আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে মৃতপ্রায় যমুনা নদীতে এ বার লাশের মিছিল। একটা নয়, দু’টো নয়, এক দিনে প্রায় এক ডজন লাশ ভাসতে দেখা গেল নদীর বুকে। রাজ্যে করোনার প্রকোপ হালকা করে দেখানো হচ্ছে বলে যখন অভিযোগে বিদ্ধ যোগী আদিত্যনাথ, ঠিক সেই সময় এমন শিউরে ওঠার মতো দৃশ্য সামনে এল।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, করোনায় কার্যত মড়ক লেগেছে যমুনার আশেপাশের গ্রামগুলিতে। কিন্তু অনেক পরিবারেরই সৎকারের সামর্থ্য নেই। তাই পরিজনদের মৃতদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে। হামীরপুর জেলায় যমুনা নদীর উপর কানপুর-সাগর মার্গ সংযোগকারী একটি সেতুর উপর থেকে গত বৃহস্পতিবার ওই দৃশ্য চোখে পড়ে। দেখা যায়, যমুনায় বেশ কিছু লাশ ভেসে যাচ্ছে। নদীর কিনারায় আটকে গিয়েছে দু’-একটি লাশ। সেখানে ভিড় করেছে কাকের দল। চড়ে বেড়াচ্ছে গরু-মহিষও। মৃতদেহ পাশ কাটিয়েই নদীর পানি থেকে তেষ্টা মেটাচ্ছে তারা।
বিষয়টি নজরে পড়তেই সেতুর উপর যান চলাচল কার্যত থমকে যায়। রেলিংয়ের উপর থেকে ঝুঁকে পড়েন পথচলতি মানুষ। খবর দেয়া হয় পুলিশকেও। ট্র্যাক্টর নিয়ে গিয়ে নদীর তীর থেকে দু’টি লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গিয়ে সৎকার করে তারা। ওই দু’টি শবের মধ্যে একটি আধপোড়া দেহ ছিল বলে জানা গিয়েছে। গোটা ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। একসঙ্গে এত লাশ কোথা থেকে এল, করোনায় আক্রান্ত হয়ে সকলের মৃত্যু হয়েছে কি না, এমন হাজারো প্রশ্ন উঠছে। শুধু তাই নয়, করোনা রোগীদের মৃতদেহই যদি ভাসিয়ে দেয়া হয়, সে ক্ষেত্রে নদীর পানি কতটা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছন অনেকে।
কানপুর এবং হামীরপুরের জেলার সীমানা নির্ধারণ করে যমুনা। তবে স্থানীয়দের কাছে সেটি মোক্ষদায়িনী কালিন্দী নামে পরিচিত। মৃত্যুর পর লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার প্রথা যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে সেখানে। স্থানীয়রা একে ‘জলপ্রবাহ’ বলেন। তবে এত দিন একটা দু’টো লাশ চোখে পড়লেও, এ ভাবে একসঙ্গে একডজন লাশ কখনও দেখা যায়নি। তাই মৃতদেহগুলি করোনা রোগীদেরই বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।
এ নিয়ে পুলিশের তরফে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তবে করোনার প্রকোপে যে হারে মৃত্যু বেড়ে চলেছে রাজ্যে, তাতে স্থানীয়দের অভিযোগ উড়িয়ে দেননি হামীরপুরের এসপি অনুপকুমার সিংহ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মৃতদের শনাক্তকরণের কাজ চলছে। সূত্র: এবিপি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।