জুমবাংলা ডেস্ক : বিভিন্ন জনকে ফাঁদে ফেলে টাকা ও মালামাল হাতিয়ে নেওয়া সেই দুই বোন রাবেয়া বশরী ওরফে মায়শা ওরফে সাথী ও ফাতেমাতুস জোহরা ওরফে ইরানী ওরফে মিম ফের বেপোরোয়া হয়ে উঠেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সাথে ছবি তুলে নানা অপকর্ম করে তারা ভাইরাল হয়েছিলেন।
শুধু তাই না, কুইন্স হাসপাতালে মাকে চিকিৎসার নামে ভর্তি করে প্রায় দুই মাস কেবিন আটকে রাখার অভিযোগও ছিল তাদের বিরুদ্ধে। এক পর্যায় প্রায় দুই লাখ টাকা বকেয়া রেখে কুইন্স হাসপাতাল থেকে বের হলেও সেই টাকাও তারা দেননি। এছাড়া ইরানীর সাবেক স্বামীরও দশ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এর বাইরেও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ।
অভিযোগ উঠেছে ওই দুই বোনসহ তার খালু পাল্টা হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে ওই দুই বোনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যশোর শহরের বকচর মসজিদ পাড়ার ওই দুই বোন নিজেদেরকে বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে সচিবালয়ে চাকরি দেওয়ার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। ছেলেদেরকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্লাক মেইলিংসহ কৌশলে টাকা হাতানোর অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন যশোর বড়বাজার এলাকার বাসিন্দা জিয়াউর রহমান জিকো। জিকোর দাবি, তিনি ওই দুই বোনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে একাধিকবার থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী পরিচয় দিয়ে সাথী ও তার বোন পার পেয়েছেন। পুলিশ উল্টো তাকে আটক করে জেলে পাঠিয়েছে।
জিকো জানান, ফাতেমাতুস জোহরা ওরফে ইরানী ওরফে মিমকে (২৮) ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট তিনি বিয়ে করেন। পরিবার বিয়ে মেনে না নেওয়ায় তারা লোন অফিস পাড়ার খাজা সিটিতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। এরমাঝে মায়ের চিকিৎসার কথা বলে তার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ধার নেন ইরানী। এর বাইরেও ইরানী ও তার বোন জিকোর ভাড়া বাড়িতে গিয়ে এসি, ফ্রিজ, ওভেন, সোফাসেটসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করেন। এসময় ওয়ারড্রপে থাকা পাঁচ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে যান তারা। এরমাঝে জানতে পারেন পরকিয়া সম্পর্কে লিপ্ত ইরানী। যার সহযোগিতা করতেন তার বড় বোন সাথী।
জিকো এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দুই বোন তাকে জিম্মি করে ফেলেন। তাদের সাথে যুক্ত হন তাদের খালু রফিক ও খালাতো ভাই রায়হান। এক পর্যায়ে জিকোর বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দিয়ে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
জিকো আরও অভিযোগ করেন, ৫ আগস্টের পর ওই দুই বোন আত্মগোপনে চলে যান। সম্প্রতি তারা ফের প্রকাশ্যে এসে বিভিন্ন মাধ্যমে তাকে ও তার পরিবারকে হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন। খালু রফিক ও রায়হান ফের বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
কুইন্স হসপিটালের এডমিন আইটি হাসান ইমাম শিমুল জানান, মাহমুদা খাতুন সামান্য ফোঁড়ার অপারেশনের জন্য কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। অপারেশনের তিন দিনের মধ্যে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যান। কিন্তুদুই মেয়ে মাকে বাড়িতে না নিয়ে হাসপাতালেই রেখে দেন। কোনোভাবেই তারা ছাড়পত্র নিতে রাজি হননি। ক্ষমতা দেখিয়ে ৭০৩ নম্বর কেবিনে তারা বসবাস শুরু করেন। এক পর্যায়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলে তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইনের মধ্যস্ততায় গত জুলাইতে তাদেরকে হাসপাতাল ত্যাগ করানো হয়। এসময় হাসপাতালের বিল বাবদ প্রায় দুই লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। পুলিশ দায়িত্ব নিয়েছিল ওই টাকার। তাদের বাড়িতে যেয়েও টাকা চাওয়া হয়। এর মাঝে আগস্টের গণঅভুথ্যানের পর তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি ওই টাকা ফেরতের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।