প্রত্যেক মুসলমান কাবার স্বপ্ন হৃদয়ে লালন করলেও তা বাস্তবায়নের ক্ষমতা সকলের হয় না। কেউ হজের টাকা জোগার করতে না পেরে সেই স্বপ্ন তোলে দেন আল্লাহ তাআলার হাতে। আবার কেউ কেউ পরম প্রভুর ঘর জিয়ারতের জন্য জীবনের সবচেয়ে মহান কোরবানি দিতেও তৈরি হয়ে যান।
তারা সারা জীবন অল্প অল্প করে জমাতে থাকেন অর্থ-কড়ি। ইন্দোনেশিয়ান এই বিধবা মহিলা তেমনি একটি অনুপ্রেরণা। ৬৪ বছর বয়স্ক ইন্দোনেশিয়ান বৃদ্ধা মারইয়ানি ২৬ বছর ধরে হজের জন্য টাকা জমান। এই টাকা তিনি জোগার করেন পুরাতন জিনিসপত্র কুঁড়ানোর পর তা বিক্রি করে।
জীবনের ২৬ টি বসন্ত তিনি পার করে দিয়েছেন তার স্বপ্ন বিনির্মাণে। আল্লাহ তাআলা তার হৃদয়ের আকুতি শুনেছেন। মারইয়ানির স্বপ্ন সত্যি হয়ে ধরা দিয়েছে অবশেষে। হজের ভিসা পাওয়ার পর মারইয়ানি আনাদোলো এজেন্সিকে জানান, তার আজীবনের স্বপ্ন ছিলো একবার হজ করার, তাওয়াফ করার, হজরে আসওয়াদ চুমু খাওয়ার।
১৯৮০ সালে তার স্বামী মারা গেলে তার এই আখাঙ্খা আরও তীব্র হয়। চার সন্তান নিয়ে তিনি খুব একাকী হয়ে পড়েন তখন। জীবিকার তালাশে শেষমেশ হাইওয়ে-বিশ্বরোড থেকে রিসাইকেলেবল জিনিসপত্র যেমন, কার্ডবোর্ড, প্লাস্টিকের বোতল, ক্যান এবং কাপ ইত্যাদি কুঁড়িয়ে রিসাইকেল করা কোম্পানির কাছে বিক্রি করা শুরু করেন।
মারইয়ানি বলেন, তিনি প্রতিদিন শেষ রাত থেকে ফজর পর্যন্ত বৃষ্টি-বাদল উপেক্ষা করে এসব কুঁড়াতেন। ১৯ বছর পর। ২০১২ সালে তিনি ২৫ মিলিয়ন রুপিয়া সঞ্চয়ে সক্ষম হন। ইন্দোনেশিয়ায় তখন হজ করতে হলে প্রাথমিক পর্যায়ে পঁচিশ মিলিয়ন জমা করতে হতো।
এরপর তিনি আরও ১০ মিলিয়ন জমা করেন। ইতোমধ্যে তার সন্তানেরা তাকে সাহায্য করতে সক্ষম হয়ে গেলেও তিনি তাদেরকে তার পরিকল্পনা জানাননি। তিনি নিজ খরচায় হজব্রত পালন করতে চেয়েছেন। ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে অনুমেদ পত্র পাওয়ার পর তার অভিবক্তি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২৬ বছর খুব কম সময় নয়।
আমি আমার অিস্তিত্বের সবটা দিয়ে দিয়েছি এই স্বপ্ন পূরণের জন্য চেষ্টা করেছি এবং একবারের জন্যেও হাল ছাড়িনি। এই স্বপ্ন বাস্তব হতে কত দিন লাগবে আমি জানতাম না। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো আল্লাহ তাআলা আমার এই স্বপ্ন পূরণ করবেন।
জিতেছে আমাদের ভালোবাসা, হেরেছে ওদের হিংসা আর ষড়যন্ত্র: কুমিল্লায় আজহারী
শত বাঁধা দিয়েও ঠেকাতে পারলোনা কুমিল্লার মাহফিল। গাছের উপর উঠে ওয়াজ শুনলো জনতা মিজানুর রহমান আজহারী তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে লিখেছেন, “আলহামদুলিল্লাহ.. অবশেষে মহান আল্লাহ তায়ালা কুমিল্লার মাটিতেও কথা বলার সুযোগ করে দিলেন।
জিতেছে আমাদের ভালোবাসা, হেরেছে ওদের হিংসা আর ষড়যন্ত্র। ওয়া লিল্লাহিল হামদ।” উল্লেখ্য কুমিল্লাতে মিজানুর রহমান আজহারী তাফসির মাহফিল এর আগে কিছু মানুষের বিরোধীতার কারণে হতে পারেনি বর্তমান সময়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই বক্তা সারা দেশে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছেন।
দেশের যে প্রান্তেই যাচ্ছেন কুরআনের তাফসিরের মানুষের ঢল নামছে। আর তা দিনের বেলায় হোক কি রাতে হোক। এসব তাফসির মাহফিলে তরুণদের উপস্থিতি চোখের পড়ার মতো।
মিজানুর রহমান আজহারীর জীবনী
মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী জন্মগ্রহণ করেন কুমিল্লায়।তিনি ২০০৪ সালে দাখিল পরিক্ষায় জিপিএ ৫.০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ২০০৬ সালে আলিম পরিক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ ৫.০০ পেয়ে বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের টপ লিষ্টে জায়গা করে নেন।২০০৭ সালে ইসলামি ফাউন্ডেশন কর্তিক আয়োজিত মিশর সরকারি বৃত্তি পরিক্ষায় হাজার হাজার ছাত্রদের মধ্যে মিজানুর রহমান আজহারী প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং তখন তিনি মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডারগ্রাজ্যুয়েট করার জন্য মিশরের গমন করেন।
সেখান থেকে তিনি ডিপার্টমেন্ট অফ তাফসির ও কোরআনিক সাইন্স হতে ২০১২ সালে ৮০% সিজিপিএ নিয়ে অনার্সে উত্তীর্ণ হয়।মিশরে পাঁচ বছর শিক্ষা জীবন অতিবাহিত করার পর তিনি গার্ডেন অফ নলেজ খ্যাত মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পোস্ট গ্রাজুয়েশন, এমফিল এবং পিএইচডি করার সিদ্ধান্ত নেন।২০১৩ সালে তিনি মালয়েশিয়াতে শিক্ষার উদ্দেশ্যে গমন করেন।
উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপার্টমেন্ট অফ কোরআন স্টাডি থেকে তিনি ২০১৬ সালের মধ্যে পোস্ট গ্রাজুয়েশন এবং এমফিল শেষ করেন। মাস্টার্সে মিজানুর রহমান আজহারীর ৪ এর মধ্যে সিজিপিএ ছিল ৩.৮২, তার পরে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ক্যান্ডিডেট হিসেবে মনোনিত হয়। মিজানুর রহমান আজহারী বর্তমানে পিএইচডি নিয়ে গবেষণা করছেন।
উল্লেখ্য যে, মিজানুর রহমান আজহারীর এমফিল এবং পিএইচডি গবেষণার মাধ্যম ছিল ইংরেজী। এত কিছুর মধ্যে একটা বিষয় ক্লিয়ার যে, তিনি অত্যন্ত পরিশ্রমিক এবং মেধাবী ছাত্র ছিলেন, যার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে এত ভাল রেজাল্ট করেছেন।বাংলাদেশের মত প্রশ্ন ফাঁস এবং জালিয়াতি বিশ্বের অন্য কোথাও হয় না, এসব কেবল বাংলাদেশে সম্ভব।
অন্যদিকে, মিজানুর রহমান আজহারী ILTS পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করে আউট অব নাইনের (৯) মধ্যে তিনি ৭/৫ ব্যান্ড স্কোর করেন এবং স্পিকিং সেকশনেও তিনি ৭.৫ ব্যান্ড স্কোর অর্জন করতে সক্ষম হন। এমন উচ্চ শিক্ষিত হয়ে তিনি বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেছেন।
দিনে দিনে ইসলামকে তরুণ প্রজন্মের কাছে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করছেন এই মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী।আর তাকে নিয়েই তামাশা করছেন কিছু মূর্খ্য,লেবাসধারী কাঠমোল্লা, দেশের কিছু হুজুরের রূপধারী ভন্ড,মাজার পূজারী এবং দালাল চক্রের লোকেরা । তারা প্রিয় মিজানুর রহমান আজহারীকে নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।তবে তাতে খুব বেশি একটা লাভ হচ্ছে না তাদের। এই দেশের শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম যুব সমাজ ঠিকই মিজানুর রহমান আজহারীর মূল্যয়ন করছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।