জুমবাংলা ডেস্ক:বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ বাণিজ্যিক জায়ান্ট বেক্সিমো গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্রে ৬৫ লাখ পিপিই গাউন রপ্তানি করেছে ।
এই সাফল্যের মধ্য দিয়ে বিপুল পরিমাণে বিশ্বমানের পিপিই উৎপাদনে সক্ষম মুষ্টিমেয় কিছু দেশের তালিকায় নাম উঠলো বাংলাদেশের। যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড হানেস, এসব পিপিই গাউন তৈরির অর্ডার দিয়েছিল। মার্কিন সরকারের কেন্দ্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা-ফেমাকে সরবরাহের জন্য বেক্সিমকোর কাছ থেকে গাউন তৈরি করে নেয়
ব্র্যান্ডটি।
বেক্সিমকো প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে বেক্সিমকোর তৈরি পিপিই গাউনের প্রথম চালান সরবরাহকে ঘিরে আজ সোমবার হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চালানটিকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে এ চালান পাঠানো হয়।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বেক্সিমকোর অবদানের প্রশংসা করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বের মতো আমরাও সমস্যায় পড়েছি এবং কিভাবে নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া যায় সেই চেষ্টা করছি।’
তিনি গর্বের সঙ্গে বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে ১০ হাজার বা ২০ হাজার পিস নয়, ৬৫ লাখ পিস উন্নতমানের স্পর্শকাতর স্বাস্থ্য বিষয়ক পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের মতো নিয়ন্ত্রিত বাজারে আমরা পাঠাতে সক্ষম হচ্ছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পিপিই পাঠানোর এটি প্রথম বড় চালান জানিয়ে রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার বলেন, বাংলাদেশ বৃহৎ আকারে পিপিই বানাতে সক্ষম এই বিষয়টিকে অভিনন্দন জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, ‘এই দুই দেশ কিভাবে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করতে সক্ষম বেক্সিমকো-হেনস অংশীদারিত্ব তার বড় উদাহরণ।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাত্র দুই মাস আগে অনুরোধ এসেছে এবং এরমধ্যে বেক্সিমকো তাদের উৎপাদন ব্যবস্থা পরিবর্তন করে আমাদের জন্য জরুরি পিপিই তৈরি করেছে। তার মন্তব্য, ‘আমলাতান্ত্রিক বা উদ্যোক্তার দৃষ্টিকোণ থেকে এটি আলোর গতিতে কাজ হয়েছে।’
বেক্সিমকোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং গ্রুপ পরিচালক সৈয়দ নাভেদ হুসাইন বলেন, ‘মাত্র দুই মাসের মধ্যে আমরা নিজেদের বিশ্বমানের উৎপাদন সক্ষমতা, কারিগরি দক্ষতা এবং নকশা তৈরির উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে সক্ষম হয়েছি। এর মধ্যে দিয়ে, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে-বিদেশে অতিপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা ইতিবাচক অবদান রাখত পারব।’
তিনি আরও বলেন, পিপিই উৎপাদনের নতুন কেন্দ্র হয়ে ওঠার মতো সকল সুযোগ এখন বাংলাদেশের সামনে রয়েছে। এটা বিশ্ববাসীকে যেমন সুরক্ষিত রাখবে, ঠিক তেমনি গার্মেন্টস খাতের ৪১ লাখ কর্মীর কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা তৈরির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক অবদান যোগ করবে।
বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান, ‘সারা বিশ্বে পিপিই’র ঘাটতি রয়েছে এবং এজন্য আমরা এটি প্রস্তুত করছি। আমরা এটি স্থানীয়ভাবে জোগান দেওয়ার পাশাপাশি বিদেশেও অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত বাজারে রপ্তানি করছি।’
আগামী তিন বছরের মধ্যে সুরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানিতে বিশ্ববাজারের অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী হয়ে ওঠার লক্ষ্য নিয়ে ইতোমধ্যেই একটি ‘পিপিই শিল্প পার্ক’ স্থাপন করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় এই বাণিজ্যিক গ্রুপটি। বেক্সিমকোর শিল্পাঞ্চল থেকে মাত্র ১০ মিনিটের দূরত্বে নতুন শিল্পকেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে।
পিপিই রপ্তানি বাজারের বিশ্বস্ত নাম হয়ে ওঠার লক্ষ্য নিয়ে বেক্সিমকো এইখাতের শীর্ষ বৈশ্বিক পরামর্শকদের সাহায্য নিচ্ছে। পাশাপাশি পণ্য উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে সকল উপকরণ দেশে তৈরির জনা প্রতিষ্ঠায় বিনিয়োগ করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।