এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেডিও টেলিস্কোপটি দাঁড়িয়ে আছে চীনের পিংডং প্রদেশে। যার নাম ফাস্ট (ফাইভ হানড্রেড মিটার অ্যাপারচার স্ফেরিক্যাল টেলিস্কোপ)। তবে এর আগে ৫৩ বছর ধরে সবচেয়ে বড় রেডিও টেলিস্কোপের তকমা গায়ে লাগিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের আরেসিবো অবজারভেটরি। পুয়ের্তোরিকোয় ছিল এর অবস্থান।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে কেব্ল ছিঁড়ে ধসে পড়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয় অবজারভেটরিটি। সেই জায়গা এখন দখলে নিয়েছে চীনের ফাস্ট। এ উপলক্ষে ফাস্ট কর্তৃপক্ষ এখন তাদের দুয়ার খুলে দিচ্ছে বিশ্বের সব জ্যোতির্বিদের জন্য।টেলিস্কোপটির অপারেশনাল চিফ ইন্সপেক্টর ওয়াং কিমিং বলেন, ‘আমাদের বিজ্ঞানী পরিষদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দ্রুততম সময়ে ফাস্টকে পুরো বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত করা।’
২০২১ সালের শুরু থেকেই চীন, বিদেশি বিজ্ঞানী, যাঁরা নিজের গবেষণার কাজে রেডিও টেলিস্কোপটি ব্যবহার করতে চান, তাঁদের আবেদন জমা নেওয়া শুরু করবে। ফাস্ট বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম শুরু করেছিল গত বছরের জানুয়ারিতে। তবে এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১৬ সালে। ৫০০ মিটার ব্যাসের দানবিক ডিশ নিয়ে ফাস্ট আরেসিবোর টেলিস্কোপ থেকে বড়ই নয়, এর চেয়ে তিন গুণ সংবেদনশীল। টেলিস্কোপটির আশপাশের পাঁচ কিলোমিটার এলাকা রেডিও সাইলেন্স জোন, অর্থাৎ এই অঞ্চলে মোবাইল-কম্পিউটার-ল্যাপটপের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
ফাস্টের মতো রেডিও টেলিস্কোপগুলো তাদের সুবিশাল অ্যানটেনা আর রেডিও রিসিভারের সাহায্যে রেডিও ওয়েভ শনাক্ত করে। আর এই রেডিও ওয়েভগুলোর উৎস হলো মহাকাশে থাকা নক্ষত্র, কৃষ্ণগহ্বর, গ্রহপুঞ্জ। একই জিনিসগুলো রেডিও সিগন্যাল পাঠানোর কাজেও ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া সৌরজগতের গ্রহ-উপগ্রহ একধরনের রেডিও লাইটের প্রতিফলন ঘটায়। সেগুলোও ধরা পড়ে রেডিও টেলিস্কোপে।
যাঁরা ভাবছেন, ফাস্ট শুধুই ব্যবহৃত হবে গ্রহ দেখার কাজে, তাঁদের জন্য আরেকটা চমকপ্রদ তথ্য। মহাকাশে ভিনগ্রহ নিয়ে গবেষণা করার কাজেও ভাবা হচ্ছে এটির কথা। অসম্ভব কিছু নয়, অতীতেও ১৯৭৪ সালে আরেসিবোতে বিজ্ঞানীরা কাজ করেছেন সেটি (সার্চ ফর এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল ইন্টেলিজেন্স) প্রজেক্টে।
যেখানে আরেসিবো আর রেডিও জ্যোতির্বিদ্যাকে জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্যে কার্ল সেগান একটি রেডিও বার্তা তৈরি করেন। সেটি পাঠানো হয়েছিল হারকিউলিস নক্ষত্রপুঞ্জে। আশা করা হয়েছিল, এই রেডিও বার্তার সাহায্যে পৃথিবীর বাইরে বুদ্ধিমান প্রাণের অস্তিত্ব সন্ধান করা যাবে। কিন্তু সেটা হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।