আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফকে দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে ইমরান খানের সরকার। ওই রায়ের বিরুদ্ধে পারভেজ মোশাররফর আপিল করলে সরকার তার পক্ষ নেবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল আনোয়ার মনসুর।
গতকাল মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ আদালতের একটি বেঞ্চ সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। এর পরপরই জরুরি বৈঠক ডেকে বিবৃতি দেয় পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী।
সামরিক বাহিনী জানায়, বিশেষ আদালতের রায়ে সংবিধান এবং আত্মরক্ষার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। সামরিক বাহিনী, পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করে বলেও এক বিবৃতিতে জানানো হয়।
পাকিস্তান আইএসপিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর বলেন, ‘সেনা প্রধান, জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান, প্রেসিডেন্টের দায়িত্বসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ পদে ৪০ বছর দেশের সেবা করেছেন পারভেজ মোশাররফ। দেশ রক্ষায় সংগ্রামী একজন মানুষ, নিশ্চিতভাবে কখনোই বিশ্বাসঘাতক হতে পারেন না। আদালতের রায়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী ব্যথিত এবং উদ্বিগ্ন।’
সামরিক বাহিনীর পর আজ বুধবার মোশাররফরে পাশে থাকার ঘোষণা দিলো দেশটির সরকার।
গতকাল রায় হওয়ার পর মধ্যরাতে পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেল আনোয়ার মনসুর ও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিশেষ তথ্য সহকারী ডা. ফিরদৌস আশিক আওয়ান এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। সেখানে অ্যাটর্নি জেনারেল আনোয়ার মনসুর বলেন, আমি এ মামলায় আইনের পক্ষে লড়াই করবো, কোনো ব্যক্তির জন্য নয়।
তিনি আরও বলেন, বিশেষ আদালতের এই মামলায় সাবেক প্রেসিডেন্ট মোশাররফকে সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার অধিকার দেয়া হয়নি। তারপর তার অনুপস্থিতিতে অভিযুক্তের কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি না নিয়েই রায় ঘোষণা করা হয়েছে। মোশাররফ যখন দেশের বাইরে আইসিইউতে ভর্তি তখন তাড়াহুড়ো করে রায়ের বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ইমরান খান সরকারের প্রধান এই কৌঁসুলি বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে কাউকে শাস্তি প্রদান নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠার সুযোগ নেই। কিন্তু এ মামলায় সংবিধানের অধীনে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হয়নি। একটি বিচার প্রক্রিয়া শুধু সুষ্ঠু হওয়াই উচিত নয় একই সঙ্গে তা যে সুষ্ঠু হচ্ছে এটা দৃশ্যমান হওয়াও উচিত।
১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন পারভেজ মোশাররফর। ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। ২০০৭ সালের ৩ নভেম্বর দেশটির সংবিধান বাতিল করে জরুরি অবস্থা জারি করেন। তারপর বিক্ষোভ শুরু হলে অভিশংসনের ঝুঁকি এড়াতে ২০০৮ সালে পদত্যাগ করেন। সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারি করার অপরাধেই তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।


