যুক্তরাষ্ট্রে ইতিহাসের দীর্ঘতম সরকারি অচলাবস্থার অবসান ঘটেছে। ফেডারেল সরকারের অর্থায়ন বিল পাস করেছে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ। আর এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরের মাধ্যমে এখন আইনে পরিণত হবে।

আর এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৪২ দিন তথা মার্কিন ইতিহাসের দীর্ঘতম ‘শাটডাউন’-এর অবসান ঘটতে চলেছে। যদিও জানুয়ারিতে নতুন সংকটের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, স্থানীয় সময় বুধবার রাতে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে অনুষ্ঠিত ভোটে ২২২ জন আইনপ্রণেতা বিলটির পক্ষে ভোট দেন। ছয়জন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাও বিলটির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আর বিপক্ষে ভোট দেন ২০৯ জন, যাদের মধ্যে দুইজন রিপাবলিকানও আছেন।
এর আগে গত সোমবার রাতে ৬০-৪০ ভোটে ছয় সপ্তাহ ধরে স্থগিত থাকা সরকারি কার্যক্রম চালুর পক্ষে অর্থায়ন বিল অনুমোদন করে সিনেট। এই পদক্ষেপের ফলে ৪২ দিন ধরে বেতনবঞ্চিত কয়েক লাখ ফেডারেল কর্মচারী আবারও বেতন পাবেন।
মূলত দীর্ঘ এই অচলাবস্থার সময় প্রায় সব সরকারি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, কেবলমাত্র জরুরি সেবাগুলো চালু ছিল।
এর আগে গত সপ্তাহান্তে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পর শাটডাউনের অবসানের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছিল। সেসময় সাতজন ডেমোক্র্যাট ও একজন স্বতন্ত্র সিনেটর নতুন এই অর্থায়ন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন এবং এটিই অচলাবস্থা শেষ করতে সহায়ক হয়েছিল।
তবে সমঝোতার পরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। আর তা হচ্ছে— ২৪ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিকের স্বাস্থ্যবীমা ভর্তুকি, যা “অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট”-এর আওতায় ছিল এবং ট্রাম্প প্রশাসন তা বাতিলের পরিকল্পনা করেছিল।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ডেমোক্র্যাটরা বিলটি বারবার আটকে দিচ্ছিলেন, কারণ নিম্নআয়ের আমেরিকানদের ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য ব্যয়ের বিষয়ে সরকারের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন তারা।
ভোটের আগে রিপাবলিকান স্পিকার মাইক জনসন “রাজনৈতিক খেলায়” আমেরিকান জনগণকে “পণবন্দি” হিসেবে ব্যবহারের জন্য ডেমোক্র্যাটদের অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, “সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত রিপাবলিকানরা ১৫ বার সরকার চালুর পক্ষে ভোট দিয়েছে, আর ডেমোক্র্যাটরা ১৪ বার ভোট দিয়েছে তা বন্ধ রাখার পক্ষে।”
এদিকে সমঝোতার অংশ হিসেবে সিনেট রিপাবলিকানরা ডিসেম্বরের মধ্যে স্বাস্থ্যবীমা ইস্যুতে ভোটের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ফলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, জানুয়ারিতে আবারও সরকার অচল হয়ে যেতে পারে।
ডেমোক্র্যাটদের একাংশ এই চুক্তিকে ‘ফাঁকা বুলি’ বলে সমালোচনা করেছেন। ইলিনয়ের গভর্নর ও ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী জেবি প্রিটজকার এই সমঝোতাকে “ভিত্তিহীন ও দুর্বল” বলে আখ্যা দিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কিন গবেষণা কেন্দ্রের সহযোগী অধ্যাপক ডেভিড স্মিথও একে “অস্থায়ী সমাধান” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি আল জাজিরাকে বলেন, “এই চুক্তি অনুযায়ী জানুয়ারিতে আবারও সরকারি কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যদি নতুন সমঝোতা না হয়।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



