লাইফস্টাইল ডেস্ক: এখনও এমন অনেক পরিবার আছে, যেখানে কন্যা শিশুর জন্ম হলে অনেকে মন খারাপ করে। কিন্তু একজন সচেতন অভিভাবক হিসেবে আপনার সন্তানকে সুন্দর একটি পৃথিবী দেওয়ার দায়িত্ব আপনারই, হোক সে ছেলে কিংবা মেয়ে। যেহেতু কন্যাশিশুর জন্য কিছু ক্ষেত্রে এখনও প্রতিবন্ধকতা থেকে যায়, তাই তাকে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে বাবা-মাকেই।
মানুষ শিশু অবস্থায় বেশ আত্মবিশ্বাসী থাকে। কিন্তু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চারপাশের বিশ্ব তাদের ওপর কিছু ধারণা চাপিয়ে দেয়, যেগুলো তার আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে দিতে পারে। দুর্ভাগ্যবশত, কন্যা শিশুর ক্ষেত্রে এটি বেশি ঘটে থাকে। যেসব ধারণা কিংবা অভ্যাস আপনার কন্যাকে গড়ে উঠতে বাধা দেবে, সেগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। গড়ে তুলতে হবে সুন্দর কিছু অভ্যাস-
তার বুদ্ধি ও দক্ষতা খেয়াল করুন
সবাই আপনার সন্তানের পোশাক বা তার মিষ্টি হাসির প্রশংসা করবে। কিন্তু সবাই তার বুদ্ধি এবং দক্ষতা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী বা উৎসাহী হবে না। তাই কেবল আপনার কন্যার সুন্দর পোশাকই নয়, কোন বিষয়ে তার দক্ষতা বেশি, কী করতে সে বেশি আগ্রহী সেদিকেও খেয়াল করা জরুরি। তাকে নতুন নতুন জিনিস শেখান। একটি নতুন কাজ শেষ করতে পারার আনন্দ তাকে উপভোগ করতে শেখান। এটি তার ব্যক্তিত্বকে উন্নত করতে এবং তাকে প্রচুর জ্ঞান অর্জন করতে সহায়তা করবে।
তার মতামতের গুরুত্ব দিন
আপনার কন্যাকে কেবলই শিশু ভেবে তার চিন্তাভাবনা বা ধারণাগুলোকে অবমূল্যায়ন করবেন না। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তার মতামত এবং দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চান। তাকে তার চিন্তাভাবনা এবং তার অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করতে উৎসাহিত করুন। কন্যাকে সময় দিন। তার মনের কথা বলার জন্য একটি নির্ভরতা তৈরি করুন। তখন আপনার কন্যা ধীরে ধীরে চারপাশের জগতেও তার চিন্তাভাবনাগুলোকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রচুর আত্মবিশ্বাস অর্জন করবে।
নারী রোল মডেলের সঙ্গে পরিচিত করুন
বিশ্ব এবং সম্ভাবনা সম্পর্কে আমাদের উপলব্ধি আমাদের চারপাশের মানুষের দ্বারা দৃঢ়ভাবে প্রভাবিত হয়। আমরা সাধারণত যা দেখি এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করি, তার ওপর ভিত্তি করে আমাদের জীবনকে তৈরি করি। এই কারণে আপনার কন্যাকে সফল ও প্রতিষ্ঠিত নারীদের সঙ্গে পরিচিত করান। তাদের দেখে সেও এই চমৎকার গুণগুলো শিখে নেবে।
তাকে স্বপ্ন দেখতে দিন
আপনার কন্যাকে স্বপ্ন দেখতে দিন, সে যে জীবন যাপন করতে চায় তার জন্য গড়ে উঠতে শেখান। এটি তার বর্তমান এবং বাস্তবতাকে নষ্ট করবে না, বরং তাকে লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সেসব অর্জন করার শক্তি এবং আত্মবিশ্বাস দেবে। সে যা হয়ে উঠতে চায়, সেজন্য সহায়ক ও সহজ পথটি বেছে নিতে শেখান। এই অভ্যাস আপনার কন্যাকে তার নিজস্ব লক্ষ্যে পৌঁছাতে উৎসাহিত করবে।
সাহসী হতে শেখান
আত্মবিশ্বাসী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আপনার কন্যাকে নির্ভীক হতে শেখানো গুরুত্বপূর্ণ। কিছু বিষয়ে ভয় থাকা ক্ষতিকর নয়, তবে তা যেন বাড়াবাড়ি না হয়। ভয়কে জয় করার মন্ত্রও শেখাতে হবে আপনাকে। কারণ সবকিছুতে ভয় পেতে থাকলে তা আপনার কন্যার বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তাকে বেড়ে উঠতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে শেখান। যদি সে অজানা এবং আপাতদৃষ্টিতে ভীতিকর জিনিসকে আলিঙ্গন করতে পারে তবে এমন কিছুই নেই যা তাকে পরাজিত করতে পারে। এমনকী কষ্ট এবং ব্যর্থতার সময়ও, তার আবার উঠে দাঁড়ানোর শক্তি থাকবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আপনার কন্যাকে তার নিজের মতো হতে দেওয়া।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।