জুমবাংলা ডেস্ক: পুলিশে কোনভাবেই দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘যারা দুর্নীতি করে বড়লোক হতে চায়, তাদের জন্য পুলিশের চাকরি নয়।’
আজ রবিবার সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) কর্মরত কনস্টেবল, নায়েক ও এএসআইদের সাথে মতবিনিময় সভায় আইজিপি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, করোনাকালে মানবিকতা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে পুলিশ যেভাবে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদের প্রতি সেবার হাত বাড়িয়েছে, যেভাবে সহযোগিতা দিয়েছে, তা দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। মানুষও অকুণ্ঠচিত্তে এর প্রতিদান দিয়েছে। মানুষ তাদের মনের মণিকোঠায় পুলিশকে স্থান দিয়েছে। জনগণের প্রতি পুলিশের এ ধরনের মানবিক আচরণ ও সেবা অব্যাহত রাখতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্য আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুকূল্যে গত ১০ বছরে বাংলাদেশ পুলিশ অনেক দূর এগিয়েছে। আমাদের যেতে হবে আরও বহুদূর।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, পুলিশ সড়ক-মহাসড়কে, শিল্প কারখানায় নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হয়েছে। বিদেশীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে, ব্যবসা করছে, দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে বাংলাদেশ পুলিশের সবচেয়ে বড় ইউনিট ও ‘ফেস অব পুলিশ’ আখ্যায়িত করে আইজিপি বলেন, ডিএমপিতে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের কর্মদক্ষতা ও আচরণের ওপর পুলিশের ভাবমূর্তি অনেকাংশে নির্ভর করে।
আইজিপি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, পুলিশের কোন সদস্য ড্রাগ গ্রহণ করবে না, ড্রাগের ব্যবসা করবে না, ড্রাগ ব্যবসায়ীদের সাথে সম্পর্ক রাখবে না।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স পুর্নব্যক্ত করে আইজিপি বলেন, পুলিশে কোনভাবেই দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না। যারা দুর্নীতি করে বড় লোক হতে চায়, তাদের জন্য পুলিশের চাকরি নয়।
সেবাপ্রার্থী বা জনগণকে কোনো প্রকার হয়রানি বা নির্যাতন করা যাবে না। মানুষকে ভালবেসে হাসিমুখে সেবা দিতে হবে। আমরা জনগণের কাছে যেতে চাই। সারাদেশকে ৬ হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে বিট পুলিশিং চালু করা হয়েছে। এতে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে এবং সংশ্লিষ্ট বিটের আইন-শৃঙ্খলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
ড. আহমেদ বলেন, পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা বেড়েছে, পাশাপাশি তাদের প্রত্যাশাও অনেক। জনগণের সাথে ভাল আচরণ করতে হবে, মানবিক আচরণ করতে হবে। পাশাপাশি দৃঢ়তার সাথে আইন প্রয়োগ করতে হবে। পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চিকিৎসাক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালকে বিশেষায়িত হাসপাতালে পরিণত করা হচ্ছে। ঢাকায় আরেকটি পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালগুলো আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।
পুলিশ সদস্যদের সন্তানদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে ৮টি বিভাগীয় সদর দপ্তরে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ প্রধান। তিনি বলেন, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলা এবং ইংরেজি উভয় মাধ্যমে পড়াশোনার ব্যবস্থা থাকবে।
আইজিপি বলেন, দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করা একটি বিরল সুযোগ ও সম্মানের বিষয়। জনগণের জন্য আমরা যত বেশি কাজ করবো, তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক তত বেশি সুসংহত হবে। শৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে পুলিশে শৃঙ্খলার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। কল্যাণের সাথে শৃঙ্খলাকে মিশানো যাবে না। বক্তব্যে আইজিপি তার পাঁচটি মূল লক্ষ্যকে বিষদভাবে তুলে ধরে এ লক্ষ্য অর্জনে সকলকে নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে নির্দেশ দেন।
ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় অতিরিক্ত আইজি ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, এসবি প্রধান মীর শহীদুল ইসলাম, সিআইডি প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।