জুমবাংলা ডেস্ক : বিনা অপরাধে জেলে কেটেছে ১৬টি বছর। হারিয়েছেন অনেক কিছু। শিশু সন্তানদের মানুষ করতে স্ত্রীকে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়েছে। দীর্ঘ ১৬ বছর পরে জামিনে মুক্ত হয়ে ঝালকাঠিতে এসেছেন বিডিআর সিপাহী মো. মোস্তফা কামাল। দীর্ঘদিন পরে তাকে পেয়ে আবেগাপ্লুত পরিবারের সদস্যরা। আনন্দের বন্যা বইছে পরিবারে। তার মধ্যেও রয়েছে জীবন থেকে চলে যাওয়া ১৬টি বছরের কষ্ট।
১৯৯২ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে ছাত্র অবস্থায় বিডিআরের সিপাহী পদে যোগদান করেন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার নাঙ্গগুলী গ্রামের মোস্তফা কামাল। এর পরের বছর মিসেস শাহানা পারভীন এর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের কোল জুড়ে আসে দুইটি কন্যা সন্তান। ২০০৯ সালে ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহ এর এক মাস আগে সবশেষ পরিবারের কাছে এসে সময় কাটান মা ও বাবা হারানো মোস্তফা কামাল। তখন শিশু কন্যা ফারজানা আক্তার মিলা সপ্তম শ্রেণি ও সানজিনা আক্তার নার্সারিতে লেখা পড়া করত। এদের নিয়ে দারিদ্র্যতার সঙ্গে সংগ্রাম করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন শাহানা পারভীন। স্বামী কারাগারে থাকা কালে আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতায় দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন তিনি। এ সময় উপর্যনের সব টুকুই হারিয়ে নিস্ব হয়েছেন।
বর্তমানে ঝালকাঠি শহরের ভিআইপি সড়কে এক আত্মীয়ের বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন তারা।
মো. মোস্তফা কামাল বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের সময় পিলখানায় ছিলেন তবে এ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না তিনি। ঘটনার পর এক আত্মীয়ের বাসায় কয়েকদিন থেকেছেন। পরে ওই বছর ১ মার্চ কর্মস্থলে যোগদান করেন। এর পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মালিবাগে সিআইডি অফিসে নেওয়া হয়। ২০০৯ সালে হত্যা ও ২০১০ সালে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় আসামি করা হয় মোস্তফা কামালকে। পাঁচ দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ২১ মার্চ পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
পরে ২০১৮ সালে কাশিমপুর ২নং কারাগারে নেওয়া হয়। এর আগে, ২০১৩ সালে হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় জেল হাজতে থাকতে হয়েছে তাকে। এর মধ্যেই চাকরিচ্যুত করা হয় বিডিআর জোয়ান মোস্তফাকে। কারাগারে কষ্টে জীবন কেটেছে তার।
বিনা অপরাধে জেল খেটে জীবনের ১৬টি বছর হারিয়ে গেছে। তবে কি অপরাধে জেল খেটেছেন তাই জানেন না মো. মোস্তফা কামাল। পুনরায় চাকরি ফিরে পাওয়াসহ ক্ষতি পূরণের দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে তিনি। বিনা অপরাধে জেল খাটা মোস্তফা কামাল চাকরি ফিরে পাওয়া ও ক্ষতি পূরণ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি পরিবারের।
সূত্র : আরটিভি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।