জুমবাংলা ডেস্ক: আর মাত্র দুদিন পরই অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ঈদের অন্যতম অনুষঙ্গ পশু কোরবানি। তবে ভাবনার বিষয় হলো, ঈদের আগের দিন কিংবা আগের রাতে যে পশুটি আপনি হাট বা অন্য কোথাও থেকে কিনে এনে কোরবানি দেবেন, সে পশুটি কি আপনার আদরের বস্তুর মধ্যে পড়ে? ইসলাম তো সেই পশুটিকেই কোরবানি দিতে বলে- যে পশুটি সবচেয়ে আদরের।
এ জন্য উত্তম হলো, গৃহপালিত পশু কোরবানি করা। কিন্তু যারা শহরে বসবাস করেন, তাদের সে সুযোগ নেই। তাই হাট থেকে পশু কিনে কোরবানি দিতে হয়। তবে যদি সম্ভব হয়, তাহলে অন্তত ঈদের তিন চার দিন আগে হাট থেকে পশু কিনে নিজ তত্ত্বাবধানে রাখা উচিত। পাশাপাশি পশুকে খাবার খাওয়াতে হবে। আদর-যত্ন করতে হবে। এতে পশুর প্রতি যে মায়া জন্মাবে, সেই মায়াকে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার নাম কোরবানি।
কোরবানির পশুকে কী খাওয়ানো উচিত কিংবা ঠিক নয়- তা বুঝে উঠতে পারেন না। পশুকে খাওয়ানো যায় এমন কিছু খাবার সম্পর্কে চলুন জেনে নিই-
প্রথমেই স্যালাইন পানি খাওয়ানো
বাজার থেকে এনেই প্রথম কাজ হবে পশুকে স্যালাইন খাওয়ানো। অনেক দূর দূরান্ত থেকে কোরবানির পশুটি হাটে এসে থাকে। তাই প্রচণ্ড পানির পিপাসায় থাকে। কিন্তু আমরা অনেকেই তাকে প্রথমে দানা জাতীয় খাবার দিয়ে থাকি, যা তার জন্য সে সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। তাই প্রথম কেনার পর বাসায় নিয়ে এসেই ঠান্ডা পানির সঙ্গে হালকা লবণ ও চিনি মিশিয়ে স্যালাইন বানিয়ে খাওয়ানো অনেক বেশি উপকারী। প্রাণীটি ধকল কাটিয়ে আরামবোধ করবে।
খাবারের পরিবেশ নিশ্চিত করুন
পশুরা নিজের মালিককে চেনে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের যে নিয়মে লালনপালন করা হয়েছে তার ভিন্নতা দেখা দিলে তারা খেতে চায় না। পরিবেশ অনুকূলে না থাকলেও পশুরা খাবার মুখে তুলতে চায় না। তাই, সবার আগে পশুর জন্য খাবারের পরিবেশ নিশ্চিত করুন। সবচেয়ে ভালো হয় পশু কেনার সময় খামারি বা বিক্রেতার কাছ থেকে পশুর খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে জেনে নিলে। জোর করে খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না। অবলা পশুটিকে আদর করে খাবার খাওয়ান। বিভিন্ন রকম খাবার দিয়ে দেখুন, কোন খাবার সে আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছে। সেই খাবার বেশি দিন।
রেডি ফিড
পশুকে রুচিবর্ধক খাবার খেতে দিতে পারেন। বর্তমানে ভালো কোম্পানির রেডি ফিড পাওয়া যায়। এগুলো পশুরা খেয়ে থাকে। ওজনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভালো কোম্পানির ফিড খাওয়ানো যেতে পারে।
পরিষ্কার পানি
গরু বা ছাগল দীর্ঘ সময় হাটে থাকে। অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে তাদের ঘরের সামনে আনা হয়। তাই পশু থাকে তৃষ্ণার্ত। এসব পশুকে সবার আগে পরিষ্কার পানি পান করতে দিন। পশুর মুখ ডোবাতে সুবিধা হবে এমন পাত্রে পানি পরিবেশন করুন। পশুরা অনেকসময় ঠান্ডা পানি খেতে চায় না। এক্ষেত্রে কুসুম গরম পানির সঙ্গে অল্প লবণ মিশিয়ে দিতে পারেন।
ভাতের মাড়
পশুদের প্রিয় খাদ্যের তালিকায় রয়েছে ভাতের মাড়। ভাতের মাড়ের সঙ্গে গমের ভুসি, চালের গুঁড়া বা সরিষার খৈল মেশাতে পারেন। ছাগলের ক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ ভাতের সঙ্গে চালের গুঁড়া বা ভাঙা গম মিশিয়ে দিতে পারেন। গরুকে ভাতের মাড়ের সঙ্গে তাজা সবজির খোসা আর লবণ মিশিয়ে খেতে দিতে পারেন।
খড়, ঘাস, পাতা
ঈদের আগে শহরে মৌসুমি পশু খাদ্য ব্যবসায়ীদের আনাগোনা দেখা যায়। তারা গরু ও ছাগলের বিভিন্ন খাদ্য বিক্রি করেন। অস্থায়ী এসব দোকানে ২০ থেকে ৩০ টাকায় খড়ের আঁটি পাওয়া যায়। ঘাস বিক্রি হয় আঁটির ঘনত্ব অনুযায়ী। অনেকে বিক্রি করেন কাঁঠাল পাতা। প্রয়োজন অনুযায়ী এসব খাবার কিনতে পারেন।
খাবার যাই হোক, তা যেন পশু স্বাচ্ছন্দ্যে খেতে পারে তা নিশ্চিত করুন। পশুর কোনো শারীরিক অসুস্থতা থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।