বলিউড সিনেমার লাভ-লোকসানের বিষয়গুলো একটু জটিল। সেটা ভালোভাবে বুঝতে হলে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে বলিউডের বিজনেস মডেল সম্পর্কে। ভালোমানের একটা বলিউড সিনেমা বানাতে বর্তমানে যে পয়সা লাগে, তা একজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বহন করা মোটামুটি অসম্ভব। এভারেজ মেইনস্ট্রিম বলিউড ফিল্মের বাজেট বর্তমানে ৫০ কোটির আশেপাশে হয়ে থাকে। এই চলচ্চিত্রগুলো নির্মাণে পয়সা খরচের কাজটা বড় বড় প্রযোজনা সংস্থা করে থাকে।
সিনেমার শুটিং, প্রোডাকশন, পোস্ট প্রোডাকশন- এসব সামলানো পরিচালকের দায়িত্ব। তিনি সাধারণত প্রতি মুভিতে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিপরীতে চুক্তিতে আবদ্ধ হন। সকল সম্পাদনার পর ফিল্ম পুরো তৈরি হয়ে গেলে সেটা হয়ে যায় প্রযোজকের সম্পত্তি। তারপর প্রযোজক বা প্রযোজনা সংস্থা সেটা নিয়ে যান ডিস্ট্রিবিউটারের কাছে।
যদি ফিল্মের নেট কালেকশন ফিল্মের বাজেটের তুলনায় বেশি হয়, তাহলে ওই ফিল্মকে লাভজনক/প্রফিটেবল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাজ্য সরকার যদি স্টেট ট্যাক্স ফ্রি করে দেয়, তবুও কেন্দ্রীয় সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয় ৬%- ৯%, যা ফিল্মের বাজেটের উপর নির্ভর করে।
প্রযোজক আর ডিস্ট্রিবিউটরদের ভেতর তিন ধরণের প্রফিট শেয়ারিং পদ্ধতি দেখা যায়। শুরুতেই মিনিমাম গ্যারান্টি রয়্যালটির কথা বলা যাক। এই পদ্ধতিতে ডিস্ট্রিবিউটর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রযোজককে প্রদান করে। আবার প্রযোজক ডিস্ট্রিবিউটরের কাছে পুরোপুরিভাবে বিক্রি করে দেয় ফিল্ম। এখন এই ফিল্ম ডিস্ট্রিবিউটর নদীতে ফেলে দিবেন নাকি থিয়েটারে চালাবেন, তা সম্পূর্ণ ডিস্ট্রিবিউটরের ইচ্ছা। ফিল্ম কাড়ি কাড়ি অর্থ আয় করলেও তা ডিস্ট্রিবিউটরের।
৩য় পদ্ধতিতে প্রযোজক এখানে ডিস্ট্রিবিউটরের পারিশ্রমিক দেন লভ্যাংশের উপর ভিত্তি করে। এটা হলো সর্বাধিক প্রচলিত পদ্ধতি। এখানে সকল ঝুঁকি থাকে প্রযোজকের উপরে, ডিস্ট্রিবিউটরের ঝুঁকি থাকে কম। ডিস্ট্রিবিউটররা ভারতের বিভিন্ন জায়গায় সাব ডিস্ট্রিবিউটরদের সাথে যোগাযোগ রাখে। সাব-ডিস্ট্রিবিউটদের আলাদা আলাদা ডিস্ট্রিবিউশনে ভাগ করা হয়েছে, যাকে ডিস্ট্রিবিউশন সার্কিট বলা হয়।
বিগ বাজেটের বড় বড় ফিল্মের ক্ষেত্রে ফিল্মের ভার্ডিক্ট অনেকসময় অভিনেতার জনপ্রিয়তার উপর নির্ভর করে। এদিকে সুবিধা পান সালমান খান। তার অনেক বাজে গল্পের সিনেমাও বক্স অফিসে ভরাডুবির হাত থেকে বেঁচে যায়। অনেক সময় অভিনেতাদের প্রফিট শেয়ারিংয়ের চুক্তি করতে দেখা যায় ডিস্ট্রিবিউটদের সাথে। যেমন, আমির খান। তিনি মূলত জিরো স্যালারিতে প্রফিট শেয়ারিং এগ্রিমেন্টে কাজ করে থাকেন। এই ক্ষেত্রে ফিল্ম ব্যবসাসফল হলে লভ্যাংশের ৫০%-৮০% পাবেন অভিনেতা।
অনেক অভিনেতা আবার হাফ সেলারি মডেল-হাফ প্রফিট শেয়ারিংয়ে কাজ করে থাকেন। যেমন, সালমান খানের সুলতান মুভি। বক্স অফিসে সুলতানের টোটাল কালেকশন ছিল ৫০০ কোটি রুপির আশেপাশে। এর এন্টারটেইনমেন্ট ট্যাক্স ছিল ১০৬ কোটি রুপি। তাই, ফিল্মের নেট কালেকশন হলো ৩৯৪ কোটি রুপি। এমনিতে সালমান তার প্রতি সিনেমায় ৭০ কোটি রুপির আশেপাশে চার্জ করে থাকেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।