জুমবাংলা ডেস্ক: ১৯৯৬ সালে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয় ডায়ানা ও যুবরাজ চার্লসের। পরের বছর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ডায়ানার। চার্লসের সঙ্গে ডায়ানার বিয়ে সুখে-শান্তিতে কাটেনি। নব্বইয়ের দশকে ডায়ানার পরকীয়া প্রেমের কাহিনী সারা বিশ্বের পত্র-পত্রিকায় ছড়িয়ে পড়ে। চার্লসের বিশ্বাসঘাতকতাসহ নানা কারণে অবশেষে ১৯৯৬-এ তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।
সুখী ছিল না এই দম্পতির জীবন। ‘দ্য ডাচেস: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ বইটিতে এমন কিছু ঘটনার উল্লেখ রয়েছে, যা থেকে বিষাদমাখা এক অজানা সত্যি সামনে আসছে। ডায়ানাকে বিয়ের আগের রাতে নাকি জানলায় দাঁড়িয়ে প্রেমিকা ক্যামিলা পার্কারের শোকে কেঁদেছিলেন তরুণ যুবরাজ চার্লস। দুই বছর ধরে চার্লস ও ক্যামিলার গভীর প্রেম থাকার পরেও ডায়ানাকে বিয়ে করেন প্রিন্স চার্লস।
ফ্যাশন, সৌন্দর্য, এইডস রোগ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে একদিকে ডায়ানার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল। অন্যদিকে তিনিও পরকীয়ায় জড়িয়েছিলেন। বিবাহ বিচ্ছেদের মাধ্যমে এই অসুখী দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন হয়। ঠিক তার পরের বছর সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ডায়ানা এবং তার প্রেমিক দোদী ফায়েদের। সেই মৃত্যুরহস্যে আজও উন্মোচিত নয়। অনেকেই মনে করেন এটি ষড়যন্ত্রমূলক হত্যাকাণ্ড। কিন্তু এক পুলিশী তদন্তের রিপোর্টে বলা হয় যে, প্রিন্সেস ডায়ানা এবং তার সঙ্গী দোদী ফায়েদের মৃত্যু হয়েছে সড়ক দূর্ঘটনার ফলে, এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র নেই।
ব্রিটিশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ, স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সাবেক প্রধান জন স্টিভেনসের তৈরি এই রিপোর্টে ফরাসী তদন্তের মতই বলা হয় যে,ষড়যন্ত্রের কোনো প্রমাণ তারা পাননি।
১৯৯৭ এর ৩১শে অগাষ্ট মধ্যরাতের অল্প সময় পরে প্যারিসের এক পাতালসড়কে দূর্ঘটনায় রাজকুমারী ডায়ানা এবং তার প্রেমিক দোদি ফায়েদ নিহত হওয়ার সময় থেকেই ষড়যন্ত্রের নানা তত্ত্ব বিভিন্নদিক থেকে উচ্চারিত হতে থাকে।
ফরাসী তদন্তকারীরা রাজকুমারী ডায়ানার মৃত্যুর কারণ দূর্ঘটনা বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছালেও তা সবাই মেনে নিতে পারেনি আর, সেই পটভূমিতেই ইংল্যান্ডে অপমৃত্যুর তদন্ত করেন যে চিকিৎসাবিশেষজ্ঞরা তাদের পরিচালিত সরকারী অনুসন্ধানকাজ স্থগিত করে লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার লর্ড স্টিভেন্সকে বিষয়টিতে ফৌজদারি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বৃটেনের সবচেয়ে অভিজ্ঞ এবং দক্ষ এই পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত তদন্তকারীরা টানা তিনবছর ধরে নানাভাবে অনুসন্ধান চালিয়ে তাদের এই রিপোর্ট প্রকাশ করেন।
রাজকুমারী ডায়ানাকে ঘিরে ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যম এবং তার বাইরে বিশ্বের নানাপ্রান্তে আগ্রহ ছিলো প্রায় সীমাহীন। যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে তার দাম্পত্য জীবন ভেঙ্গে পড়ার কাহিনী তিনি যেভাবে টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে খোলামেলাভাবে বর্নণা করেছেন, ভূমিমাইন নিষিদ্ধ করার আন্দোলন এবং এইডসবিরোধী প্রচারণায় তার অংশগ্রহণ – এসবকিছুই সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যপক আলোড়ন তুলেছিলো।
গণমাধ্যমের কল্যাণে জনমানসে রাজকুমারী ডায়ানার অবস্থান এমন একটি জায়গায় পৌঁছেছিলো যে অনেকেই ভাবতে শুরু করেছিলেন যে তিনি ব্রিটিশ রাজপরিবারের পতন ঘটানোর ক্ষমতা রাখেন। তার মৃত্যুতে তেমন কিছু না ঘটলেও তার স্মৃতি এতোটাই প্রবল যে এখরো তার স্মরণে মানুষ প্যারিসের সেই দূঘর্টনাস্থলে এখনো পুষ্পস্তবক রেখে তার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে থাকেন।
রাজকুমারী ডায়ানার জনপ্রিয়তার কারণেই তার মৃত্যুর বিষয়ে নানাধরণের জল্পনা চলতে থাকবে বলেই মনে করা হয়।
সূত্র: বিবিসি, আনন্দবাজার ও অন্যান্য
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।