগান শান্তি প্রক্রিয়ার অন্যতম আলোচক হাই কাউন্সিল ফর ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশনের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ আশরাফ গনিকে আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে উল্লেখ করে নিজের ফেসবুক পেজে এক ভিডিও পোস্টে বলেছেন, আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট দেশ ত্যাগ করেছে। তিনি জাতিকে হুমকির মুখে ফেলে গেছে। এখন আল্লাহর কাছে তাকে জবাবদিহি করতে হবে। পুরো জাতিই তার বিচার করবে।
আশরাফ গনির মন্ত্রিসভার ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেনারেল বিসমিল্লাহ মোহাম্মদী বলেছেন, এ অবস্থায় আমাদের পিছে হাত বেঁধে দেশটা বিক্রি করে দিয়ে চলে গেল গনির ও তাদের দলের লোক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



