জুমবাংলা ডেস্ক: খ্রিস্টান ধর্মের অন্যতম সংস্কারক জন কেলভিন। তার কাজের প্রভাব আধুনিক পৃথিবী গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। তিনি ছিলেন খ্রিস্টান ধর্মতত্ত্ব ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রধান ব্যক্তি। তার ব্যবস্থাকে কেলভিনিজম বলে অবহিত করা হয়। মূলত মানবতাবাদী আইনজীবী হিসাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কেলভিন ১৫৩০-এর কাছাকাছি সময়ে রোমান ক্যাথলিক চার্চ থেকে কপর্দকশূন্য হয়েছিলেন।
ধর্মীয় উত্তেজনা একটি সহিংস বিপ্লবরুপে ফ্রান্সের প্রটেস্টান্টদের উপর আছড়ে পরার পর, কেলভিন সুইজারল্যান্ডের বাজেলে পালিয়ে যান এবং সেখানে তিনি ১৫৩৬ সালে ধর্মের পরবর্তী বিকাশের জন্য খ্রিস্টান ধর্ম ইনস্টিটিউটের প্রথম সংস্করণ প্রকাশ করেন।
একই বছর জেনেভায় গির্জা সংস্কারের কাজে সাহায্যের জন্য কেলভিন, উইলিয়াম ফ্যারেল দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হন। সিটি কাউন্সিল দ্বারা ফ্যারেল ও কেলভিন দুজনের ধারনাই বাস্তবায়নে বাধাপ্রাপ্ত হয় ও তাদের দুজনকেই বহিষ্কার করা হয়। মার্টিন বোচারের আমন্ত্রনে, কেলভিন স্ট্রাসবুর্গে তার সংস্কার চালিয়ে যান ও তিনি ফরাসি উদ্বাস্তুদের একটি গির্জার মন্ত্রী হন। তিনি জেনেভা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থন অব্যাহত রাখেন এবং শেষ পর্যন্ত তার গির্জার নেতৃত্ব ফিরিয়ে নেয়ার জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
জেনেভায় ফেরার পর, কেলভিন গির্জা সরকার ব্যবস্থা ও গণ-প্রার্থনা সংক্রান্ত নতুন ধরন চালু করেন। যদিও শহরের কিছু প্রভাবশালী পরিবার তার কর্তৃপক্ষকে নিয়ন্ত্রন করতে এর বিরোধিতা করেছিল। এই সময়ের মধ্যে তার মতবিরোধী হিসেবে পরিচিত মাইকেল সার্ভেটাস নামে স্পেনের এক লোক জেনেভো পৌঁছে। কেভিন তার প্রতি নিন্দা জানায় ও সিটি কাউন্সিল সার্ভেটাসের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে। সহায়ক উদ্বাস্তুদের একটি অন্তঃপ্রবাহ অনুসরণে ও সিটি কাউন্সিলের নতুন নির্বাচনে কেলভিনের বিরোধিদের বের করে দেওয়া হয়। কেলভিন তার শেষ জীবন জেনেভা তথা সাড়া ইউরোপজুড়ে সংস্কারের কথা প্রচার করে অতিবাহিত করেছেন।
খ্রিষ্টান রক্ষণশীল পরিবারে বেড়ে উঠেছিলেন জন কেলভিন। তিনি ছিলেন একজন অক্লান্ত বিবাদমান ও কৈফতমূলক লেখক যিনি অসংখ্য বিতর্ক তৈরি করেছেন। মূলত মানবতাবাদের দিকে মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে চেয়েছিলেন। তিনি ফিলিপ ম্যালান চ্যাথন ও হেইনরিচ বুলিঞ্জারসহ আরো অনেক সংস্কারকের সাথে আন্তরিক ও সহায়ক পত্র বিনিময় করতেন। ইনস্টিটিউট ছাড়াও, তিনি বাইবেলের অধিকাংশ বই, সেই সঙ্গে পারমার্থিক চুক্তি এবং কনফেশনাল বইয়ের নথি সম্পর্কে নেভিগেশন মন্তব্য লিখেছিলেন। তিনি নিয়মিতিভাবে বা সপ্তাহ জুড়ে গির্জার বেদীতে বসে ধর্মপ্রচারের জন্য ভাষণ দিতেন। কেলভিন অগাস্টিনিয়ান ঐতিহ্য দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।
কেলভিনের লেখা ও হিতোপদেশ ধর্মতত্ত্বের শাখার জন্য যে বীজ বপন করেছিল তা কেলভিনের নাম বহন করছে। দ্য রিফর্মড, কংগ্রেগেসনাল ও প্রেসবেটেরিয়ান গির্জা কেলভিনকে তাদের বিশ্বাসের প্রধান মুখপাত্র হিসেবে মনে করত যিনি (কেলভিন) এই বিশ্বাসকে বিশ্বব্যাপী প্রচার করেছিলেন।
লুথারের সংস্কার আন্দোলনের সময় যে মতবাদ প্রচার করেছিলেন তার প্রকৃতি ছিল অনেকটাই রক্ষণশীল, কিন্তু ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে ইংল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্সে (radical)সংস্কার আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। যেখানে অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরোধের অধিকার অনুমোদিত হয়েছিল।
কেলভিন প্রথমদিকে লুথারের মত প্রতিরোধী তত্ত্বে বিশ্বাসী থাকলেও পরবর্তীকালে কেলভিনের কিছু radical অনুগামী অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে ব্যক্তিগত ও দলবদ্ধভাবে প্রতিরোধের অধিকার দিয়েছিল। কেলভিনের শিক্ষা ও তত্ত্ব হচ্ছে প্রটেস্টানবাদের সবচেয়ে বর্ণময় ধারা। ধর্ম- সংস্কার আন্দোলনের পরবর্তী দুই শতাব্দীতে তার প্রভাব স্থায়ী হয়েছিল। লুথারবাদের পথ অনুসরণ করেও কেলভিনবাদ বিভিন্ন দেশে পৃথক পৃথক রুপ নিয়েছিল। লুথারবাদ যেখানে সামাজিক চরিত্রে রক্ষণশীল রাজনৈতিক কর্তৃত্বের প্রতি আস্থাশীল ছিল, কেলভিনবাদ সেখানে সক্রিয় পরিবর্তনপন্থী হয়ে উঠেছিল।
কেলভিনবাদই প্রটেস্ট্যান্ট আন্দোলনকে একটি সিস্টেমের রূপ দিয়েছিলেন। ১৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে প্রটেস্ট্যান্ট ধর্ম আন্দোলনকে সুশৃংখলভাবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে তিনি প্রকাশ করেন তার বিখ্যাত গ্রন্থ ,‘Institutes of the Christen Religion’।
কেলভিন ছিলেন একজন অক্লান্ত বিবাদমান ও কৈফতমূলক লেখক যিনি অসংখ্য বিতর্ক তৈরি করেছেন। তিনি ফিলিপ ম্যালান চ্যাথন ও হেইনরিচ বুলিঞ্জারসহ আরো অনেক সংস্কারকের সাথে আন্তরিক ও সহায়ক পত্র বিনিময় করতেন। ইনস্টিটিউট ছাড়াও, তিনি বাইবেলের অধিকাংশ বই, সেইসঙ্গে পারমার্থিক চুক্তি এবং কনফেশনাল বইয়ের নথি সম্পর্কে নেভিগেশন মন্তব্য লিখেছিলেন। তিনি নিয়মিতিভাবে বা সপ্তাহ জুড়ে গির্জার বেদীতে বসে ধর্মপ্রচারের জন্য ভাষণ দিতেন। কেলভিন অগাস্টিনিয়ান ঐতিহ্য দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।
কেলভিনের লেখা ও হিতোপদেশ ধর্মতত্ত্বের শাখার জন্য যে বীজ বপন করেছিল তা কেলভিনের নাম বহন করছে। দ্য রিফর্মড, কংগ্রেগেসনাল ও প্রেসবেটেরিয়ান গির্জা কেলভিনকে তাদের বিশ্বাসের প্রধান মুখপাত্র হিসেবে মনে করত যিনি (কেলভিন) এই বিশ্বাসকে বিশ্বব্যাপী প্রচার করেছিলেন।
সূত্র: উইকিপিডিয়া এবং eferrit, খ্রিস্টান ক্লাসিক ইথেরিয়াল লাইব্রেরি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।