যেভাবে ছাত্রলীগের সভাপতি হলেন জয়

আল-নাহিয়ান খান জয়

আল-নাহিয়ান খান জয়ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন আল-নাহিয়ান খান জয়। শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

নাহিয়ান খান জয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ১ নম্বর সহ-সভাপতি ছিলেন।

জানা যায়, নাহিয়ান খান জয় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা আবদুল আলী খানের ছেলে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বাবার হাত ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন তিনি। বরিশাল জিলা স্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থাতেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে হাতেখড়ি নেয়া জয় উপজেলা ছাত্রলীগেও সম্পৃক্ত ছিলেন। একপর্যায়ে ঢাকায় লেখাপড়া করার সুবাধে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অবস্থান করে নেন তিনি। এসএসসি পাস করে ঢাকা কমার্স কলেজে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেন জয়। তার দক্ষ নেতৃত্বের কারণেই এই কলেজে ছাত্রলীগের কার্যক্রম অনেকটা এগিয়ে যায়।

এদিকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন আল নাহিয়ান খান জয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ছাত্রলীগের উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং পরবর্তীতে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপরই তার ডাক আসে কেন্দ্রীয় কমিটিতে। সোহাগ-জাকির কমিটিতে আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে নিজের অবস্থান তৈরি করে নেন জয়।

ছোটবেলা থেকেই মেধাবী জয় ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার মেধা তালিকায় ১৬তম স্থান লাভ করেছিল বলে জানা যায়। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত।

সাহসিকতা নিয়ে হরতাল প্রতিরোধ এবং পিকেটারদের ককটেল বোমাসহ ধরিয়ে দেয়ায় ২০১৫ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) থেকে পুরস্কার লাভ করেছিলেন জয়। সঙ্গে সঙ্গেই সেই পুরস্কারের অর্থ বার্ন ইউনিটে পেট্রল বোমায় দগ্ধ অসহায় মানুষের চিকিৎসার্থে দান করেছিলেন তিনি।

মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান জয়ের পূর্ব পুরুষ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তার বাবা আবদুল আলীম খানের হাতে উপজেলা ছাত্রলীগের পথচলা। এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ফুফু উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

এদিকে বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বাদ পড়েছেন শোভন- রাব্বানী। তাদের বিরুদ্ধে বিরোধী মতাদর্শীদের অর্থের বিনিময়ে সংগঠনে অনুপ্রবেশ ঘটানো, স্বেচ্ছাচারিতা, ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন, দুপুর পর্যন্ত ঘুমানো, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের অগ্রাহ্য করা, মাদক সেবন, টেন্ডার ও তদবির বাণিজ্যসহ অসংখ্য অভিযোগে শোভন ও রাব্বানীর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শনিবার দলের সভাপতিমণ্ডলীর সভায় তিনি কমিটির র্শীষ দুই পদে নতুন নেতৃত্ব আনার আভাস দেন। এরপরই একের পর এক দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসে শোভন-রাব্বানীর বিরুদ্ধে।

এরপরেই শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে অবশেষে শোভন-রাব্বানীকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাদের বদলে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হয় আল নাহিয়ান খান। অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান লেখক ভট্টাচার্য।

Write a Comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *