জুমবাংলা ডেস্ক : রাতে প্রেমিকার সঙ্গে ফোনে কথা বলায় তুষার হোসেন জনি (২০) নামের এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রেমিকার বাবাসহ তার পরিবারের সদস্যরা।
এ ঘটনায় মেয়েটির মা আসমা খাতুন, দাদা রিয়াজউদ্দীন ও চাচা ইউপি সদস্য আব্দুল জলিলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে পলাতক রয়েছেন মেয়েটির বাবা কামরুল ইসলাম, চাচা ওহিদুজ্জামান পিন্টুসহ অন্যরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে গুরুতর আহত তুষার হোসেন জনির মৃত্যু হয়।
এর আগে গত বুধবার রাতে কলারোয়া উপজেলার যুগিখালী ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে প্রেমিকার বাড়িতে ডেকে নিয়ে তুষার হোসেন জনিকে বেধড়ক মারপিট করা হয়।
নিহত তুষার হোসেন জনি উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের শেখ বজলুর রহমানের ছেলে। তিনি ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ছাত্র।
স্থানীয়রা জানান, পাইকপাড়া গ্রামের কামরুল ইসলামের দশম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের (১৬) সঙ্গে একই গ্রামের বজলু রহমান শেখের ছেলে তুষার হোসেন জনির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্র ধরে বুধবার রাতে মেয়েটির সঙ্গে তুষার মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। এ সময় মেয়েটির বাবা কামরুল ইসলাম পাশের ঘর থেকে বিষয়টি বুঝতে পেরে তার মেয়েকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলে প্রথমে সে প্রেমের বিষয়টি অস্বীকার করে। বাবার কঠোর চাপে একপর্যায়ে মেয়েটি বলে, তুষার তাকে প্রায়ই মোবাইলে বিরক্ত করে।
মেয়েটির বাবা বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যদের জানান এবং সবার সিদ্ধান্তক্রমে গভীর রাতে ওই মেয়েকে দিয়ে তুষার হোসেন জনিকে তাদের বাড়িতে ডেকে এনে আনেন। পরে মেয়ের বাবা কামরুল, চাচা ওয়াহিদুজ্জামান পিন্টুসহ পরিবারের সদস্যরা তুষারকে বেধড়ক মারপিট করেন। তারা তুষারের হাত-পা ভাঙাসহ মাথা থেতলে দিয়ে গুরুতর জখম করেন।
এ ঘটনা তুষারের অভিভাবকরা জানতে পেরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কলারোয়া হাসপাতালে ও পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। গতকাল দুপুরের পর অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে খুলনায় নিয়ে যাওয়ার পথে তুষারের মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে জানতে মেয়েটির বাবা কামরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তুষারের মরদেহের ময়নাতদন্ত করার পর আজ শুক্রবার বিকেলে কলারোয়া নিজবাড়ী যুগিখালী ইউনিয়নে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর-উল-গীয়াস জানান, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই তুষারের বাবা শেখ বজলুর রহমান বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে কলারোয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
ওসি বলেন, ‘তুষার হত্যা মামলায় এক ইউপি সদস্যসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।